মির্জাপুরে রাতের আধারে অবৈধভাবে গ্যাস বিক্রি

জাহাঙ্গীর হোসেন, মির্জাপুর (টাঙ্গাইল)
 | প্রকাশিত : ১৪ অক্টোবর ২০১৭, ২১:১৭

টাঙ্গাইলের মির্জাপুর বাইপাসে অবস্থিত মা সিএনজি ফিলিং স্টেশনে রাতের আধারে অবৈধভাবে গ্যাস বিক্রির মহোৎসব চলছে বলে জানা গেছে। আইনের তোয়াক্কা না করে মাসের পর মাস ধরে ঝুঁকিপূর্ণ সিলিন্ডারের মাধ্যমে গ্যাস বিক্রি ও সরবরাহ করছে পাম্প কর্তৃপক্ষ। ইতোপূর্বে উল্লেখিত অভিযোগে পাম্প মালিকের কাছ থেকে কয়েক দফা জরিমানা আদায় করলেও অবৈধ গ্যাস বিক্রি ও সরবরাহ চালু অব্যহত রয়েছে বলে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে।

এছাড়া একই অপরাধ বারবার করায় অস্থায়ী সময়ের জন্য পাম্পটিতে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রাখে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ। গত এক বছরেরও কম সময় আগে ঝুঁকিপূর্ণভাবে সিলিন্ডারের মাধ্যমে গ্যাস বিক্রি ও সরবরাহের সময় হাতেনাতে ধরে ফেলেন তৎসময়ের মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাসুম আহমেদ। পরে উচ্চ মহল থেকে একাধিক তদবির করে মাত্র পঞ্চাশ হাজার টাকা জরিমানা দিয়ে সেযাত্রা পার পান পাম্প মালিক ইব্রাহিম মিয়া।

জানা গেছে, ২০১৬ সালের নভেম্বর মাসে ঝুঁকিপূর্ণভাবে সিলিন্ডারের মাধ্যমে গ্যাস বিক্রি ও সরবরাহের অভিযোগে গাজীপুর মহানগর এলাকার পাঁচটি সিএনজি স্টেশনের লাইসেন্স বাতিল করে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)।

কমিশনের এমন শক্ত অবস্থানের পরও মাসের পর মাস ধরে ঝুঁকিপূর্ণ সিলিন্ডারে রাতের আধারে গ্যাস বিক্রি ও সরবরাহ চালু রেখেছে মা সিএনজি কর্তৃপক্ষ।

গত এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে রাতে মা সিএনজি ফিলিং স্টেশন এলাকায় সরেজমিনে দেখা গেছে, খুলনা অক্সসিজেন লিমিডেট লেখা নামে ঢাকা (মেট্রো ট-১৫-১৪৮৭) একটি বিশাল আকৃতির কাভার্ডভ্যান রাত দশটার পর ওই পাম্পে এসে অবস্থান নেয়। কাভার্ডভ্যানের ভেতরে মাল বহনের স্থানে সারি সারি ঝুঁকিপূর্ণ গ্যাস সিলিন্ডার। রাত ১১টার পর থেকে এই কাভার্ডভ্যানে গ্যাস সরবরাহ শুরু হয়ে ভোর অবধি তা চলতে থাকে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সিএনজি পাম্পের এককর্মী জানান, কাভার্ডভ্যানে গ্যাস ভরতে ৫-৬ ঘণ্টা সময় লাগে। ওই কাভার্ডভ্যানে এক সাথে এক লাখ টাকার ওপরে গ্যাস সরবরাহ করা করা হয়।

খোঁজ নিয়ে আরও জানা গেছে, ব্যস্ততম মহাসড়কে অবস্থিত এই পাম্পে প্রতি মাসে ৯০ লাখ থেকে এক কোটি টাকার গ্যাস বিক্রি হয়ে থাকে। এভাবে মাসের প্রায় ৩৫ থেকে ৪০ লাখ টাকা মূল্যের গ্যাস এভাবেই বিক্রি করা হয়।

এ ব্যাপারে মা সিএনজি ফিলিং স্টেশনের মালিক ইব্রাহিম মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে কাভার্ডভ্যানে ঝুঁকিপূর্ণ সিলিন্ডার গ্যাস বিক্রির কথা স্বীকার করে বলেন, কাভার্ডভ্যানে গ্যাস বিক্রি করা হয় সেটা বৈধ।

খুলনা অক্সিজেন লিমিডেট লেখা কাভার্ডভ্যানে ভর্তি শতশত সিলিন্ডারে সিএনজি গ্যাস সরবরাহের বিষয়ে তিনি বলেন, খুলনা অক্সিজেন একটি গ্রুপ কোম্পানির। এই কাভার্ডভ্যানের মাধ্যমে তাদের অন্য প্রতিষ্ঠানে গ্যাস সরবরাহ হয়ে থাকে।

তবে একই অপরাধে ইতোপূর্বে জরিমানা দেয়ার কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এসব ঘটনা আমার স্মরণে নেই।

এ ব্যাপারে টাঙ্গাইল তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির ব্যবস্থাপক মামুনুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এভাবে গ্যাস সরবরাহ করা বৈধ না। যেহেতু গভীর রাতে অবৈধভাবে গ্যাস সরবরাহ করা হয়ে থাকে, খোঁজ নিয়ে পাম্পের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

(ঢাকাটাইমস/১৪অক্টোবর/প্রতিনিধি/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :