জেগেছে পদ্মা সেতু-৪

পদ্মা সেতু ঘিরে হবে হংকংয়ের আদলে নগর

প্রকাশ | ২০ অক্টোবর ২০১৭, ০৮:০৩

হাবিবুল্লাহ ফাহাদ

সদ্যই বসেছে প্রথম স্প্যান। উত্তাল পদ্মার বুকে এখন সেতু অনেকটাই দৃশ্যমান। এর বাকি কাজ এগিয়ে চলেছে দ্রুত গতিতেই। যা দেখে এসেছে ঢাকাটাইমস টোয়েন্টিফোর ডটকম টিম। মাওয়া ও জাজিরা ঘুরে এসে লিখেছেন হাবিবুল্লাহ ফাহাদ, ছবি তুলেছেন শেখ সাইফ

পদ্মা সেতু ঘিরে হংকংয়ের আদলে নগর গড়ার পরিকল্পনার কথাও বলা হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে। পদ্মাসেতুর দুই পাড়ে আধুনিক শহর, আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টার, আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, সড়ক ও রেল যোগাযোগসহ অত্যাধুনিক উন্নয়ন করার পরিকল্পনা সামনে রেখেই এগিয়ে চলেছে পদ্মা সেতুর কাজ।

সূত্র জানায়, পদ্মাসেতু নির্মাণের পর নদী তীরে সিঙ্গাপুর বা হংকংয়ের আদলে একটি শহর গড়ে তোলা হবে। আন্তর্জাতিক মানের সম্মেলন কেন্দ্র ও বিনোদন কেন্দ্র নির্মাণ এবং বাণিজ্য মেলার আয়োজনসহ ঢাকার কাছের ওই এলাকাকে ‘আধুনিক’ নগরে রূপ দেয়ার বিষয়ে একমত হয়েছে সচিব কমিটি। এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার পরিকল্পনা তুলে ধরে বলেছিলেন, ‘সেখানে আমরা একটা নতুন শহর গড়ে তুলতে পারি। সেখানে একটা ভালো কনভেনশন সেন্টার করা হবে।’

তিনি আরো বলেছিলেন, ‘ওই জায়গাটা জিরো পয়েন্ট থেকে কাছে, মাত্র ২৫ কিলোমিটার। কাজেই ওই জায়গাটায় আমরা নতুন একটা আলাদা শহর গড়ে তুলতে পারি। যে শহরটা হংকং বা ওই ধরনের.... মাথায় রেখে গড়ে তুলতে পারি। কাজেই সেভাবে আমাদের কাজ এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।’
দক্ষিণ চীন সাগর তীরবর্তী শহর হংকং পরিকল্পিত সুসজ্জিত নগরী। চীনের বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চল হংকং পার্ল নদীর তীরে, যার উত্তরে কুতুয়াং প্রদেশ আর তিনদিকে সাগর। পদ্মা সেতু নির্মাণে ওই এলাকায় জমির দাম বেড়ে চর দখলের হিড়িক পড়ার আশঙ্কা জানিয়ে এ বিষয়ে প্রশাসনকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।

২০১৮ সালের মধ্যে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা। নিজস্ব অর্থায়নে এটি এ পর্যন্ত দেশের সবচেয়ে বড় প্রকল্প। এর জন্য খরচ হবে প্রায় ২৮ হাজার কোটি টাকা। এই সেতু হলে ঢাকার সঙ্গে সরাসরি সড়কপথে যুক্ত হবে দক্ষিণাঞ্চল। এই সেতুতে ট্রেনও চলবে। এশিয়ান হাইওয়ের পথ হিসেবেও সেতুটি ব্যবহৃত হবে। মাওয়া থেকে পোস্তগোলা পর্যন্ত চার লেনের সড়ক হবে। রাজধানীর বিজয়নগর থেকে ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনে হবে ১৩ কিলোমিটার দীর্ঘ উড়াল সড়ক।

পদ্মা সেতুর মূল কাজের নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান মো. আবদুল কাদের বলেন, ইতিমধ্যে প্রকল্পের ২৭ শতাংশ কাজ হয়েছে। এর মধ্যে সেতুর কাজের ১৭ দশমিক ২৭ শতাংশ, নদীশাসন কাজের ১৩ শতাংশ এবং উভয় প্রান্তে সংযোগ সড়কের প্রায় ৬০ শতাংশ স¤পন্ন হয়েছে। পদ্মা সেতুতে মোট পিলার থাকবে ৪২টি। এর মধ্যে ৪০টি পিলার থাকবে নদীর ভেতরের অংশে। দুটি থাকবে দুই প্রান্তে সংযোগ সেতুতে। নদীর ভেতরের ৪০টি পিলারের প্রতিটিতে ৬টি করে পাইল করা হবে। এ জন্য মোট ২৪০টি পাইল করতে হবে। সংযোগ সেতুর দুটি পাইলে ১২টি করে ২৪টি পাইল করতে হবে।

[‘জেগেছে পদ্মা সেতু’ শীর্ষক ধারাবাহিক প্রতিবেদন এখানেই শেষ হলো]

ঢাকাটাইমস/২০অক্টোবর/এইচএফ/টিএমএইচ