তিন বছরেও নেই বিদ্যুৎ সংযোগ

প্রকাশ | ১২ অক্টোবর ২০১৭, ২১:২১

হিমেল চাকমা, খাগড়াছড়ি

খাগড়াছড়ি জেলার মহালছড়ি উপজেলার ৩নং কায়াংঘাট ইউনিয়নে পূর্ব মানিকছড়ি, ঘাটঘর পাড়া, মার বাড়ি পাড়া, মধ্যপাড়া, চেয়ারম্যান পাড়া, উল্টাছড়ি শীলানন্দ ভান্তে কুটির এলাকাসহ মোট ৮টি গ্রামে বিদ্যুতিক সঞ্চালন লাইন স্থাপন শেষ হয় ২০১৪ সালে ডিসেম্বরে মাসে।

প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন করে গ্রামগুলোতে বিদ্যু সরবরাহের জন্য ২০১৫ সালে এপ্রিল মাসে খাগড়াছড়ি বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগকে হস্তান্তর করে প্রকল্প বিভাগ। কিন্তু প্রায় তিন বছর পরও বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়নি বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগ।

এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, একাধিক বিদ্যুতিক খুঁটি উপড়ে পড়েছে। কোনটা  হেলে পড়েছে।  সংযোগ লাইন থেকে ছিঁড়ে পড়েছে তার।

স্থানীয়রা বলেন, বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়ার আশ্বাসে একাধিবার এসব গ্রামের লোকজনের কাছ থেকে অর্থ আদায় করে বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের লোকজন। এসব টাকাগ্রহণের পর আবার নানান খরচ দেখিয়ে টাকা চেয়ে বসেন। গ্রামের মানুষ একাধিকবার চাঁদা তুলে বিদ্যুৎ বিভাগের লোকদের হাতে দিলেও বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হয়নি।

পূর্ব মানিকছড়ি গ্রামের সুমন চাকমা বলেন, অর্থ তো দিয়েছি। আমাদের যা যা করণীয় তার বাইরে কাজ করেছি। বিদ্যুৎ খুঁটি কাধে তুলেছি। বিদ্যুৎ সংযোগ লাইনে কাজ চলাকালে  গ্রামবাসীর কাছ থেকে চাঁদা তুলে  শ্রমিকদের রান্না করে ভাত দিয়েছে।

বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হয়নি, অথচ আমাদের লাইন সংস্কার খরচ, খুঁটির খরচ দিতে হচ্ছে। এ যাবৎ আমি আমাদের গ্রাম থেকে ১৬ হাজার টাকা দিয়েছি। ৩২টি মিটারের জন্য ৪ হাজার টাকা করে বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগে জমা দিয়েছি। আরো একশটি মিটারের জন্য আবেদন করেছি খবর নেই। এখন খুঁটি ক্রয়, সংস্কার বাবদ টাকা চাওয়া হচ্ছে। এগুলো দিলে যে কাজ হবে তারও কোন নিশ্চয়তা নেই। আমরা যতবার গিয়েছি বিতরণ বিভাগের প্রকৌশলী শুধু সহকারী প্রকৌশলী অনুতোষ চাকমার সাথে সমন্বয় করতে বলেন। কিন্তু কোন কাজ হয় না।

কায়াংঘাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বিশ্বজিৎ চাকমা বলেন, বিদ্যুৎ অফিসে গেলেই খুঁটির খরচ, ট্রান্সফর্মার খরচ, শ্রমিক মজুরির খরচ চাওয়া হয়। অতীতে একাধিবার দেয়া হয়েছে। এ যাবত কত টাকা যে দিলাম তার হিসাব নেই। আসলেই টাকা দিতে হয় অনুতোষ চাকমাকে। কিন্তু টাকা দেয়ার পর আবার নতুন খরচের তালিকা ধরিয়ে দেয়।

এ ব্যাপারে অনুতোষ চাকমার সাথে কথা বলতে একাধিকবার তার মোবাইল নম্বরে কল দেয়ার পরও তিনি কল রিসিভ করেননি।

খাগড়াছড়ি বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জাফর আহমেদ ক্ষেপে যান। বলেন, ফালতু একটা লাইন করেছে বিদ্যুৎ প্রকল্প বিভাগ। সবাই ফালতু। এই লাইন দিয়ে সংযোগ দেয়া যাবে না।

আমি নিজে গিয়ে দেখে এসেছি। এ লাইনে বিদ্যুৎ সংযোগ দিলে মানুষ মরবে।

রাঙামাটি বিদ্যুৎ প্রকল্প অফিসের প্রকৌশলী মো. আলম বলেন, আমরা কাজ শেষ করে গ্রামগুলোতে বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য খাগড়াছড়ি বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগকে হস্তান্তর করেছি। আমি যতটুকু জানি সেখানে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হয়েছে। আপনার কাছ থেকে জানলাম এখনও সেখানে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হয়নি। লাইনটি পড়ে থাকলে তো ক্ষতি হবে।

(ঢাকাটাইমস/১২অক্টোবর/প্রতিনিধি/এলএ)