খালেদাকে গ্রেপ্তারের ‘ভুল’ সরকার করবে না, আশা মওদুদের

প্রকাশ | ১৭ অক্টোবর ২০১৭, ২২:০৭ | আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০১৭, ২২:১৩

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
ফাইল ছবি

আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল বলেই বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া চিকিৎসা শেষ না করেই আগামীকাল বুধবার দেশে ফিরছেন বলে জানিয়েছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। খালেদা জিয়াকে গ্রেপ্তারের মতো ‘ভুল’ সরকার করবে না বলেও মনে করেন তিনি।

মঙ্গলবার বিকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় মওদুদ এসব কথা বলেন। ‘বেগম খালেদা জিয়ার নামে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি-কোন পথে বাংলাদেশ?’ শীর্ষক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল।

পরোয়ানা মাথায় নিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন দেশে প্রত্যাবর্তনের পর কি গ্রেপ্তার হতে পারেন সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মওদুদ বলেন, ‘কিছুই হবে না। উনি দেশে ফিরে আসবেন ইনশাআল্লাহ। এসেই পরদিন আদালতে যাবেন। আইনগত বিষয়গুলো আদালতেই সমাধান করবেন। এ সরকার তাকে কিছুই করবে না।’

মওদুদ বলেন, ‘দেশে এতকিছু ঘটনা-সুপ্রিম কোর্ট ঘটনা, রোহিঙ্গা সমস্যাসহ বিরাট বিরাট সংকট ঢাকার জন্য মূলত একই সঙ্গে খালেদা জিয়ার প্রতি তিনটি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। এটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে হয়েছে বলেই আমি মনে করি। সবাই জানেন এবং আদালত জানে যে, বেগম খালেদা জিয়া অসুস্থ। তিনি চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে গেছেন।’

বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, ‘খালেদা জিয়া ফিরতে দেরি হচ্ছে বলে ওনারা (সরকারি দলের মন্ত্রী-এমপিরা) কত কথাই বলেছেন, যে উনি দেশে ফিরবেন না, ষড়য্ন্ত্র করছেন, এটা করছেন সেটা করছেন। সবকিছুই তো মিথ্যা প্রমাণিত হচ্ছে। কারণ তিনি তো আসছেন।’

সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, ‘তিনি পারলে আজকেই ফিরে আসেন। ওখানে তো গেলেই ডাক্তার দেখানো যায় না যে হুট করে চলে আসা সম্ভব হবে। এটার জন্য সময় লাগে। সে জন্য ওনার ফিরতে একটু দেরি হয়েছে। কিন্তু তিনি আসছেন।’

মওদুদ বলেন, ‘অনেকে জিজ্ঞেস করছেন পরোয়ানা জারি হয়েছে, ওনাকে গ্রেপ্তার করা হবে কি না? আমি বলি, কিছুই হবে না। ওনাকে কেন গ্রেপ্তার করা হবে? উনি তো আদালতকে, আইনকে সম্মান করার জন্যই চিকিৎসার কিছু অংশ বাদ দিয়ে দেশে আসছেন। শুধু আইন আদালতের প্রতি তার সম্মানবোধ আছে বলেই তিনি আসবেন।’

ব্যারিস্টার মওদুদ বলেন, ‘কোর্ট ইচ্ছা করলে ওয়ারেন্ট ইস্যু না করলেও পারত। তিনবারের প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে এত সহজে ওয়ারেন্ট ইস্যু কখনোই স্বভাবিকভাবে হওয়ার কথা নয়। এটি রাজনৈতিক প্রভাবেই হয়েছে।’ তবে খালেদা জিয়া আইনি বিষয়গুলো মোকাবেলা করবেন বলে জানান মওদুদ।

এসময় প্রধান নির্বাচন কমিশনার জিয়াউর রহমান ও বিএনপিকে নিয়ে যে প্রশংসা করেছেন তা সত্য বলে মন্তব্য করেন মওদুদ আহমদ। তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সমালোচনাও সহ্য করে না। আবার কারো প্রশংসা করলেও সহ্য করে না। সিইসি সত্য কথা বলেছেন। তাই তাদের এখন মাথাব্যথা। এখন তারা সিইসিকে নিয়ে বাজে মন্তব্য শুরু করেছেন।’

প্রধান নির্বাচন কমিশনারের পদও প্রধান বিচারপতির পদের মতো মন্তব্য করে মওদুদ বলেন, ‘ইচ্ছা করলেই সরকার চাইলে তাকে অপসারণ করতে পারবে না। এটি সাংবিধানিক পদ। এছাড়া নির্দলীয় সহায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচন কমিশন চাইলেও অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারবে না।’

মওদুদ বলেন, ‘আমরা বলেছি নির্বাচন কমিশনকে সহযোগিতা করব। তবে নির্দলীয় সহায়ক সরকার ছাড়া তাদের পক্ষে অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন করা কোনোভাবেই সম্ভব হবে না।’ এছাড়া প্রধান বিচারপতির সাথে সরকারের আচরণ জাতির জন্য লজ্জার দাবি করে তিনি বলেন, ‘প্রধান বিচারপতি পদটি কোনো ব্যক্তির নয়, এটি একটি প্রতিষ্ঠান।’

সরকার ইচ্ছে করে বিচার বিভাগের স্বাধীনতাকে চুরমার করে দিয়েছে দাবি করে বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, ‘এর ফলে অন্য বিচারপতিদের মনেও অনেক প্রতিক্রিয়া হয়েছে যা তারা দেখাতে পারছেন না।’

(ঢাকাটাইমস/১৭অক্টোবর/বিইউ/জেবি)