দ্রুত ‘মুটিয়ে’ যাচ্ছে শিশুরা
শিশু ও কিশোরদের শারীরিক স্থূলতা বা মোটা হয়ে যাওয়ার হার গত চার দশকে দশগুণ বেড়েছে। এর অর্থ হচ্ছে, সারা বিশ্বে ১২ কোটি ৪০ লাখ শিশু-কিশোর এখন অতিরিক্ত মোটা।
বিশ্বখ্যাত গবেষণা প্রতিষ্ঠান ল্যানচেট দুইশটিরও বেশি দেশের ওবেসিটির প্রবণতা বিশ্লেষণ করে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে। আজ ওয়ার্ল্ড ওবেসিটি ডে বা বিশ্ব শারীরিক স্থূলতা দিবসে এসে এই গবেষণা ফলাফলটি প্রকাশ করল ল্যানচেট।
এতে দেখা যাচ্ছে, যুক্তরাজ্যে ৫ থেকে ১৯ বছর বয়েসীদের মধ্যে প্রতি দশজনের একজনই স্থূলকায় বা অস্বাভাবিক মোটা। এসব স্থূলকায় শিশুরা ভবিষ্যতে একজন পূর্ণবয়স্ক স্থূলকায় হিসেবে বেড়ে ওঠে। স্থূলতা তাদের মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে ফেলে বলে জানালেন বিশেষজ্ঞরা।
ল্যানচেট সতর্ক করে দিচ্ছে, যে হারে বিশ্বে স্থূলতার হার বাড়ছে, তাতে ২০২৫ সাল নাগাদ স্থূলতাজনিত অসুস্থতার চিকিৎসা ব্যয় বিশ্বজুড়ে ৯২০ বিলিয়ন পাউন্ড ছাড়িয়ে যাবে।
এই গবেষণার মুখ্য গবেষক এবং ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডনের অধ্যাপক মজিদ এজ্জাতি বলেন, যুক্তরাজ্যসহ উচ্চ আয়ের ইউরোপীয় দেশগুলোতে শিশুদের স্থূলতার হার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলেই মনে হচ্ছে। কিন্তু বিশ্বের বহু জায়গাতেই সেটা আশঙ্কাজনক ভাবে বেড়ে গেছে।
গবেষকরা মনে করেন, সস্তা এবং স্থূল করে দেয় এমন খাবার সহজলভ্য হয়ে ওঠা এবং এসব খাবারের ব্যাপক প্রচারণা এর জন্য দায়ী। স্থূলতার হার সবচেয়ে বেশি পূর্ব এশিয়ায়। চীন এবং ভারতে সম্প্রতি এই হার ফুলে-ফেঁপে উঠতে দেখা গেছে। পলিনেশিয়া এবং মাইক্রোনেশিয়ায় রয়েছে সর্বোচ্চ ওবেসিটির হার। এসব দেশের প্রায় অর্ধেক তরুণ জনগোষ্ঠীই হয় স্থূল নয়তো অতিরিক্ত ওজনের।
গবেষকরা জানান, শীঘ্রই 'অপুষ্টি' শব্দটির স্থান নিয়ে নেবে 'ওবিস' বা স্থূলতা শব্দটি। ২০০০ সাল থেকে বিশ্বজুড়ে অপুষ্ট অর্থাৎ স্বল্প ওজনের ছেলে-মেয়ের সংখ্যা কমছে। ২০১৬ সালে অপুষ্ট মানুষের সংখ্যা ছিল ১৯ কোটি ২০ লাখ। সংখ্যাটা অবশ্যই স্থূল শিশু-কিশোরদের তুলনায় অনেক বেশি। কিন্তু সেদিন হয়তো আর দূরে নয়, যেদিন স্থূলদের সংখ্যাই বেড়ে যাবে।
পূর্ব এশিয়া, দক্ষিণ আমেরিকা এবং ক্যারিবিয়ান দেশগুলো কয়েক দশকের মধ্যেই স্থূলতাকে অপুষ্টির জায়গা নিতে দেখা গেছে।
(ঢাকাটাইমস/১১অক্টোবর/জেএস)