সিনহা বাবুকে নিয়ে ভারতীয় মিডিয়ার ভয়ানক হলুদ সাংবাদিকতা

শেখ আদনান ফাহাদ
 | প্রকাশিত : ১৮ অক্টোবর ২০১৭, ১৫:৫২

ভারতীয় মিডিয়ার বাংলাদেশ-বিদ্বেষী সাম্প্রদায়িক চেহারা আবার সামনে চলে আসল। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহাকে নিয়ে মিথ্যা, বানোয়াট এবং সাম্প্রদায়িক সাংবাদিকতার নির্লজ্জ উদাহরণ সৃষ্টি করেছে জিনিউজ নামের একটি চ্যানেল। সুরেন্দ্র কুমার সিনহার বাংলাদেশি পরিচয়কে আড়ালে রেখে শুধু হিন্দু পরিচয়কে প্রধান করে তোলে চ্যানেলটি সাম্প্রদায়িকতাকে নতুন মাত্রা দিয়েছে। এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘হিন্দু হোনেকা সাজা মিলরাহিহে সুরেন্দ্র কুমার সিনহাকো’।

বিতর্কিত প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহাকে নিয়ে বিশেষ এঙ্গেল থেকে বিশেষ কাভারেজ দিয়ে আসছিল জিনিউজ। সর্বশেষ একটি প্যাকেজ প্রতিবেদন সবার চোখ কপালে তোলে দিয়েছে। সিনহাকে নিয়ে সাম্প্রতিককালে হলুদ সাংবাদিকতার সবচেয়ে বড় উদাহরণ সৃষ্টি করেছে ভারতীয় চ্যানেলটি। চিরশত্রু ভারত ও পাকিস্তানের মিডিয়া দুই দেশের নানা ইস্যু নিয়ে মিথ্যা, বানোয়াট ও অতিরঞ্জিত ‘খবর’ ও ছবি প্রচার করে জনমতকে প্রভাবিত করতে চায়। কিন্তু বাংলাদেশের সিনহা ইস্যুতে ভারতের জিনিউজ যেভাবে সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ-প্রসূত ‘সংবাদ’ প্রচার করল তা সহ্য করা যায় না। প্রাণঘাতী তীরে বিষ মিশিয়ে দিলে যেমন ভয়ংকর হয়ে উঠে, জিনিউজের প্যাকেজটিও ছিল তেমন বিষ মেশানো। বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার ওপর ‘খবর’ পরিবেশন করতে গিয়ে এমন সব কথা বলেছে, যা বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় দর্শনকে চরমভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করে।

পাঠক ও বাংলাদেশের নীতি নির্ধারকদের সুবিধার জন্য জিনিউজের মিথ্যাপূর্ণ স্ক্রিপ্টটির সিংহভাগ নিচে তুলে দেয়া হলো। হিন্দিতে বলা স্ক্রিপ্ট বাংলা হরফে দেয়া হলো। ‘আগার কিস দেশ কা চিফ জাস্টিস লাপাত্তা হোযায়ে, অর ইসকা অপহরণ হোযায়ে অর জবরদাস্তি ছুট্টি পার ভেস দিয়া যায়ে, তো ইয়ে কই ছুটিমুটি খবর নেহি হ্যায়। ইসে বহুত গম্ভিরতাসে লে যানা চাহিয়ে। বাংলাদেশকে চিফ জাস্টিস সুরেন্দ্র কুমার সিনহা লাগভাগ তিস দিনোসে গায়েব হে। অর কিসিকো উনকি বারিমে কই জানকারি নেহি হে। ইয়েভিকা জারাহিহে, কে উনে হিন্দু হো জানিকে সাজা মিল রাহি হে, কিউ কে বাংলাদেশ মে, এক হিন্দুকে জিন্দেগি বহুল মুশকিল হোতি হে। রোহিঙ্গা মুসলমানও কে বারোমে বারচারকে রিপোর্টিং কর্নেবালা মিডিয়া ইস খবরকো লে কার বিলকুল শান্ত হে। ইসলিয়ে আজ হামনে ইস খবর কো দুনিয়া কো সামনে লেনা কো ফাসলা কিয়া হে। জি নিউজ হামেশা হার ধরমকি লোগকি হিতসে জুরি আওয়াজ উঠাতাহে। অর আজভি হাম এসাহি কারেঙ্গে। হামনে পেহলেভি কাহিবার বাংলাদেশকি হিন্দুওকি হাল আপ সবকো বাতায়ে হে। কিওকে ও আবাদিহে, জো ভয়ানক অত্যাচার ও জুলম সে-পীড়িত। লেকিন ইনকে শোধ লেনেবালা দুনিয়া মে কই নেহি হে। ইস পুরে মামলাকো সামাঝনে কেলিয়ে ওস তথ্যেয় পার গওর কিজিয়ে। এসা কাহা যারাহাহে সরকারকে খেলাফ ঐতিহাসিক ফেসলা দেনেকে বাদ বাংলাদেশকা চিফ জাস্টিস সুরেন্দ্র কুমার সিনহা কো ছুটটি পার যানে কো মজবুর কিয়াগিয়া হে।

জাস্টিস সিনহানে এসা কোনসা ফেসলা সোনায়া, ইসকে বারেমে হাম আপকো আগে বাতায়েঙ্গে। লেকিন সবসে পেহেলে উনসে জোরেহোয়ে কুছ লেটেস্ট আপডেটস আপকো দেতেহে। বাংলাদেশমে চিফ জাস্টিস সুরেন্দ্র কুমার সিনহাকো ঢুন্ডেকেলিয়ে হাম বহুত কউশিশ কি। লেকিন হামনে যেত্নিভি লোগসে বাত কিই, কিসিনে হামনে নেহি বাতায়া যে ও কাহা পাড়হে। বালকি বহুত সারে লোগতো হামনে ইয়ে কাহা, যে উ দেশ ছুরকার যা চোকেহে, অর ও ইস সময় অস্ট্রেলিয়া মেহে। ইস দওরান হামনে ইস জানকারি মিলিহে জো, ইসকে এক রিশ্তেদার, জো খোদ বাংলাদেশকো সুপ্রিম কোর্ট মে জাজ হে, উনহোনে কালহি ওসকো সাথ মোলাকাত কিয়েথি। হালাকে ইয়ে মোলাকাত কাড়ি নিগরাহিমে হোয়ি হে। অর এসাভি কাহা জারাহিহে জো, জাস্টিস সিনহাকো ওসকে আধিকারিক আবাসপারহি একতারাসে নজরবন্দ কারকে রাক্ষাগায়াহে, অর ইসকি উপর নজর রাক্ষি যারাহাহে। ঢাকামে ভারতকি হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা আকসার জাস্টিস সিনহাকো অফিস ও আধিকারিক আবাসমে যাতে রেহতেহে। লেকিন ওনহোনেভি ৩ অক্টোবর সে আবতাক জাস্টিস এসকে সিনহা কে সাথ মোলাকাত নেহি কিয়া হে, এসা হামকো পাতা চালাহে। হালাকে, আপসে থুরি দের পেহলে, ইংরেজি নিউজ চ্যানেল বিয়ন’নে জাস্টিস এসকে সিনহাকে সাথ বাত কিয়েহে। অর ইস বাতচিত কে দওরান, উনকি আওয়াজ সোনকার হামনে এসা লাগা, যেসে উনকি উপর কই না কই দাবাও জরুর হে , উনকে আওয়াজমে এক তারাকা কম্পন থি, কাহি না কাহি ও ডরি হোয়েথে। আব ইসকে ডরকি আসলি বাজা কিয়া হে, ইস জান্নেসে পেহলে আপকো জাস্টিস সিনহাকো আওয়াজ ধ্যানসে সোনলেনা চাহিয়ে’।

এরপর বিয়ন চ্যানেলের সাথে জাস্টিস সিনহার একটি টেলিফোন কথোপকথন শোনানো হয়। একজন নারী সাংবাদিক জাস্টিস সিনহাকে ফোনে পেয়ে প্রথমে ইংরেজিতে নিজের চ্যানেলের পরিচয় দিয়ে বলেন, তিনি জাস্টিস সিনহার সাথে কথা বলতে চান। জাস্টিস সিনহাকে পরিষ্কার গলায় পাল্টা প্রশ্ন করেন, ‘কী বিষয়ে?’। নারী সাংবাদিক বলেন, বাংলাদেশের সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনের বিষয়ে কথা বলতে চান। উত্তরে জাস্টিস সিনহা বলেন, একজন বিচারপতি হয়ে তিনি এভাবে একটি মিডিয়াকে ইন্টার্ভিউ দিতে পারেন না। নারী সাংবাদিক জিজ্ঞেস করেন, ‘স্যার আপনি এখন অস্ট্রেলিয়াতে, এটা কি সত্য? জবাবে সিনহা বলেন, ‘এখন আমি বাংলাদেশে আছি। তবে এটা সত্য যে, আমি অস্ট্রেলিয়ার ভিসার জন্য আবেদন করেছি। মহামান্য রাষ্ট্রপতির অনুমতি পেলে আমি অস্ট্রেলিয়া যাব’। বিয়নের সাংবাদিক তাঁকে জিজ্ঞেস করে যে,’ আপনি কেন অস্ট্রেলিয়া যাচ্ছেন?’ এর উত্তরে জাস্টিস সিনহা বলেন, ‘সরি, এ বিষয়ে আমি এখন কোনো মন্তব্য করছি না’। নারী সাংবাদিক আবার জিজ্ঞেস করে-‘স্যার আপনি কি আমাদের বলতে পারবেন, ভিসা পেলে আপনি কতদিন অস্ট্রেলিয়ায় থাকবেন?’ এর উত্তরে, সিনহা বলেন, ‘আমি বাংলাদেশের চিফ জাস্টিস। আমাদের চাকরির কিছু নিয়ম কানুন থাকে। এভাবে মিডিয়াতে ইন্টার্ভিউ দেয়া আমাদের নিয়মের বাইরে। তবে আমি এটুকু বলতে পারি, বর্তমান সরকার গণতন্ত্রের প্রতি অঙ্গীকারাবদ্ধ। আমি বিশ্বাস করি, বর্তমান সরকারের আমলে বিচার বিভাগ আরও শক্তিশালী হবে’।

কথোপকথন শেষ হলে জি নিউজের পুরুষ নিউজ প্রেজেন্টার আবার পড়া শুরু করলেন তার মনগড়া স্ক্রিপ্ট। তিনি বলতে শুরু করলেন আবার ‘আগার ইয়ে পুরি বাতচিত আপ ধ্যানসে সোনে তো আপ, আপকো এসা জরুর লাগেগা জো, কুছ না কুছ গড়বর জরুর হে। ও ফোন লাইনপার তো আয়ে, লেকিন এসা লাগরাহা থা, খোলকার আপকি বাথ কেহ নেহিরাহাহে। ও অস্ট্রেলিয়া যানে কি কউশিশ কাররাহেহে। কিসি কি দেশ কা চিফ জাস্টিস অস্ট্রেলিয়া যানা চাহতাহে, লেকিন বাতানা নেহি কারনা চাহতাহে, কিউ যারাহাহে। অর বাদমে উনিনে জো কুছ কাহাহে, উসসেভি এইসা লাগতাহে, যেসে ও কিসি না কিসি দাবাও মে হে, অর ইয়ে এই বাত জানতে হে, ইসকা ফোন টেপ কিয়া যারাহাহে, অর ও নিগ্রানিমে হে। বাংলাদেশ সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বাংলাদেশকে পেহলে হিন্দু চিফ জাস্টিস হে। ইহাপার ইয়ে সামাঝনেবালি বাত হে, যে ও পেহলে চিফ জাস্টিস হে, জো নে হিন্দু হে। ইনিনে সতেরা জানুয়ারি, দু হাজার পনরা কো, বাংলাদেশকো চিফ জাস্টিস কা কার্যালয় সামহালা থা। ইউটিউবের লিংক-https://www.youtube.com/watch?v=geqxJxQyTzw।

প্রতিবেদনের শুরুতে বলা হয়েছে, ‘একটি দেশের প্রধান বিচারপতিকে যদি অপহরণ করা হয়, অথবা গায়েব করে দেয়া হয় তাহলে সেটি নিশ্চয় বড় সংবাদ! সিনহা বাবু নাকি ত্রিশ ধরে গায়েব। আবার ভারতীয় হাইকমিশনার নিয়মিত যাওয়া আসা করলেও কয়েকদিন ধরে নাকি যেতে পারছে না। ভারতের হাইকমিশনার কেন ঘনঘন আমাদের প্রধান বিচারপতির বাসায় যাওয়া আসা করবেন? বাংলাদেশে নাকি হিন্দু কমিউনিটির লোকজন বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে কোনভাবেই বসবাস করতে পারছে না। বাংলাদেশ নিয়ে ভারতীয় মিডিয়া খুবই সিলেক্টিভ সংবাদ প্রচার করে। বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হতে পারে এমন সংবাদ প্রচার করে না বললেই চলে। বাংলাদেশ সম্পর্কে ভারতের জনগণ এবং বিশ্ববাসীর মনে নেতিবাচক ধারনা সৃষ্টি করাই এর মূল উদ্দেশ্য। বাংলাদেশে রাজনৈতিক কোনো অস্থিতিশীলতা কিংবা জঙ্গিবাদী হামলা হলেই কেবল ভারতীয় মিডিয়ায় যা একটু কাভারেজ পাওয়া যায়। এমনকি আমাদের ক্রিকেট নিয়েও ভারতের মিডিয়া অধিকাংশ ক্ষেত্রে শুধু নেতিবাচক খবরের পেছনে ছুটে। আমাদের মিডিয়া যেমন ভারতের খেলোয়াড়, নায়ক-নায়িকার বিশাল কাভারেজ ছাড়া পত্রিকা বের করা বা নিউজ বুলেটিন প্রচার করতে পারে না, ভারতের মিডিয়া তেমন নয়। দিল্লী-মুম্বাই থেকে প্রকাশিত জাতীয় পর্যায়ের পত্রিকায় বাংলাদেশ নিয়ে খবর আশে কালেভদ্রে। ক্রিকেটে বিপিএল এবং আইপিএলের খবরের পরিমাণ এবং ধরন নিয়ে গবেষণা করলেই আমার কথার সত্যতা বেরিয়ে আসবে। এমনকি আনন্দবাজার পত্রিকা প্রায়শ বাংলাদেশ নিয়ে অত্যন্ত আপত্তিকর সংবাদ প্রচার করে। সম্প্রতি একটি প্রতিবেদনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বুয়েটকে সন্ত্রাসের আঁতুড়ঘর বলে বর্ণনা করেছিল আনন্দবাজার।

এর আগে এই আনন্দবাজার বাংলাদেশের জনপ্রিয় ক্রিকেটার সৌম্য সরকারকেও হিন্দু ক্রিকেটার হিসেবে আখ্যা দিয়ে রিপোর্ট করেছিল।

সাম্প্রদায়িকতা আমাদের সমাজে আছে, সত্যি। কিন্তু সেটি কি শুধুই মুসলিমদের ক্ষুদ্র একটি অংশের তরফ থেকে? কদিন আগে আমরা দেখলাম ভারতের বিজেপির আদলে বাংলাদেশেও বিজেপি নামে একটা ‘দল’ এর আত্মপ্রকাশ ঘটেছে। এরা বিজেপির লোগো ও স্লোগান ব্যবহার করছে। হিন্দু মহাজোট প্রকাশ্যে ‘ভারত মাতা কি জয় হো’ বলে স্লোগান দেয়, পবিত্র রথযাত্রায় অস্ত্র নিয়ে হিন্দুদের অংশ নিতে উস্কানি দিয়ে থাকে। হিন্দু মহাজোটের প্রধান গোবিন্দ প্রামাণিক প্রকাশ্যে অন রেকর্ড জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বিদ্বেষমূলক বক্তব্য দেয়। ভারতের অনুকরণে হিন্দুত্ববাদের স্লোগানে এদেশের হিন্দু সমাজকে বাঙালি পরিচয় ভুলিয়ে দিয়ে চরমপন্থী বানাতে চায়।

এর আগে ভারতের ‘গুন্ডা’ সিনেমায় আমাদের জাতির পিতাকে অত্যন্ত অবমাননাকর উপায়ে উপস্থাপন করা হয়েছিল। আমাদের সরকার এই কড়া প্রতিবাদ জানিয়ে সিনেমাটি বাংলাদেশে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। ভারতের জন্ম হয়েছিল ধর্মের ভিত্তিতে। কিন্তু বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে বাঙালি জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে। সংবিধানে সকল ধর্মের মানুষকে সমান অধিকার ও সম্মান দেয়া হয়েছে। এদেশের প্রশাসনসহ সর্বত্র হিন্দুসহ সকল কমিউনিটির মানুষ বড় বড় পজিশনে আছে। বিএনপি-জামাতের আমল হলে একটা কথা ছিল। আওয়ামী লীগের আমলে যদি এত বড় বদনাম শুনতে হয়, তাহলে সরকারের নিশ্চয় গায়ে লাগার কথা। যেখানে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার জন্য সম্প্রতি বিশ্বে চার নম্বর স্থান অর্জন করেছে, যেখানে সংখ্যালঘু মুসলিমদের গরুর মাংস খাওয়ার অপরাধে দিনে দুপুরে মেরে ফেলা হচ্ছে, সে ভারতের একটি টিভি চ্যানেল বাংলাদেশ নিয়ে এমন ঢালাও মিথ্যাচার এবং বদনাম করবে, সেটি মেনে নেয়া যায় না।

লেখক: সহকারী অধ্যাপক, সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

সংবাদটি শেয়ার করুন

মতামত বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :