প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে সৎ ভাইকে হত্যা: গ্রেপ্তার ৫

প্রকাশ | ১৯ অক্টোবর ২০১৭, ২০:৫৬

কুমিল্লা প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

কুমিল্লায় সৎ ভাইকে ডেকে নিয়ে হত্যার করে প্রতিপক্ষকে ফাঁসানোর ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যানসহ পাঁচজনকে  গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হত্যায় অভিযোগকারী প্রতিপক্ষকে ফাঁসানোর জন্য মামলার পাঁয়তারা করছিল। পুলিশের সন্দেহ হলে তাদের আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে অভিযুক্তরা।

নিহত আমির হোসেন কুমিল্লার মেঘনা থানার চালিভাঙ্গা গ্রামের মো. হানিফের ছেলে। আমির হোসেন পেশায় ট্রলারচালক ছিলেন।

পুলিশ জানায়, ১৫ অক্টোবর কুমিল্লার মেঘনা থানার চালিভাঙ্গা গ্রামের মো. হানিফের ছেলে আমির হোসেন নিখোঁজ হয়। একই দিনে তার সৎ ভাই দেলোয়ার হোসেন আহত হয়। পরদিন নিঁখোজ আমির হোসেনের লাশ মেঘনা নদী থেকে উদ্ধার করা হয়। পুলিশ নানাভাবে খোঁজ-খবর নিয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান লতিফ সরকার ও দেলোয়ার হোসেন গংদের থানায় আসতে বলে। এসে প্রতিপক্ষের লোকদের নামে অভিযোগ জানায়। এ সময় আহত সৎ ভাই দেলোয়ারের কথাবার্তায় সন্দেহ হলে পুলিশ তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে। এ সময় তাদের  গ্রেপ্তার করা হয়।

এ বিষয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার শাহ আবিদ হোসেন জানান,  গ্রেপ্তাররা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।

গ্রেপ্তাররা হলেন- নিহতের সৎ ভাই মো. দেলোয়ার হোসেন, চালিভাঙ্গা (ইসলামপুর) গ্রামের মো. মানিক, ৮নং চালিভাঙ্গা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. লতিফ সরকার, মৈশেরচরের মো. নরুল আমিন মেম্বার, চালিভাঙ্গা (মৌলভী বাড়ি) আবুল হাসেমের ছেলে মো. সাইদুল ইসলাম।

সম্মেলনে পুলিশ সুপার শাহ আবিদ হোসেন আরো জানান, ১৫ অক্টোবর রাতে কুমিল্লার মেঘনার চালিভাঙ্গা গ্রামের পাগড়িপাড়া ব্রিজের উপরে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে দেলোয়ার নামে একজন জখম হয়। চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জন্য যায় দেলোয়ার। সংঘর্ষে আমির হোসেন নিখোঁজের সংবাদ পেয়ে সত্যতা যাচাইয়ে আহত দেলোয়ার হোসেনের অবস্থান ও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যায় পুলিশ। কিন্তু পুলিশ হাসপাতালে পায়নি তাকে। এমনকি তার মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে দেলোয়ার একেক সময় একেক তথ্য প্রদান করতে থাকে। পরে গত ১৭ অক্টোবর ভোর ৬টার সময় মেঘনা চালিভাঙ্গা ইউনিয়নের চালিভাঙ্গা গ্রামের পাগাড়িপাড়া খালে ভাসমান অবস্থায় নিখোঁজ আমির হোসেনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। আত্মীয়-স্বজনের মাধ্যমে লাশ শনাক্ত করে জানা যায়, লাশটি আহত দেলোয়ার হোসেনের সৎ ভাই আমির হোসেন।

লাশের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।

পুলিশ সুপার জানান, জেলা গোয়েন্দা শাখায় তাদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকান্ডের মূল রহস্য উদঘাটিত হয়। দেলোয়ার হোসেনের দেয়া তথ্য মতে, তাদের সঙ্গে নিয়ে নারায়ণগঞ্জে অভিযান পরিচালনা করে তাদের সহযোগী আসামি মো. মানিককে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা প্রতিপক্ষের কারণে এলাকায় অবস্থান করতে পারেন না, দীর্ঘদিন যাবত সে এলাকা ছাড়া। তার গ্রুপের লোকজন নিয়ে নারায়ণগঞ্জ বন্দর এলাকায় গোপন বৈঠক করে তার সৎ ভাই আমির হোসেনকে হত্যা এবং তাকে সামান্য আহত করে একটি ঘটনা সাজিয়ে প্রতিপক্ষ সাবেক চেয়ারম্যান হুমায়ূন গ্রুপের বিরুদ্ধে হত্যা মামলার সিদ্ধান্ত নেয়।

(ঢাকাটাইমস/১৯অক্টোবর/প্রতিনিধি/এলএ)