নতুন যুগে প্রবেশ করেছে চীন: শি জিনপিং
চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বলেছেন, সমাজতন্ত্রের চীনা বৈশিষ্ট্য এক নতুন যুগে প্রবেশ করেছে। সময় এসেছে বিশ্বের কেন্দ্রস্থল দখল করে নেয়ার।
বুধবার রাজধানী বেইজিংয়ে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে শুরু হওয়া চীনের কমিউনিস্ট পার্টির কংগ্রেস উদ্বোধনী ভাষণে জিনপিং এ কথা বলেন।
দুই হাজারেরও বেশি প্রতিনিধির উপস্থিতিতে সপ্তাহব্যাপী কমিউনিস্ট পার্টির কংগ্রেস শুরু হয়েছে। এ সম্মেলনেই ঠিক হবে পরবর্তী মেয়াদে কে চীনের নেতৃত্ব দিবেন এবং দেশটির গতিপথ নির্ধারণ করবেন। প্রতি পাঁচ বছর পর কমিউনিস্ট পার্টি এই সম্মেলনের মাধ্যমেই তাদের পরবর্তী নেতৃত্ব নির্বাচন করে।
বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে বলা হয়, ধারণা করা হচ্ছে, চীনের প্রেসিডেন্ট ও কমিউনিস্ট পার্টির বর্তমান নেতা শি জিনপিং তার পদে অপরিবর্তিত থাকবেন। কংগ্রেস শেষ হওয়ার পর কমিউনিস্ট পার্টি চীনের শীর্ষ সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী পরিষদ পলিটব্যুরো স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্যদের নাম ঘোষণা করবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। এই কমিটিই দেশটি পরিচালনা করবে।
চীনা প্রেসিডেন্ট তার ভাষণে বলেন, চীনের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল৷ দেশে ও দেশের বাইরে অনেক জটিল পরিবর্তন হচ্ছে।’ প্রায় তিন ঘণ্টার বক্তব্যে বলেন তিনি৷
চীনের অর্থনীতিকে আরও উন্মুক্ত করা হবে বলে জানান তিনি৷ দুর্নীতির বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স' নীতিরও ঘোষণা দেন৷ তবে দলের দুর্নীতিগ্রস্ত সদস্যদের যে এতদিন বিচার-বহির্ভূতভাবে আটক ও তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত চালানো হতো তাতে পরিবর্তন আসবে বলে জানান তিনি৷
স্ব-শাসিত তাইওয়ানকে হুমকি দিয়ে চিনপিং বলেন, ‘তাইওয়ানের স্বাধীনতার দাবিতে যে-কোনো বিচ্ছিন্নতাবাদী উদ্যোগকে দমন করার ক্ষমতা চীনের আছে।’
কমিউনিস্ট পার্টির কংগ্রেসে এবার দলের শীর্ষ পর্যায়ের প্রায় ২,৩০০ সদস্য অংশ নিচ্ছেন৷ বেইজিংয়ের ‘গ্রেট ওয়াল অফ দ্য পিপল'-এ কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হচ্ছে৷
কংগ্রেসে দলের শীর্ষ নেতাদের নির্বাচন করা হয়৷ শক্তিশালী ‘পলিটব্যুরো স্ট্যান্ডিং কমিটি'ও গঠন করা হয়৷ প্রেসিডেন্ট শি চিনপিং ও প্রধানমন্ত্রী লি কোচিয়াং নতুন কমিটিতেও ঠাঁই পাবেন বলে ধরে নেয়া হচ্ছে৷ বাকি পাঁচজন পদত্যাগ করতে পারেন৷ কারণ, তাদের বয়স ৬৮-র বেশি হয়ে গেছে, যা অবসর নেয়ার অনানুষ্ঠানিক বয়স৷
তবে এদের মধ্যে ৬৯ বছর বয়সী ওয়াং কিশানকে কমিটিতে রেখে দিতে দলের সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানাতে পারেন প্রেসিডেন্ট জিনপিং৷ কারণ, তার সিদ্ধান্তে শুরু হওয়া দুর্নীতি দমন অভিযান পরিচালনার মূল দায়িত্বে আছেন কিশান৷ এই অভিযানের মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট জিনপিং দলে তার প্রতিদ্বন্দ্বীদের দূরে রাখতে সক্ষম হয়েছেন৷ গত পাঁচ বছরে এই অভিযানের মাধ্যমে কমিউনিস্ট পার্টির প্রায় ১৩ লাখ সদস্যকে শাস্তি দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে৷
আধুনিক চীনের জনক মাও সেতুং-এরপর জিনপিং-কে কমিউনিস্ট পার্টির দলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নেতা মনে করা হচ্ছে৷ সেই প্রভাব কাজে লাগিয়ে তিনি অলিখিত দুই মেয়াদের বেশিও দলের মহাসচিব হিসেবে থেকে যেতে পারেন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা৷ ২০১২ সালের তিনি প্রথম দলের মহাসচিব নির্বাচিত হন৷
(ঢাকাটাইমস/১৮অক্টোবর/এসআই)