বোলিংয়ে ১২ নম্বরে বাংলাদেশ! ‘ভয়াবহ’ অবস্থা সাকিবের

ক্রীড়া প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১৮ অক্টোবর ২০১৭, ০৮:৪২

ওয়ানডে র‌্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশ এখন সাত নম্বরে। পাকিস্তানকে টপকে যখন ছয় নম্বরে ওঠার সম্ভাবনা উঁকি দিচ্ছে তখন বোলিংয়ে বড়ই করুণ চিত্র। এ বছর উইকেট নেওয়ার বিচারে বাংলাদেশ সবচেয়ে খারাপ দল। বাংলাদেশের উপরে আছে আফগানিস্তান, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, এমনকি আয়াল্যান্ড ও আমিরাতের মতো দুর্বল দল। মাশরাফি ও মুস্তাফিজ ছাড়া অন্যদের বোলিং খুবই হতাশাজনক। সবচেয়ে করুণ অবস্থা স্পিনার সাকিবের। এ বছর ওয়ানডেতে তার বোলিং গড় ১১৯.২০!

একসময় বোলিংই সবচেয়ে দুর্বল দিক ছিল বাংলাদেশ দলের। মূল ভরসা ছিল ব্যাটিং। মুস্তাফিজের অভিষেকের পর সেই চিত্র পাল্টে যায় রাতারাতি। অভিজ্ঞ ব্যাটিং লাইন আপের সঙ্গে মুস্তাফিজের বোলিং ক্যারিশমা মিলে বিপজ্জনক দল হয়ে ওঠে বাংলাদেশ। ইনজুরি, অপারেশন ইত্যাদি কারণে মুস্তাফিজের বোলিংয়ে আর আগের মতো ধার নেই। কিছুটা ভাটা পড়েছে তার পারফরম্যান্সে (যদিও গত বছর সেরা বোলার ছিলেন তিনিই)।

অভিজ্ঞতায় বল করে সমীহ আদায় করে নিচ্ছেন মাশরাফি। কিন্তু অন্য বোলার যারা আছেন তাদের অবস্থা বড়ই ভয়াবহ। সব মিলে বোলিং হয়ে উঠেছে বাংলাদেশের দুর্ভাবনার নাম, বিশেষ করে ওয়ানডে ফরম্যাটে।

ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে পাকিস্তান, ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বাংলাদেশ দলের বোলিং ছিল খুবই হতাশার। তবে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে হতাশায় আরেক মাত্রা যোগ হয়েছে। বাংলাদেশের ২৭৮ রান তাড়া করে দশ উইকেটে ম্যাচ জিতে নিয়েছে প্রোটিয়ারা। মানে প্রায় পৌনে তিন শ রান করতে একটা উইকেটও হারাতে হয়নি তাদের।

পেসাররা গতিতে বল করতে পারেন না। ইংল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকার মতো কন্ডিশনে ১৪০ কিলোমিটার গতিতে বল করার দরকার, সেখানে বাংলাদেশি পেসাররা বল করছেন বড়জোর ১৩০ কিলোমিটার গতিতে। গতি কম থাকলে সেটা পুশিয়ে নেওয়া যায় সুয়িং ও নিয়ন্ত্রিত বোলিং দিয়ে। কিন্তু এগুলোও করতে পারছেন না বোলাররা। ফলে সমানে মার খাচ্ছেন তারা।

পেসারদের মতো স্পিনাররাও পুরো ব্যর্থ। দলের এক নম্বর স্পিনার সাকিবের অবস্থা বড়ই করুণ। এ বছর এখন পর্যন্ত ১২ ওয়ানডে ম্যাচে মাত্র চার উইকেট নিয়েছেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। ১১২ বলের বিপরীতে এক উইকেট। বোলিং গড় ১১৯.২০। মানে মানে প্রায় ১২০ রান দিয়ে এক উইকেট। ওভার প্রতি রান ৫.৪৩। এই হলো দলের এক নম্বর স্পিনারের পরিসংখ্যান।

প্রায় একই অবস্থা পেসার রুবেল হোসেনের। ৯ ম্যাচে পাঁচ উইকেট ৭৫.৬০ গড়ে। ওভার প্রতি রান দেন ৫.৯০! তাসকিন সাত ওয়ানডে ম্যাচে পান আট উইকেট। গড় ৩৬.৩৭। ৫.৯৫ ইকোনমি। ইনজুরি থেকে ফিরলেও এ বছরও দলের সেরা বোলার মুস্তাফিজ। ১১ ম্যাচে ১৪ উইকেট নেন তিনি। গড় ৩২.৫৭, ইকোনমি ৫.৪৮। সফলতার বিচারে মুস্তাফিজের পরই আছেন মাশরাফি। ১১ ম্যাচে ৩৭.৯২ গড়ে ৫.৩১ ইকোনমিতে ১৩ উইকেট নেন তিনি।

ওয়ানডে আদর্শ বোলিং গড় ২৫ এর নিচে। অথচ সেরা বোলার মুস্তাফিজের বোলিং গড় ৩২.৫৭। বাংলাদেশে বোলাররা ওভার প্রতি প্রচুর রানও দিয়ে ফেলেছেন উইাকেট না পাওয়ার পাশাপাশি। বোলারদের এই বাজে পরিসংখ্যান দলগত রেকর্ডের দিক দিয়েও খারাপ অবস্থায় ফেলে দিয়েছে।

এ বছর ওয়ানডে ফরম্যাটে উইকেট পাওয়ার বিচারে দল হিসেবে বাংলাদেশ নিমে গেছে আছেন ১২ নম্বরে। বাংলাদেশের বোলারদের চেয়ে বেশি উইকেট পেয়েছে আফগানিস্তান, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, জিম্বাবুয়ে এমনকি আয়ারল্যান্ডের বোলাররাও! এ বছর বাংলাদেশের কোনো বোলার এক ম্যাচে পাঁচ উইকেট নিতে পারেননি। এ বছর ১২ ওয়ানডেতে বাংলাদেশের বোলাররা মোট ৫৭ উইকেট নিয়েছেন। অথচ সাত ম্যাচেই ৫৭ উইকেট নেওয়ার কৃতিত্ব দেখিয়েছেন আরব আমিরাতের বোলাররা।! ১২ ম্যাচে জিম্বাবুয়ের বোলাররা নেন ৮৩ উইকেট। চমক দেখিয়েছে আফগানিস্তান। ১৩ ম্যাচে আফগানরা উইকেট নিয়েছেন ৯৪টি!

(ঢাকাটাইমস/১৮অক্টোবর/ডিএইচ/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

খেলাধুলা বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

খেলাধুলা এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :