নড়াইলে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও মেয়রের সাত বছর জেল

প্রকাশ | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ১৮:০০

নড়ইল প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

পশুর হাটের ইজারায় দুই লাখ টাকার দুর্নীতির দায়ে ফেঁসে গেলেন নড়াইলের জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সোহরাব হোসেন ও পৌর মেয়র জাহাঙ্গীর বিশ্বাসসহ আট জনপ্রতিনিধি।

ওই ঘটনায় দুদকের দায়ের করা মামলায় আজ মঙ্গলাবার তাদেরকে সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও এক লাখ ৯৬ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

মঙ্গলবার দুপুরে যশোর স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক নিতাই চন্দ্র সাহা এ রায় ঘোষণা করেন। দণ্ডিতদের মধ্যে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সোহরাব হোসেনকে পলাতক দেখানো হয়েছে। অন্যদের রায় ঘোষণা শেষে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। পশুহাট ইজারার টাকা আত্মসাতের দায়ে এ সাজা প্রদান করা হয়েছে।

সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- নড়াইল পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান ও বর্তমান জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন, নড়াইল পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর বর্তমান পৌর মেয়র জাহাঙ্গীর বিশ্বাস, সাবেক ও বর্তমান কাউন্সিলর শরিফুল আলম লিটু, সাবেক কাউন্সিলর সৈয়দ মুশফিকুর রহমান, আহমেদ আলী খান, রফিকুল ইসলাম, বেলায়েত হোসেন ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব মতিউর রহমান।

 

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) যশোরের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) সিরাজুল ইসলাম জানান, ২০০৪-০৫ অর্থবছরে আসামি সোহরাব হোসেন নড়াইল পৌরসভার মেয়র ছিলেন। ওই সময় রূপগঞ্জ পশুহাট ইজারার দরপত্র আহ্বান করা হয়। এইচএম সোহেল রানা পলাশ নামে এক ব্যক্তি সর্বোচ্চ ৬৫ হাজার ৫৫৫ টাকায় ওই হাটের ইজারা পান এবং তিনি দরপত্রের নিয়ম অনুযায়ী বিড হিসেবে ৩৩ হাজার টাকা জমা দেন। পরবর্তীতে তিনি দরপত্র মূল্য দিতে অপরাগতা প্রকাশ করে ইজারা থেকে অব্যাহতির আবেদন করেন।

 

ওই আবেদনে অপর আসামি তৎকালীন পৌর কমিশনার জাহাঙ্গীর বিশ্বাসসহ ছয়জন কমিশনার ও ভারপ্রাপ্ত সচিব সুপারিশ করেন এবং মেয়র হিসেবে সোহরাব হোসেন তা মঞ্জুর করেন। এরপর ইজারাদাতাকে তার জমাকৃত অর্থ ফেরত দেয়া হয়। একই সঙ্গে নতুন করে ইজারার আহ্বান না করে সবাই অবৈধভাবে লাভবান হওয়ার উদ্দেশ্যে ওই হাট তিন বছর ধরে খাস দেখিয়ে এক লাখ ৯৬ হাজার টাকা আদায় করেন এবং সমুদয় অর্থ আত্মসাৎ করেন।

১৪১২, ১৪১৩, ১৪১৪ বাংলা সনের ওই ইজারা মূল্য এক লাখ ৯৬ হাজার ৬৬৫ টাকা আত্মসাতের ঘটনায় ২০০৮ সালের ৭ আগস্ট নড়াইল থানায় মামলা হয়। দুদক যশোরের সহকারী পরিচালক ওয়াজেদ আলী গাজী বাদী হয়ে সাতজনকে আসামি করে এ মামলা দায়ের করেন। মামলায় দণ্ডবিধি ৪০৯/১০৯ ও ১৯৪৭ সালের ২ নম্বর দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ ধারায় আসামিদের দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে।

দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত ৪০৯/১০৯ ধারায় প্রত্যেক আসামিকে তিন বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড ও ১৯৪৭ সালের ২ নম্বর দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ ধারায় প্রত্যেক আসামিকে চার বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন। একই সঙ্গে এক লাখ ৯৬ হাজার ৬৬৫ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে প্রত্যেক আসামিকে।

পিপি সিরাজুল ইসলাম আরও জানান, মামলার আট আসামির মধ্যে বর্তমান জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন পলাতক। বাকি সাত আসামি কারাগারে।

(ঢাকাটাইমস/২৬সেপ্টেম্বর/প্রতিনিধি/ ইএস)