জামালপুরে পীরের বিরুদ্ধে তার পরিবারের নানা অভিযোগ

জামালপুর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ১২ অক্টোবর ২০১৭, ১৮:২৮ | প্রকাশিত : ১২ অক্টোবর ২০১৭, ১৮:২৭

জামালপুরে কথিত পীর কামাল খান জামালীর অসামাজিক কার্যকলাপ ও পরিবারের উপর নির্যাতন বন্ধ এবং দরবার শরিফের পবিত্রতা রক্ষার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে তার পরিবার, মরহুম পীর ময়েন উদ্দীন খান জামালীর ভক্ত-আশেকান ও প্রতিবেশীরা।

বৃহস্পতিবার সকালে বাগে আবেদ দরবার শরীফ চত্বরে এই সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে কথিত পীর কামাল খানের স্ত্রী ফাতেমা বেগম বলেন, তার শ্বশুর বাগে আবেদ দরবার শরিফের পীর মঈন উদ্দিন খান জামালী একজন কামেল বুজুর্গ ছিলেন। জামালপুর ছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে হাজার হাজার ভক্ত ও আশেকানরা এই দরবার শরিফে প্রতিবছর ওরশে আসতেন। এছাড়াও সারা বছরই ভক্ত-আশেকানরা আসা-যাওয়া করত এই দরবার শরিফে। আমার শ্বশুর মারা যাবার পর আমার শ্বাশুড়ি উত্তরাধিকার সূত্রে দরবার পরিচালনার দায়িত্ব পান এবং সুনামের সাথে পরিচালনা করেন। তখনও ভক্ত-আশেকানদের কোন কমতি ছিল না। তিনি অসুস্থ হওয়ার পর শুরু হয় কামালের উশৃঙ্খল জীবন-যাপন। এক পর্যায়ে কামাল নিজেকেই পীর হিসেবে ঘোষণা দেন। এর পর থেকে দরবার শরিফের বিশেষ কক্ষে শুরু হয় নারীর ভোগ-বিলাসিতা, চলে মদ-গাঁজার আসর। আমাকে ছাড়াও আরো ৫টি বিয়ে করেন তিনি। তার পাশবিক নির্যাতনে একে একে সব স্ত্রী চলে যায়। আমি কামালের সকল জুলুম নির্যাতনের পরও সন্তান আর একজন পীরের দরবার শরিফের মায়ায় এখানে পড়ে আছি।

সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, কথিত পীর কামাল ১৯৯৮ সালে দরবার সংলগ্ন জনৈক এক দরিদ্র পরিবারের স্কুলপড়ুয়া কন্যাকে অপহরণ করে ধর্ষণ পরে গুম করে রাখে। ওই সময়ে পীরের এই অসামাজিক কার্যকলাপের ঘটনা পত্র-পত্রিকায় প্রকাশ হওয়ায় ওই কিশোরীকে জোরপূর্বক বিয়ে করে। এ খবর পেয়ে সদর থানা পুলিশ কিশোরীকে উদ্ধার এবং কামালকে গ্রেপ্তার করে নারী নির্যাতন মামলায় আদালতে সোপর্দ করে। ওই মামলায় ছয় মাস হাজত বাসের পর কিশোরীর পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিয়ে খালাস পান কথিত পীর কামাল।

সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, ভণ্ড কামাল ২০০৬ সালে মেলান্দহের ঝাউগড়া এলাকার এক মেধাবী ছাত্রীকে চিকিৎসার নামে ধর্ষণের পর হত্যা করে গাছের সাথে ঝুলিয়ে রাখে। পরে তার ভক্তদের দিয়ে দ্রুত দাফন করলেও পত্র-পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর স্থানীয় প্রশাসন লাশ উত্তোলন করে বিচারের মুখোমুখি করে কামালকে। সে যাত্রায়ও মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে পার পেয়ে যান তিনি।

কামাল এই ঘটনার পর থেকে দরবার শরিফের বিশেষ কক্ষটি রংমহল হিসেবে ব্যবহার শুরু করে। চলতে থাকে একের পর এক অসামাজিক কার্যকলাপ। এখান মাদক বিক্রির অভিযোগ করা হয়। কামালের এসব অসামাজিক কার্যকলাপে মুখ ফিরিয়ে নেন হাজার হাজার ভক্তরা।

কথিত পীর কামালের এসব কর্মকাণ্ডে ক্ষুব্দ হয়ে উঠে ভক্ত-আশেকানসহ বগাবাইদ ও আশপাশের গ্রামের মানুষরা। জনরোষ থেকে বাঁচতে দরবার ছেড়ে গত কয়েক দিন আগে এক নারী নিয়ে পালিয়েছে কথিত পীর কামাল।

স্থানীয় লোকজন ও ভক্ত-আশেকানরা দরবার শরিফটি রক্ষায় কথিত পীর কামালের বিচারের দাবি জানান।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন পীর কামালের ছেলে ফয়সাল খান বাবু, ছোট ছেলে রিয়াদ খান ও মেয়ে উর্মিসহ ভক্ত-আশেকান ও এলাকাবাসী।

(ঢাকাটাইমস/১২অক্টোবর/প্রতিনিধি/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :