শীত আসছে ধীর পায়ে

রিমন রহমান, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১৭ অক্টোবর ২০১৭, ০৮:০২

ভোরের প্রকৃতিতে হাত বাড়লেই ঠান্ডা ঠান্ডা ভাব। উত্তর থেকে আসছে শিরশিরে বাতাস। সকাল-সন্ধ্যে ঘাসের ওপর মুক্তোর মতো দেখা যাচ্ছে শিশিরের কণা। গাছ থেকে ঝরছে পাতা, ঝরছে শিউলি ফুল। শেষ রাতে গায়ে চাদর চাপাচ্ছেন অনেকেই। কার্তিকের প্রথম দিনে সোমবার ভোরে রাজশাহীর প্রকৃতিতে কুয়াশার ছড়াছড়িরও দেখা মিলল।

অক্টোবরের মাঝামাঝিতে এসে তাই রাজশাহীবাসীর প্রশ্ন, শীত কি এগিয়ে আসছে? আবহাওয়াবিদেরা জানাচ্ছেন, ধীর পায়ে এগিয়ে আসছে শীত। ভোরের কুয়াশা, শিশিরকণা আর গাছ থেকে পাতা খসে পড়া- এরই লক্ষণ। এখন থেকে প্রতিদিন তাপমাত্রা কমবে। এ মাসের শেষের দিকে মৌসুমের শেষ একটা বৃষ্টিও হবে। তারপরই বিদায় নেবে গরম।

রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আশরাফুল আলম ঢাকাটাইমসকে বলেন, উত্তর-পূর্ব দিক থেকে হিমেল বাতাস ঢুকতে শুরু করেছে। এ কারণে অক্টোবরের শুরু থেকেই কমতে শুরু করেছে রাজশাহীর তাপমাত্রা। কয়েক দিন আগের পরপর দুই বৃষ্টি একেবারেই টেনে ধরেছে তাপমাত্রার পারদ। বৃষ্টির আগে গড়ে ৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা থাকতো। এখন তা নেমেছে গড়ে ২৮ ডিগ্রিতে।

আশরাফুল আলম বলেন, এখন হেমন্তকাল। তাই ভোরে সূর্য ওঠার আগে ঘরে গরম, বাইরে ঠান্ডা অনুভূত হবে। নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকেই ‘মিষ্টিশীত’ পড়তে শুরু করবে। ডিসেম্বরে এর তীব্রতা আরও কিছুটা বাড়বে। আর জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে শীত অনুভূত হবে সর্বোচ্চ। মূলত এ দুই মাসকেই এখন শীতকাল হিসেবে ধরা হয়। এখন প্রাক শীত।

তবে সকালে রাজশাহীতে কুয়াশা দেখে মনে হলো, শীত যেন চলেই এসেছে। সকাল ১০টা পর্যন্ত শহরের বিভিন্ন এলাকায় কুয়াশার চাদর দেখা গেল। সূর্য ওঠার পরও এই কুয়াশা দেখা গেছে। বিশেষ করে নদীরপাড়ে কুয়াশার আস্তরণ ছিল সবচেয়ে বেশি। সড়ক-মহাসড়কে গাড়িগুলোকে চলতে দেখা গেল হেডলাইট জ্বালিয়ে। এমনকি ট্রেনও চলেছে একইভাবে। হঠাৎ শীতের এমন আমেজ বেশ উপভোগ করেছেন নগরবাসী।

রাজশাহী জেলা পরিষদের সংরক্ষিত নারী ওয়ার্ডের সদস্য শিউলী রানী সাহা ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘সকালে ঘুম থেকে উঠে মনো হলো, শীত চলে এসেছে। তবে গত এক দশকে শীতের সেই পুরনো চেহারা পাল্টে গেছে। যেমন, আগামী বৃহস্পতিবার কালীপুজো। মাত্র ১০ বছর আগেও এ সময়ে রাতে ঠান্ডা ভাব থাকত। কালীপুজোর রাতে হালকা সোয়েটার পরেছি, এমনও হয়েছে। সেসব আর হয় না। সে অনুযায়ী, শীত দেরিতেই আসছে।’

আবহাওয়াবিদেরা বলছেন, এজন্য দায়ী বর্ষা। গত কয়েক বছরে বর্ষার ভাব-ভঙ্গিও পাল্টে গেছে। এখন বর্ষা আসছেও দেরিতে, যাচ্ছেও দেরিতে। আগের ঋতু-ক্যালেন্ডার মানলে, অক্টোবরের দ্বিতীয় সপ্তাহের গোড়ায় বর্ষার বিদায় নেয়ার কথা। কিন্তু এখন তা হচ্ছে না। এবারও এখন পর্যন্ত বর্ষার বিদায় হয়নি। এ মাসের শেষে আরেকদফা বৃষ্টির পর বিদায় নেবে বর্ষা। তারপর নামবে শীত।

অবশ্য শীত আসতে আরও কিছুদিন বাকি থাকলেও শুরু হয়ে গেছে প্রস্তুতি। শীতের প্রধান আকর্ষণ খেজুরের রস সংগ্রহে জেলার বিভিন্ন এলাকার গাছিরা গাছ প্রস্তুতের কাজ শুরু করে দিয়েছেন। শহরের টিটিসি মোড়ে ভাপাপিঠাও বিক্রি করতে দেখা যাচ্ছে। কাপড় ব্যবসায়ীরাও প্রস্তুতি নিচ্ছেন মোকাম থেকে শীতের পোশাক কিনে আনার। কেননা, আর কয়েক দিন পরেই যে জমবে বিকিকিনি।

(ঢাকাটাইমস/১৭অক্টোবর/আরআর/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :