দরিদ্র আসমার পরিবারের দায়িত্ব নিলেন ফরিদপুরের ডিসি

সাজ্জাদ হুসাইন বাবু, ফরিদপুর
| আপডেট : ১৯ অক্টোবর ২০১৭, ১৭:৪১ | প্রকাশিত : ১৯ অক্টোবর ২০১৭, ১৭:৩৪

অবশেষে ফরিদপুর শহরের আলীপুর এলাকার বাদাম বিক্রেতা দরিদ্র শিক্ষার্থী আসমার পরিবারের দায়িত্ব নিলেন ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক উম্মে সালমা তানজিয়া। সম্প্রতি ঢাকাটাইমসসহ কয়েকটি গণমাধ্যমে এ বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ পেলে জেলা প্রশাসকের দৃষ্টিতে আসে। তিনি খোঁজ নিতে থাকেন আসমার।

বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা প্রশাসক তার নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের মাধ্যমে এই পরিবারটিকে ডেকে নেন। শিশু আসমাকে মাতৃস্নেহে জড়িয়ে ধরে জেলা প্রশাসক বলেন, মা তুমি কি হতে চাও? আসমার উত্তর আমি ডাক্তার হতে চাই। ইংরেজিতে আমি আসমা বলতে বললে সে সঠিক উত্তর দেয়ায় জেলা প্রশাসক প্রাণজল হাসিতে আসমার সারাশরীরে স্নেহের পরশ বুলিয়ে দেন।

পাশে থাকা আসমার মা বেদেনা বেগমকে তিনি বলেন, মেয়েকে আর বাদাম বিক্রি করতে পাঠানো যাবে না। দেশে এখন পড়াশোনা করতে তেমন অর্থ লাগে না। সরকার নারী শিক্ষার উন্নয়নে অনেক প্রকল্প গ্রহণ করেছে।

আসমার শিশু ভাই মিলনকেও আদর বুলিয়ে দিয়ে জেলা প্রশাসক বলেন, তুমিও স্কুলে যাবে। বড় হতে হলে অনেক পড়াশোনা করতে হবে।

জেলা প্রশাসক তাৎক্ষণিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে ফোন করে নির্দেশ দিলেন, আসমার শিক্ষার উন্নয়নে সার্বিক সহযোগিতা করার এবং আসমার ছোট ভাই চায়ের দোকানে থাকা মিলনকে স্কুলে ভর্তির নির্দেশ দিলেন।

তিনি পরিবারটির দায়িত্ব গ্রহণ করে জানান, প্রতি মাসে আসমার পরিবারকে পাঁচ হাজার টাকা সরকারি অনুদান দেয়া হবে। কিন্তু এই পরিবারের দুটি শিশুকেই পড়াশোনায় মনোযোগী হতে হবে।

জেলা প্রশাসক তাৎক্ষণিক আসমার মায়ের হাতে খাবারের জন্য নগদ দুই হাজার টাকার অনুদান তুলে দেন এবং জীবন সংগ্রামের বাস্তবময় এমন প্রতিবেদন লেখার জন্য সাংবাদিকদের ধন্যবাদ জানান।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ টেলিভিশন ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধি সাজ্জাদ হুসাইন বাবু, সাংবাদিক সংগঠক বিজয় পোদ্দার, ইনডিপেডেন্ট টেলিভিশন ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধি মফিজুর রহমান শিপনসহ অন্যান্য জেলা প্রশাসন কর্মকর্তা।

আসমার পরিবার আবেগাপ্লুত হয়ে বলেন, জীবনের হতাশায় নতুন আলো পেলাম। এখন আর ভাতের কষ্ট, কাপড়ের কষ্ট অভাব বলতে থাকবে না। আসমা ও মিলনকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তুলব। আল্লাহ যেন আমাদের দিকে তাকান।

প্রসঙ্গত, গত রোজার মধ্যে এই পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী আসমার পিতা কাশেম শেখ নিখোঁজ হলে পরিবারটি মানবেতর জীবন শুরু করে। সাংবাদিকদের প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে প্রথম শিবাজী নিকেতন ও পরবর্তীতে পুরো পরিবারের দায়িত্ব নিলেন ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক উম্মে সালমা তানজিয়া।

(ঢাকাটাইমস/১৯অক্টোবর/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :