ঢাবির ‘ঘ’ ইউনিটে প্রশ্ন ফাঁস নিয়ে বিতর্ক

ঢাবি প্রতিনিধি
| আপডেট : ২০ অক্টোবর ২০১৭, ২০:৩৬ | প্রকাশিত : ২০ অক্টোবর ২০১৭, ২০:২৯

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘ ইউনিটের (সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ) ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে বিতর্ক। সুনির্দিষ্ট করে প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগের ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কেউ কিছু বলতে পারেনি। ফলে প্রশ্ন ফাঁসের বিষয়টি নিয়ে জনমনে সৃষ্টি হয়েছে ধোঁয়াশা ।

কারো কারো ভাষ্যমতে, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত আনুমানিক তিনটার দিকে ইংরেজি ও বাংলা বিভাগের বেশ কিছু প্রশ্ন বিভিন্ন মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়, যেগুলোর সঙ্গে হুবহু মিলে যায় পরীক্ষায় আসা বাংলা ও ইংরেজি বিভাগের প্রশ্নের। দেশের একটি প্রধান সংবাদমাধ্যমেও সচিত্র খবর প্রকাশ হয় ইংরেজি অংশের প্রশ্ন ফাঁসের।

আবার কেউ কেউ বলছেন শিক্ষার্থীদের কাছে নয়, কয়েকজন বিশ্ববিদ্যালয়ের রিপোর্টারের কাছে কোনো এক শিক্ষক ই-মেইলের মাধ্যমে প্রশ্নপত্র পাঠিয়েছেন, যার প্রমাণ ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের রিপোর্টারের কাছে আছে। তবে কোন রিপোর্টারের কাছে এই মেইল পাঠানো হয়েছিল তা এখনো পরিষ্কার নয়।

পরিষ্কার নয়, কত টাকার বিনিময়ে কারা শিক্ষার্থীদের মেইলে প্রশ্নপত্র পাঠিয়েছেন।

অনেকেই প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ করলেও পরীক্ষার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্ন ফাঁসের কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি খোদ সাংবাদিকরা।

এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষক প্রশ্ন ফাঁসের খবরটি পরীক্ষা পরবর্তী সময়ে সাংবাদিকদের দেন এবং প্রশ্ন ফাঁসের প্রমাণস্বরূপ কয়েকটি তথ্যও সাংবাদিকদের সামনে উপস্থাপন করেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন শিক্ষক পরীক্ষা শেষে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি যখন পরীক্ষার কেন্দ্রে কর্তব্যরত, তখন আমার এক ছাত্র ১০টা ৪৮ মিনিটে আমাকে বাংলা ও ইংরেজি বিভাগের একটি প্রশ্নপত্র মেসেঞ্জারে পাঠায়, যার সাথে পরীক্ষায় আসা প্রশ্নের হুবুহু মিল পাওয়া যায়।’

তিনি বলেন, ‘যদি প্রশ্নপত্র ফাঁস না হয় তাহলে পরীক্ষা শেষ হওয়ার আগ পযন্ত কারো পক্ষে প্রশ্নপত্র পাওয়া সম্ভব নয়। প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে বিধায় আমি এই প্রশ্ন পরীক্ষা শেষ হওয়ার আগে মেসেঞ্জারে পেয়েছি ।’

তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ এম আমজাদ বিষয়টি মানতে নারাজ। তিনি বলেন, ‘এমন কোনো তথ্য আমাদের কাছ নেই। তাছাড়া এটা কখনো সম্ভব নয়। কারণ আমরা যেভাবে প্রশ্নপত্র তৈরি করি এবং কেন্দ্রগুলোতে পাঠাই, এতে ফাঁস হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।’ তবে ই-মেইলের বিষয়টি তারা খতিয়ে দেখবেন বলে জানান তিনি।

একইভাবে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ভারপ্রাপ্ত ডিন অধ্যাপক সাদেকা হালিম বলেন, ‘বিষয়টি গুজব ছাড়া কিছু নয়। পরীক্ষা খুব সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে।’

সাদেকা হালিম প্রশ্ন তোলেন, ‘যদি রাতে প্রশ্ন ফাঁস হতো তাহলে আমাদের জানানো হলো না কেন?’

তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন প্রশ্ন ফাঁসের তথ্য নাকচ করলেও দেশের কয়েকটি সংবাদমাধ্যম দাবি করছে প্রশ্নের কিছু অংশ বিশেষ করে ইংরেজি বিষয়ের প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে। ওই সংবাদমাধ্যমে কেন্দ্রে সরবরাহ করা প্রশ্ন ও ফাঁস হওয়া প্রশ্নের ছবি দেয়া হয়।

সংবাদে বলা হয়, গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত আড়াইটা থেকে তিনটার মধ্যে কয়েকজনের ই-মেইলে আজকের ভর্তি পরীক্ষার ইংরেজি অংশের ২৪টি প্রশ্ন পাঠানো হয়। আজ পরীক্ষা শুরুর অন্তত আধা ঘণ্টা আগে কয়েকজনের মোবাইলে ওই সব প্রশ্নের উত্তরের একটি লিখিত কপি খুদেবার্তা হিসেবে পাঠানো হয়।

আজ শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘ঘ’ ইউনিটের ওই ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। সমন্বিত এই ইউনিটে সব বিভাগের যোগ্য ও আগ্রহী শিক্ষার্থীরা ভর্তি পরীক্ষা দেয়ার ‘শেষ’ সুযোগ পেয়ে থাকে। ফলে এই ইউনিটে তুলনামূলক কিঠিন প্রতিযোগিতা হয়।

এবার একটি পদের বিপরীতে প্রতিযোগী ছিলেন ৬১ জন। ১ হাজার ৬১০টি আসনের বিপরীতে আবেদন করে ৯৮ হাজার ৫৪ জন শিক্ষার্থী।

(ঢাকাটাইমস/২০অক্টোবর/মোআ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

শিক্ষা বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :