লালমনিরহাটের সেই ‘পরিমল’ বহিষ্কার

প্রকাশ | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ১২:২২

কালিগঞ্জ (লালমনিরহাট) প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
ফাইল ছবি

প্রাইভেট পড়ানোর আড়ালে ছাত্রীদের যৌন হয়রানির অভিযোগে লালমনিরহাটের পরিমল চরিত্রধারী সেই শিক্ষক মেহেদি হাসান সুমনকে বষ্কিার করেছে কর্তৃপক্ষ।  

হাতীবান্ধা আলিমুদ্দিন কলেজ অধ্যক্ষ সারওয়ার হায়াত খান বহিষ্কারের বিষয়টি ঢাকাটাইমসকে নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, যৌন হয়রানির অভিযোগে সোমবার রাতে ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক সুমনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।

শনিবার রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এক ছাত্রীর সঙ্গে সুমনের কিছু আপত্তিকর ছবি প্রকাশিত হয়। পরদিন রবিবার ওই শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়ে কলেজের অধ্যক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ করে উপজেলা ছাত্রলীগ ও কলেজ ছাত্রদল। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছিল কলেজ প্রশাসন।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ইংরেজি বিভাগের ওই শিক্ষক প্রাইভেট পড়ানোর আড়ালে অনেক ছাত্রীর সর্বনাশ করেছেন।

২০১১ সালে ভিকারুননিসা নূন স্কুলের বাংলার শিক্ষক কোচিং করানোর সময় এক ছাত্রীকে ধর্ষণ করেছিলেন। ওই মামলায় অভিযুক্ত শিক্ষক পরিমল জয়ধরকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয় আদালত।

হাতীবান্ধা আলিমুদ্দিন কলেজের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক মেহেদি হাসান সুমন কলেজের ২০০ গজ দূরে একটি রুম ভাড়া নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে মেয়েদের ইংরেজি প্রাইভেট পড়াচ্ছেন এবং এর আড়ালে অনেক ছাত্রীকে যৌন হয়রানি করেছেন বলে অভিযোগ উঠে।

এ ঘটনায় ওই প্রাইভেট কক্ষে একটি পক্ষ গোপন ক্যামেরায় ভিডিও ধারণ করে। পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ‘সত্যপ্রকাশ চৌবে’ নামে একটি ফেসবুক আইডিতে আপত্তিকর ছবি প্রকাশ করে।

হাতীবান্ধা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মশিউর রহমান মামুনের দেয়া একটি ফেসবুক স্ট্যাটাসে এলাকাজুড়ে সমালোচনার ঝড় শুরু হয়। তিনি তার ফেসবুক টাইমলাইনে লিখেছেন, ‘হাতীবান্ধার আলোচিত পরিমল জয়ধর ওরফে সুমন মাস্টারের মুখোশ আর উন্মোচিত হচ্ছে না। কারণ ওই গুন্ডা মাস্টারের লালসার শিকার হওয়া ওইসব কলেজছাত্রীরা আত্মসম্মানের ভয়ে এ ব্যাপারে কেউই মুখ খুলছেন না। তবে ভুক্তভোগী কেউ যদি আমাদের (ছাত্রলীগ) কাছের সাহায্য চায়, তার পরিচয় গোপন রেখে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে।’

এরপর অনেকেই সমুনের বিচার দাবিতে ফেসবুকে সোচ্চার হয়। স্থানীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক মন্তব্য করেন- ‘আমিও একজন শিক্ষক। আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানে বলে- এমন কাজ কোনো শিক্ষকের হতে পারে না। সে মানসিক বিকারগ্রস্ত। উপযুক্ত প্রমাণ সাপেক্ষে তাকে বিচারের আওতায় আনা হোক।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয়দের কেউ কেউ বলছেন, ছাত্রীদের সঙ্গে ওই শিক্ষকের যৌনাচারের একটি ভিডিও চিত্রও নাকি একটি পক্ষের হাতে আছে। আর সেই পক্ষটি মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে বিষয়টি চেপে যাচ্ছেন বলেও শোনা যাচ্ছে।

তবে মেহেদি হাসান সুমন এসব বিষয় অস্বীকার করে ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘আমি এসবের কিছুই জানি না। যারা ফেসবুকে এসব ঘটনা রটাচ্ছে- তারা পারিবারিক শত্রুতার জন্য এমনটি করতে পারে।’

(ঢাকাটাইমস/২৬সেপ্টেম্বর/জেডএ)