সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী চক্রের পাঁচ সদস্য গ্রেপ্তার
রাজধানীর টিকাটুলীর ইত্তেফাক মোড় থেকে সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী ও চাঁদাবাজ চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
শনিবার রাতে তাদের গ্রেপ্তার করা হলেও রবিবার সন্ধ্যায় সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে র্যাব।
এ সময়ে তাদের কাছ থেকে মালয়েশিয়াগামী যাত্রীর ছিনতাইকৃত পাসপোর্টসহ সাতটি পাসপোর্ট ও জিম্মি করে আদায়কৃত ব্যাংক চেক জব্দ করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন মো. সালাউদ্দিন (৩৯), মো. শামসুল আলম (৩৮), ফরিদ আহাম্মেদ স্বপন (৩৫), মো. জামাল হোসেন (৫৫) এবং নুর ইসলাম (৪৬)।
র্যাবের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১৯ অক্টোবর র্যাব-১০ এর অধিনায়কের কাছে শাহ আলী নামের এক ব্যক্তি অভিযোগ করেন ওইদিন সকাল সোয়া সাতটার দিকে অভিযোগকারী ও তার ভাই মালয়েশিয়াগামী যাত্রী মো. শাহজালালসহ সিএনজি যোগে বিমানবন্দরের উদ্দেশ্যে রওনা হন। রাজধানী সুপার মার্কেটের সামনে দিয়ে টিকাটুলি-মতিঝিল অভিমুখে যাওয়ার সময় রাজধানী সুপার মার্কেটের সামনে খেলনা বাজার দোকানের কাছাকাছি এলে চারজন লোক সিএনজির গতিরোধ করে দাঁড়ায়। এদের মধ্যে দুইজন পিস্তল ও দুইজন ধারালো অস্ত্র তাদের দুই ভাইয়ের গলায় ঠেকিয়ে মালয়েশিয়ার ভিসা যুক্ত মো. শাহজালালের একটি পাসপোর্ট, যার নম্বর বিবি-০১৭৬০৩৬, নগদ ৩৫ হাজার টাকা ও একটি মোবাইল ছিনিয়ে নিয়ে দৌড়ে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় ওইদিন ওয়ারী থানায় একটি মামলা করা হয়। মামলা নম্বর ২২।
র্যাব জানায়, র্যাব-১০ এর একটি দল ছিনতাইকারী চক্রকে আইনের আওতায় আনার জন্য সাঁড়াশি অভিযান শুরু করে। গত ২১ অক্টোবর সন্ধ্যা ছয়টার দিকে ওই মামলার বাদী র্যাবকে জানান, তার ভাইয়ের ছিনতাইকৃত পাসপোর্ট এক লাখ টাকা দিলে ছিনতাইকারীরা ফেরত দেবে বলে জানিয়েছে। র্যাব অভিযোগকারীকে ছিনতাইকারীদের প্রস্তাব গ্রহণের কথা বলে ফাঁদ পেতে আসামিদের গ্রেপ্তার করার জন্য অভিযান পরিচালনা করে। আসামিরা মতিঝিল, ওয়ারীসহ বিভিন্ন এলাকায় ঘুরিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি পরখ করে। এক পর্যায়ে ২১ অক্টোবর রাত অনুমান নয়টার দিকে ইত্তেফাক মোড়ে ফুটপাতে ভিকটিমের কাছ থেকে টাকা নেয়ার সময়ে ছিনতাইকৃত পাসপোর্টসহ অপর ছয় ব্যক্তির ছয়টি পাসপোর্ট, বিভিন্ন যাত্রীদের জিম্মি করে আদায়কৃত অগ্রিম চেকসহ মোট পাঁচ লাখ ১৩ হাজার টাকার চেক, আটটি মোবাইল ফোনসহ আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে চাঁদাবাজ চক্রের অপর আসামি হানিফ, দুলাল, সেলিমসহ অজ্ঞাতনামা দুই থেকে তিনজন আসামি পালিয়ে যায়। আসামিরা অভিনব কায়দায় বিদেশগামী যাত্রীদের ছিনতাইকৃত পাসপোর্ট জিম্মি করে বড় অংকের টাকা নেয়ার মাধ্যমে ফিরিয়ে দেয়। ক্ষেত্র বিশেষে নিরীহ যাত্রীদের কাছ থেকে অগ্রিম চেক নেয়াসহ মুক্তিপণ আদায়ের মাধ্যমে বড় অংকের টাকা নিয়ে থাকে।
ছিনতাইয়ের শিকার যাত্রী, জনগণ, পথচারীরা দুইভাবে হয়রানির শিকার হয়ে থাকে। প্রথমত অভিযোগকারীরা প্রাথমিকভাবে ছিনতাইয়ের শিকার হয়ে নগদ টাকা, পাসপোর্ট, টিকেট, মোবাইল ফোন, স্বর্ণালংকারসহ অনেক মূল্যবান সম্পদ খুইয়ে থাকে।
দ্বিতীয়ত ছিনতাই পরবর্তী সময়ে পাসপোর্ট, মোবাইলসহ ছিনতাইকৃত মূল্যবান ডকুমেন্ট ফেরত দেয়ার আশ্বাস দিয়ে অনেকটা জিম্মি করে নগদ টাকা নিয়ে থাকে। কখনো কখনো ছিনতাইকৃত মালামাল ফেরত দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে নিভৃত স্থানে নিয়ে বড় ধরনের মুক্তিপণ আদায় করে থাকে।
(ঢাকাটাইমস/২২অক্টোবর/এএ/জেবি)