রোহিঙ্গা শিশুদের সুরক্ষায় শিশুপল্লী

বলরাম দাশ অনুপম, কক্সবাজার থেকে
 | প্রকাশিত : ০৫ অক্টোবর ২০১৭, ০৯:১৫

কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফে অবস্থান নেয়া রোহিঙ্গা এতিম শিশুদের জন্য গড়ে তোলা হচ্ছে শিশুপল্লী। ইতোমধ্যে এই প্রকল্পের কাজও শুরু করেছে সরকার। এই প্রকল্পের আওতায় প্রথমে ছয় হাজার এতিম শিশুর পুনর্বাসন করা হবে। মানবিকতার অনন্য দৃষ্টান্ত হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে কাজও শুরু করেছে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়।

সরেজমিনে গিয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মিয়ানমারে অমানবিক নির্যাতনের শিকার হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা মা-বাবা হারানো এতিম শিশুদের পুনর্বাসনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রচেষ্টায় সম্প্রতি একটি প্রকল্প হাতে নেয় সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়। শেখ রাসেল শিশু প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্রের আলোকে গড়ে তোলা হবে এই রোহিঙ্গা এতিম শিশুপল্লী বাস্তবায়নের প্রকল্পটিও।

প্রকল্পের কাজে নিয়োজিত মোহাম্মদ করিম ও কাশেম ঢাকাটাইমসকে জানান, গত ২২ সেপ্টেম্বর থেকে টেকনাফ এবং উখিয়ার বিভিন্ন পয়েন্টে এতিম রোহিঙ্গা শিশুদের তথ্য সংগ্রহ চলছে। তথ্য সংগ্রহের পর এতিম শিশুদের ডাটা এন্ট্রি করা হচ্ছে। শিশু পল্লীতে ছয় হাজার রোহিঙ্গা শিশুর আবাসনসহ নানাবিধ সুবিধা থাকবে।

কক্সবাজার শেখ রাশেল শিশু প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্রের উপ-পরিচালক জেসমিন আক্তার জানান, সমাজকল্যাণ মন্ত্রাণালয়ের নির্দেশে সমাজসেবা অধিদপ্তর এবং শেখ রাশেল শিশু প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্রের ৯০ জন কর্মকর্তা ও কর্মচারী এ রোহিঙ্গা শিশুপল্লী বাস্তবায়নের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। এই কাজে ২৪ জন কর্মকর্তা নিয়োজিত রয়েছেন। উপ-পরিচালক বলেন, দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা ৩ অক্টোবর পর্যন্ত চার হাজার ৮০২ জন রোহিঙ্গা এতিম শিশুর তথ্য সংগ্রহ করেছেন। আর এক হাজার ৪১২ জনের ডাটা এন্ট্রি করেছেন।

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন এবং ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম সমন্বয়ের জন্য ১৪ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নিয়মিত বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মুখ্য সচিব মন্ত্রিসভার ১৭ নং সিদ্ধান্তে এতিম রোহিঙ্গা শিশুদের তালিকা প্রণয়ন ও কল্যাণ নিশ্চিতের লক্ষ্যে ১৯ সেপ্টেম্বর সমাজসেবা অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে টিম গঠন করেন। ওই টিম এতিম রোহিঙ্গা শিশুদের নিয়ে ২ সেপ্টেম্বর থেকে কাজ শুরু করেছে। আর এই টিমে সমাজসেবা অধিদপ্তর ও শেখ রাসেল শিশু প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্রের ৯০ জন কর্মকর্তা কর্মচারী রয়েছেন।

জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ পরিচালক প্রীতম কুমার চৌধুরী জানান, এতিম রোহিঙ্গা শিশুদের সনাক্তের পর তাদের তথ্য নিবন্ধন করা হচ্ছে। তথ্য সংগ্রহ ও নিবন্ধন শেষে নিবন্ধিত শিশুরা স্মার্ট কার্ড পাবে। তারপর তাদের পুনর্বাসন প্রক্রিয়া শুরু হবে। স্মার্ট কার্ডের মাধ্যমে তাদের ত্রাণ কার্যক্রম, পুনরায় স্বদেশে ফেরত, এমনকি সার্বিক কার্যক্রম পরিচালিত হবে।

জেলা সমাজসেবার এই কর্মকর্তা আরও বলেন, রোহিঙ্গাদের জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে উখিয়া মৌজার যে দেুই হাজার একর জায়গার কথা বলা হচ্ছে সেখান থেকে দুইশ একর জায়গায় এতিম রোহিঙ্গা শিশুদের পুনর্বাসনে আলাদা শিশুপল্লী গড়ে তোলা হবে। ইতোমধ্যে জায়গা চিহ্নিতকরণে প্রশাসন কাজ করছে। তবে জায়গা এখনো চূড়ান্ত হয়নি।

(ঢাকাটাইমস/৫অক্টোবর/জেডএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :