আব্দুর রৌফ চৌধুরীর দশম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২১ অক্টোবর ২০১৭, ০৮:৩২

মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, বঙ্গবন্ধুর স্নেহভাজন, আওয়ামী লীগের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা ও সাবেক মন্ত্রী আব্দুর রৌফ চৌধুরীর দশম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ১৯৩৭ সালের ২৮ ডিসেম্বর দিনাজপুরের বোচাগঞ্জ উপজেলার সেতাবগঞ্জ পৌরসভাধীন ধনতলা চৌধুরীর পরিবারে জন্ম নেন তিনি। ২০০৭ সালের ২১ অক্টোবর তিনি মারা যান।

আব্দুর রৌফ চৌধুরী ছিলেন বৃহত্তর দিনাজপুরের রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়াঙ্গনের সুপরিচিত ব্যক্তিত্ব।

রৌফ চৌধুরীর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আজ শনিবার সকালে প্রয়াতের কবরে রৌফ চৌধুরী ফাউন্ডেশনসহ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠন, বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। এছাড়া দরিদ্রদের মাঝে কাপড় ও খাবার বিতরণ এবং এতিমখানায় দুস্থদের মাঝে খাবার বিতরণ করা হবে। পারিবারিকভাবে এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে কোরআনখানি, আলোচনা সভা ও মিলাদের আয়োজন করেছে।

আব্দুর রৌফ চৌধুরীর ১০ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে গত বৃহস্পতিবার আব্দুর রৌফ চৌধুরী ফাউন্ডেশনের আয়োজনে ও স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) রংপুরের সহযোগিতায় বোচাগঞ্জ উপজেলায় দিনব্যাপী ফ্রি স্বাস্থ্যসেবা ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হয়। আজ শনিবার এসব সংগঠনের আয়োজনে স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে।

আব্দুর রৌফ চৌধুরী ১৯৫২ সালে সিরাজগঞ্জ থেকে মেট্টিকুলেশন, এরপর ঢাকা কলেজ থেকে এইচএসসি ও দিনাজপুর সুরেন্দ্রনাথ কলেজ থেকে বিএ পাস করেন। সিরাজগঞ্জে পড়ার সময়েই তিনি ভাষা আন্দোলনে একজন সক্রিয় সংগঠক ছিলেন এবং এজন্য তাকে কারাবরণ করতে হয়। পরে এইচএসসি পরীক্ষা দেন ঢাকা কলেজ থেকে। সেখানে পড়া অবস্থায় বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে তার পরিচয় হয়। পরে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে দিনাজপুরে ফিরে আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করেন।

বৃহত্তর দিনাজপুর (দিনাজপুর-ঠাকুরগাঁও-পঞ্চগড়) জেলার ছাত্রলীগ ও কৃষক লীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি তিনি সুরেন্দ্রনাথ কলেজের ছাত্র সংসদের নেতৃত্ব দেন। ছিলেন কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতিও। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। বাংলাদেশ সমবায় ফেডারেশন ও বিআরডিবির প্রতিষ্ঠায়ও তার ভূমিকা অনন্য।

১৯৬২ সালে হামিদুর রহমান শিক্ষা কমিশন বিরোধী আন্দোলন, বঙ্গবন্ধুর প্রণীত ৬ দফা আন্দোলন পরবর্তীতে ছাত্র সমাজের ১১ দফাসহ আইয়ুব বিরোধী আন্দোলনে রৌফ চৌধুরী ছিলেন প্রথম কাতারে। স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে পূর্বাঞ্চলীয় জোনে মুজিব সরকারের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ ও কামরুজ্জামানের দূত হিসেবে তিনি কাজ করেছেন। পঁচাত্তরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ বঙ্গবন্ধু পরিবারকে নির্মমভাবে হত্যার প্রতিবাদে আন্দোলন এবং পঁচাত্তর পরবর্তী সামরিক শাসন বিরোধী আন্দোলনে রৌফ চৌধুরীর ভূমিকা অসামান্য। যার ফলে তিনি আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার আস্থাভাজন হয়ে ওঠেন। আশির দশকে তিনি জেলা আওয়ামী লীগের একনাগারে দীর্ঘদিন সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন। ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত এক নাগাড়ে ১৫ বছর এ দায়িত্ব পালন করেছেন।

১৯৮৮ সালে বোচাগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও ১৯৯৬ সালে দিনাজপুর-১ (বীরগঞ্জ-কাহারোল) আসন থেকে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে বাংলাদেশ সরকারের ডাক, তার ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০২ সালে জাতীয় শোক দিবসে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখায় বিএনপি-জামায়াতের হামলায় তিনি গুরুতর আহত হন। পরে অসুস্থাবস্থায় ২০০৭ সালের এ দিনে তার মৃত্যু হয়। মৃত্যুর আগে তিনি স্ত্রী রমিজা বেগম, একমাত্র পুত্র ও পাঁচ কন্যা রেখে যান। তার একমাত্র ছেলে খালিদ মাহমুদ চৌধুরী দিনাজপুর-২ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ও টানা তৃতীয় মেয়াদে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক।

(ঢাকাটাইমস/২১অক্টোবর/টিএ/জেডএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

রাজনীতি এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :