পদ্মা সেতু হচ্ছে, রোহিঙ্গারাও ফেরত যাবে, যদি...

শেখ আদনান ফাহাদ
 | প্রকাশিত : ০১ অক্টোবর ২০১৭, ১৮:০০

পদ্মা সেতু নিয়ে কম ষড়যন্ত্র করেনি সাম্রাজ্যবাদী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তার দেশীয় ও আন্তর্জাতিক সহযোগীরা। অথচ পদ্মা সেতু দিয়ে যান চলাচল এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। নির্মাণাধীন পদ্মা সেতুর জাজিরা অংশে একটি স্প্যান স্থাপন করা হয়ে গেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্ব, জনগণের সমর্থন আর প্রকৃত বিদেশী বন্ধুদের সাহায্য-সহযোগিতার ফলে পদ্মা সেতু ইস্যুতে সরকার সফল হতে চলেছে। রোহিঙ্গা ইস্যুতেও বর্তমান সরকার তথা বাংলাদেশ সফল হবে যদি পরিষ্কার পরিকল্পনা নিয়ে এগুনো যায়।

আত্মসম্মান বজায় রেখে বাংলাদেশ যেকোনো বড় কাজে সফল হতে পারে, এর প্রমাণ দেশটি সাম্প্রতিককালে একাধিকবার দিয়েছে। মিয়ানমার ও ভারতকে আন্তর্জাতিক আদালতে পরাজিত করে বিশাল সমুদ্রসীমার দখল নিয়েছে বাংলাদেশ। পদ্মা সেতুর নির্মাণও হবে বাংলাদেশের শক্ত রাষ্ট্রকাঠামোর অনন্য নজির। পদ্মা সেতু শুধু একটি সেতু নয়, এ যেন পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে উন্নয়নশীল বাংলাদেশের যুদ্ধ জয়ের স্মারক। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তাদের বাংলাদেশীয়-আন্তর্জাতিক সহযোগী গোষ্ঠী পদ্মা সেতু প্রকল্প বানচালে নীল নকশার অংশ হিসেবে বিশ্বব্যাংককে লেলিয়ে দিয়েছিল। অর্থায়নের আগেই দুর্নীতির ভুয়া অভিযোগ তুলে সরকারকে রাজনৈতিকভাবে নতজানু করার অপপ্রয়াস চালিয়েছিল। বিশ্বব্যাংকের প্রেস রিলিজ থেকে বড় বড় প্রতিবেদন ছাপত এদেশের কয়েকটি ইংরেজি-বাংলা নিউজপেপার।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুরু থেকেই দৃঢ়তার সাথে বলেছেন, পদ্মা সেতু ইস্যুতে কোনো দুর্নীতি হয়নি। যে প্রকল্পে অর্থায়ন শুরুই হয়নি, সেখানে দুর্নীতি হয় কীভাবে? কয়েকটি সংবাদপত্র বিশ্বব্যাংকের মুখপাত্রে পরিণত হয়েছিল। জনগণকে বিভ্রান্ত করে, সরকারকে বেকায়দায় ফেলে পদ্মা সেতু প্রকল্পকে হুমকির মুখে ফেলে দেয়া হয়েছিল। সংশয়বাদীরা দোটানায় থাকলেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার কিন্তু দৃঢ়চিত্তে ঘোষণা করে যে, বিশ্বব্যাংকের ঋণ নেয়া হবে না, বাংলাদেশ নিজের অর্থেই পদ্মা সেতু নির্মাণ করা হবে। সারা দেশে ছাত্র-ছাত্রী, শ্রমিকসহ সমস্ত শ্রেণী-পেশার দেশপ্রেমিক মানুষের মধ্যে তুমুল আলোড়ন সৃষ্টি হয়। সরকার দেশি-বিদেশী অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের কাজ শুরু করে। এবং কাজের সাফল্য এখন দেশবাসীর সামনে। তাই আওয়ামী লীগ সরকার দুর্বল কোনো সরকার নয় কিংবা বাংলাদেশ কোনো দুর্বল রাষ্ট্র নয়, এ কথা বলা যায় নিঃসন্দেহে।

এমতাবস্থায় বাংলাদেশের সামনে নতুন আরেক চ্যালেঞ্জ, রোহিঙ্গা ইস্যু। সংশয়বাদী ও সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীগুলো নানা গুজব ছড়ালেও বিজ্ঞজনেরা বলছেন যে রোহিঙ্গা ইস্যুর শান্তিপূর্ণ সমাধান সম্ভব। এ ক্ষেত্রে ভারত, চীন, যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া ইত্যাদি সংশ্লিষ্ট পররাষ্ট্রের মধ্য থেকে বাংলাদেশকে পরিষ্কারভাবে বেছে নিতে হবে, রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে কে বা কারা হবে তার সবচেয়ে কার্যকর সহায়ক শক্তি? রোহিঙ্গা ইস্যুতে সবার সহযোগিতা দরকার নেই বাংলাদেশের, সবাই সহযোগিতা করবেও না। এমনকি কোনো কোনো রাষ্ট্রের সহযোগিতার ভান করা বাংলাদেশের জন্য বিপজ্জনক প্রমাণ হতে পারে। সমস্যা যেহেতু প্রত্যক্ষভাবে বাংলাদেশকে মোকাবেলা করতে হচ্ছে, বাংলাদেশকেই রোহিঙ্গা সংকট নিরসনযজ্ঞে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে হবে। নেতৃত্ব ইতোমধ্যে বাংলাদেশ দিচ্ছেও। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতোমধ্যেই রোহিঙ্গা ইস্যুতে বিশ্বদরবারের মনোযোগ আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছেন।

নানা ধর্মের কিছু ধর্মান্ধ সাম্প্রদায়িক বাংলাদেশী ছাড়া, দেশের সবাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কর্মকৌশলে সাপোর্ট দিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। মানবিক কারণে অসহায় রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়া, তাদের আবাস, খাবার, পোশাক-পরিচ্ছদের ব্যবস্থা করা এবং জোর কূটনৈতিক তৎপরতার মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারকে বাধ্য করার কৌশল নিয়ে এগুচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কৌশলে বেশ কাজে দিচ্ছে। কিছু স্বার্থান্বেষী, সাম্প্রদায়িক মানুষ ছাড়া বাংলাদেশের প্রায় সব মানুষ শেখ হাসিনার ভক্ত হয়ে গেছে। শুধু দেশের মানুষ নয়, বিশ্বজুড়ে এখন প্রধান চরিত্র শেখ হাসিনা। ব্রিটিশ মিডিয়া শেখ হাসিনাকে ‘মাদার অব হিউম্যানিটি’ বলে আখ্যা দিয়েছে। খোদ নিউইয়র্কে বসে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে উদ্দেশ করে বলেছেন, ‘যিনি বঞ্চিত মানুষের কষ্ট বোঝেন না, তার কাছে আমি কী সাহায্য আশা করতে পারি!’ শেখ হাসিনার শক্ত অবস্থানের ফলে জাতিসংঘে একের পর এক বৈঠক হচ্ছে। সবাই স্বীকার করে নিয়েছে যে, নির্যাতিত জনগোষ্ঠী রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে সঠিক কাজ করেছে বাংলাদেশ, তবে দীর্ঘদিন বাংলাদেশ এই বোঝা বহন করতে পারবে না, মিয়ানমারকে ফেরত নিতেই হবে তাদের নাগরিকদের।

এমতাবস্থায় মিয়ানমারের এক মন্ত্রী বাংলাদেশে আসার কথা। মিয়ানমারও বলছে না যে তারা কখনোই রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেবে না। এমনতর পরিস্থিতিতে ভারত, চীন ও রাশিয়ার ভূমিকা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে। বলা হচ্ছে চীন কেন মিয়ানমারের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে না? রাশিয়া কেন চীনের মতো আচরণ করছে? প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কেন অং সান সু চির হাত ধরে প্রকাশ্যে নিজেদের সমর্থন দিয়েছেন? তবে শেখ হাসিনার সরকারের শক্ত ভূমিকার ফলে ভারত সরকার কিন্তু রোহিঙ্গা ইস্যুতে নিজেদের প্রাথমিক অবস্থায় পরিবর্তন এনেছে। নরেন্দ্র মোদী নিজে না হলেও পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে ফোন দিয়ে বলেছেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের পাশে আছে ভারত। যদিও ভারতের এই ঘোষণায় বাস্তব পরিস্থিতির কোনো হেরফের হয়নি। তদুপরি ভারতে আশ্রয় নেয়া ৪০ হাজার রোহিঙ্গাকে বের করে দেয়ার দাবি তুলছে নরেন্দ্র মোদীর দল বিজেপি, আরএসএস এবং শিবসেনার মত চরমপন্থি হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠীগুলো।

পরিস্থিতি দিন দিন ইতিবাচকভাবে বদলাচ্ছে। ত্রাণ আসছে নানা দেশ থেকে। এমনকি ভারত, চীন এবং যুক্তরাষ্ট্র থেকেও ত্রাণ এসেছে। তবে ত্রাণ আসা এবং রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান হওয়া এক বিষয় নয়। জাতিসংঘের নানা সহযোগী সংগঠন কাজ করছে রোহিঙ্গাদের বাঁচিয়ে রাখতে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, দরকার হলে বাংলাদেশের মানুষ রোহিঙ্গাদের সাথে খাবার ভাগ করে খাবে। প্রধানমন্ত্রীর এমন শক্ত অবস্থানের ফলেই যে ত্রাণ আসা শুরু হয়েছে তা বলাই বাহুল্য। তবে সঙ্গত কারণে চীনের ত্রাণ অসীম তাৎপর্য বহন করে।

নানা কারণে মিয়ানমারের প্রতি চীনের বিশেষ দৃষ্টিভঙ্গি কাজ করে। চীন জাতিসংঘে ভেটো ক্ষমতাসম্পন্ন রাষ্ট্রগুলোর একটি। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি এবং অন্যতম প্রধান সামরিক পরাশক্তি। রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে চীন যদি মিয়ানমারকে শক্ত করে বলে তাহলে বর্মি সেনাবাহিনীর কোনো উপায় থাকবে না। চীনকে বাদ দিয়ে ভারত কিংবা যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ঘনিষ্ঠ হওয়ার কথা মিয়ানমার স্বপ্নেও কল্পনা করতে পারবে না। চীনের সাথে মিয়ানমারের দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে এবং সেসব সীমান্তে নানা স্বাধীনতাকামী জাতিগোষ্ঠীর শক্ত বিচরণ। ধর্মীয়, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক এবং সামরিক কারণে মিয়ানমার সবচেয়ে বেশি নির্ভর করে চীনের উপর। চীনের স্বার্থবিরোধী কিছু করা মিয়ানমারের দুঃস্বপ্নের কারণ হতে পারে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদী যতই অং সান সুচির সাথে দেখা করতে রেঙ্গুন যাওয়া-আসা করেন, মিয়ানমার ইস্যুতে চীনের কোনো সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করা ভারতের ক্ষমতার বাইরে। কয়েকদিন আগে চীনের সাথে ভারতের সামরিক দ্বৈরথের ফলাফল আমরা দেখেছি। অর্থনৈতিক এবং সামরিক শক্তিতে চীনের সাথে ভারত তুলনীয় নয়।

যুক্তরাষ্ট্র ইদানীং মিষ্টি মিষ্টি কথা বলছে রোহিঙ্গা ইস্যুতে। এই যুক্তরাষ্ট্র আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হত্যাকাণ্ডের মূল হোতা বলে ধারণা করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের মিষ্টি কথা বাংলাদেশের জন্য বিপদের কারণ হতে পারে কি না সেটি অবশ্যই রাষ্ট্রের নীতি নির্ধারকদের ভেবে দেখতে হবে। কারণ যুক্তরাষ্ট্র যা বলবে, চীন এবং রাশিয়া ঠিক তার উল্টোটা বলবে এবং করবে। তাই যুক্তরাষ্ট্রের মিষ্টি কথা কিংবা ত্রাণ নিয়ে যথেষ্ট সাবধান থাকতে হবে আমাদের। উত্তর কোরিয়া ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের সামর্থ্য আমরা ইতোমধ্যেই দেখতে পেয়েছি। চীনের আশকারা পেয়ে যে উত্তর কোরিয়া সবাইকে টেক্কা দিচ্ছে সেটি সচেতন মানুষ মাত্রই জানেন। চীন তাই আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। চীনকে ম্যানেজ করতে পারলে রাশিয়াও ম্যানেজ হয়ে যাবে। সিরিয়া, উত্তর কোরিয়া এবং ইরানসহ কয়েকটি ইস্যুতে আমরা চীন এবং রাশিয়ার ভূমিকা বিবেচনায় নিতে পারি। মিয়ানমার ইস্যুতে রাশিয়ার সরাসরি কোনো সম্পৃক্ততা নেই। রাশিয়া বরং বাংলাদেশের জন্মলগ্নের সাথী। দেশের ইতিহাসের সব বড় প্রকল্পে রাশিয়ার সরাসরি বিনিয়োগ রয়েছে। রূপপুর আনবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প তৈরি করে দিচ্ছে রাশিয়া। রোহিঙ্গা ইস্যুতে রাশিয়া আমাদের পক্ষে থাকবে না, এটা হতে পারে না। কিন্তু এর জন্য দরকার সঠিক রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত।

দক্ষিণ এশিয়াতে ভুটান ছাড়া ভারতের একমাত্র নিরাপদ প্রতিবেশী বাংলাদেশ। ভারতের আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষায় বাংলাদেশের দারুণ ভূমিকা আছে। সীমান্তে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নির্মূলে বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী ঐতিহাসিক অবদান রেখে চলেছে। ভারত একই সাথে পাকিস্তান এবং চীনের সাথে লড়ছে। পাকিস্তান সীমান্তে প্রায় প্রতিদিন ভারতের সেনাবাহিনীর লোকজন মারা পড়ছে। একমাত্র বাংলাদেশই ভারতের ‘বন্ধু’ হিসেবে কাজ করছে। বাংলাদেশ ভারতের তৃতীয় বৃহত্তম রেমিট্যান্স খাত। ভারত বাংলাদেশের সাথে কখনোই বড় ধরনের সংঘাতে জড়াবে না। বাংলাদেশের বন্ধুত্ব ভারতের তাই খুব দরকার। তাছাড়া ভারত রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের পাশে থাকার যে ‘বিলম্বিত’ ঘোষণা দিয়েছে, তাতে মিয়ানমারের কিছু যায়-আসে না বলেই মনে হয়। ভারত বরং নিজেদের সীমান্ত ঠাণ্ডা রাখতে মিয়ানমারের সাথে যোগাযোগ রেখে চলতে চায়।

ফলে সব কিছুর বিবেচনায়, এ কথা বলা যায়, রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের জন্য সবেচেয়ে কার্যকর পার্টনার হতে পারে চীন। ফলে চীনের সাথে বাংলাদেশের যোগাযোগ জোরদার করতে হবে। চীন বাংলাদেশে ব্যবসা করতে চায়। সাগরে, উপকূলে ভারত এবং যুক্তরাষ্ট্রের উপস্থিতি চীনের জন্য মাথাব্যাথার কারণ। চীনের রাষ্ট্রপতি জিন পিং বাংলাদেশ সফরে এসে প্রায় ৪০ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। বাংলাদেশকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করে বলেই চীনের রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশ সফরে এসেছেন। তাই বাংলাদেশ থেকে চীন কী চায় সেটি অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে সরকারকে ভাবতে হবে। নিজেদের সম্মান এবং স্বার্থ বজায় রেখে চীনের দিকে আমাদের বন্ধুত্বের হাত প্রসারিত করতে হবে। সে পথেই বাংলাদেশ এগুচ্ছে বলে ধারনা করা যায়। আমাদের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী সাম্প্রতিককালে দুইবার চীন সফর করেছেন। চীন আমাদেরকে যুদ্ধ সাবমেরিন সরবরাহ করেছে। আমাদের প্রতিরক্ষাবাহিনীর সমস্ত অস্ত্রের অন্যতম যোগানদাতা এই চীন। চীনের সাথে আমাদের সম্পর্ক বহু পুরনো। শত শত বছর আগে চীনের পর্যটকরা ঐতিহাসিক সিল্ক রুট দিয়ে এ অঞ্চলে এসেছেন। আমাদের অতিশ দীপঙ্কর সেই কবে জ্ঞানের আলো নিয়ে চীনে গিয়েছিলেন! আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দুইবার চীন সফরে গিয়েছিলেন। অসমাপ্ত আত্মজীবনীতে এই মহান নেতার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করা আছে।

চীন এশিয়া এবং আফ্রিকার দেশগুলোকে নিয়ে ‘ওয়ান বেল্ট, ওয়ান রোড’ প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে চায়। বাংলাদেশকে এ ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পার্টনার মনে করে চীন। আমরা সম্প্রতি দেখেছি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম মেম্বার কর্নেল (অবঃ) ফারুক খানের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল চীনের কম্যুনিস্ট পার্টির নিমন্ত্রণে চীন সফর করেন। চীন সফরে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিদল যাওয়ার পরপরই চীন থেকে রোহিঙ্গাদের জন্য ত্রাণ এসেছে। খুবই গুরুত্বপূর্ণ এই ত্রাণ। আমরা মনে করি, চীন রোহিঙ্গা ইস্যুতে সবচেয়ে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। শুধু রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে নয়, উন্নত, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার কাজে চীন হতে পারে আমাদের স্বপ্নের অংশীদার।

লেখক: শিক্ষক ও সাংবাদিক

সংবাদটি শেয়ার করুন

মতামত বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :