পরিকল্পিত ও বাসযোগ্য কিশোরগঞ্জ গড়ার টার্গেট মেয়রের

আমিনুল হক সাদী, কিশোরগঞ্জ
| আপডেট : ০৪ অক্টোবর ২০১৭, ০৭:৫৯ | প্রকাশিত : ০৪ অক্টোবর ২০১৭, ০৭:৫৬

সৌন্দর্যবর্ধনে বিভিন্ন প্রকল্প হাতে নিয়েছে কিশোরগঞ্জ পৌরসভা কর্তৃপক্ষ। দেড়শ বছরের পুরনো এই পৌরসভাকে একটি উন্নত পৌরসভায় পরিণত করার লক্ষে আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছেন বর্তমান মেয়র পারভেজ মিয়া। ২০১৬ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে তিনি পৌরসভাকে ঢেলে সাজাচ্ছেন। ব্যাপক উদ্যোগ ও কাজের তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। এসব উন্নয়ন পরিক্রমায় বর্তমান পৌর পরিষদ বলিষ্ট ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে।

পৌর মেয়র পারভেজ মিয়া ঢাকাটাইমসকে জানান, পৌরসভার ইউজিআইআইপি প্রকল্পের আওতায় ১৯ কোটি টাকার রাস্তা ও ড্রেন নির্মাণের কাজ বাস্তবায়ন চলমান রয়েছে। পৌর মার্কেটের স্থলে একটি আধুনিক পৌর সুপার মার্কেট নির্মাণ, ইউজিআইআইপি প্রকল্পের আওতায় দুই কোটি ৯০ লাখ ৯৮ হাজার ৯৭২ টাকার রাস্তা ও ড্রেন নির্মাণের কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। সবার সহযোগিতা অব্যাহত থাকলে ভবিষ্যতে কিশোরগঞ্জকে একটি পরিকল্পিত ও বাসযোগ্য শহর হিসেবে গড়ে তুলতে পারবেন বলে তিনি মনে করেন।

মেয়র বলেন, পৌরসভার ভেতরে কিছু এলাকায় ও রাস্তার মোড়ে মোড়ে সৌন্দর্যবর্ধনের কাজও হাতে নেয়া হয়েছে। শহরের পুরানথানা মোড়ে ফোয়ারা, বটতলা মোড়ে ফোয়ারা, আখড়াবাজার ব্রিজের পাশে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলামের নামে একটি ভাস্কর্য ফোয়ারা, রেল স্টেশনেও অনুরূপ আরেকটি ফোয়ারা তৈরি করা হবে।

কামরুল হাসান সোহেল নামে একজন ভাস্কর্য শিল্পী এসবের ডিজাইন তৈরি করছেন বলে জানা গেছে। ভাস্কর্য শিল্পীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঢাকাটাইমসকে বলেন, পৌরসভার সৌন্দর্যবর্ধনে কিছু ভাস্কর্যের ডিজাইনের কাজ এগিয়ে চলছে।

কাজের ডিজাইনের বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি বলেন,বটতলা মোড়ে যে ভাস্কর্যটি হবে তার মধ্যে থাকছে কলম আলিফ ও পাল তোলা নৌকার প্রতীক। কলমের দ্বারা বুঝাবে গুরুদয়াল সরকারি কলেজ ও তার থেকে শিক্ষার্থীদের জ্ঞান আহরণকে। আলিফ হবে ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের অনুসারে। পাল তোলা নৌকা বুঝাবে নরসুন্দা নদের তীরের অবস্থান কিশোরগঞ্জকে। এছাড়াও জেলা শহরের বিভিন্ন স্থানে ও মোড়ে এবং পৌর ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।

কিশোরগঞ্জ পৌরসভার ইতিহাস অনুসন্ধানে জানা গেছে, উনবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে প্রতিষ্ঠিত একটি শহরের নাম কিশোরগঞ্জ। ১৮৬৯ সালের ১ এপ্রিল কিশোরগঞ্জ মিউনিসিপালিটি প্রতিষ্ঠিত হয় এবং মহকুমা প্রশাসক মহোদয়ের অফিস সংলগ্ন বর্তমান পুরাতন স্টেডিয়ামের পূর্ব দক্ষিণ কোণে একটি বিশাল বটবৃক্ষের নিচে ছোট্ট একটি টিনের ঘরে কিশোরগঞ্জ মিউনিসিপালিটির কার্যক্রম পরিচালিত হতে থাকে। ১৯২৩ সালে ওই টিনের ঘর থেকে পৌরসভা অফিসটি নরসুন্দা নদীর দক্ষিন তীরে কুটিগির্দ্দি নামক স্থানে স্থানান্তরিত হয়। তৎকালীন কিশোরগঞ্জের কালীবাড়ী মোড়ের প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী রঞ্জিত ঘোষের পিতামহ কালাচাঁদ ঘোষের অর্থানুকূল্যে ইউ প্যাটার্নের একটি দালান ঘর প্রতিষ্ঠার পর সেখানে দীর্ঘদিন পর্যন্ত মিউনিসিপালিটি অফিসের কার্যক্রম পরিচালিত হতে থাকে।

স্বাধীনতার পর কিশোরগঞ্জ মিউনিসাপালিটি থেকে কিশোরগঞ্জ পৌরসভা নামে রূপান্তরিত হয়। ওই সময় পৌরসভার কার্যক্রমের প্রসার ঘটলে মূল ভবনের সামনে পরিবর্ধন করে কার্যালয়ের পরিধি বাড়ানো হয়। কিশোরগঞ্জের ভেতর দিয়ে বয়ে যাওয়া নরসুন্দার দুই তীরে শহরটি গড়ে উঠে ক্রমাগতভাবে। বর্তমানে কিশোরগঞ্জ পৌরসভা একটি ‘ক’ শ্রেণির পৌরসভা যা নয়টি ওয়ার্ডে বিভক্ত ও আয়তন ১০.৩৭ বর্গ কিলোমিটারের। এই শহরের পরিধি ক্রমাগত বিস্তৃত হচ্ছে। এ পৌর শহরটিকে ঘিরে চলছে ব্যাপক উন্নয়ন কাজ।

(ঢাকাটাইমস/০৪অক্টোবর/প্রতিনিধি/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :