প্লিজ নির্বাচন বয়কট করবেন না, বিএনপিকে কাদের

প্রকাশ | ২৩ অক্টোবর ২০১৭, ১৮:৫৫ | আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০১৭, ১৯:৪১

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
ফাইল ছবি

আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ২৫ আসনও পাবে না- বিএনপি নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন বক্তব্যের কঠোর সমালোচনা করেছে আওয়ামী লীগ। ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের প্রশ্ন রেখেছেন বিএনপি সিট দেয়ার মালিক কি না।

সোমবার বিকালে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন।

নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের দাবি পূরণ না হওয়ায় ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির দশম সংসদ নির্বাচন বর্জন করা বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সম্প্রতি এক আলোচনায় বলেছেন, আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ২৫ আসনও পাবে না।

বিএনপি নেতার এই বক্তব্যের সমালোচনা করে কাদের বলেন, ‘তারা কি ২৫ সিট দেয়ার মালিক? তাদের কি মনে নেই তারা যে বার আমাদের ৩০ সিট দেবে বলছিল, সেইবার তাঁরাই ৩০ সিট পেয়েছিল। ক্ষমতায় কে আসবে তা বাংলাদেশের জনগণই ঠিক করবে। আর কার ভাগ্যে কতটি সিট তা ঠিক করবেন আল্লাহ।’

বিএনপি নেতার বক্তব্যকে অতিরিক্ত আশাবাদ হিসেবে দেখছেন ওবায়দুল কাদের। বলেন, ‘এত অতিরিক্ত আশাবাদের পরও নির্বাচনে আসেন, আমাদের অনুরোধ। প্লিজ নির্বাচন বয়কট করবেন না।’

‘জাতীয় ও গণতন্ত্রের স্বার্থে আমরা চাই সব দল নির্বাচনে আসুক। তাঁরা (বিএনপি) নির্বাচনে আসবেন এটা জনগণেরও প্রত্যাশা, আমাদেরও প্রত্যাশা।’

জাতীয় নির্বাচনে সেনা মোতায়ন প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিলো তখন কি কোন নির্বাচনে সেনাবাহিনীকে নির্বাহী ক্ষমতা দিয়েছিল? নিজে যা চর্চা করে না, সেটা অন্যকে কেন বলবে? আমরা সেনা মোতায়নের বিরুদ্ধে নই। আমাদের বক্তব্য হলো সেনা, প্রয়োজনে মোতায়েন হবে আইন অনুযায়ী। নির্বাচন কমিশন আইনানুযায়ী কোথাও করতে চাইলে তা করতে পারে। আমরা বিরোধিতা করিনি।’

সুষমা স্বরাজের সঙ্গে বৈঠক প্রসঙ্গ

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের সাথে বৈঠকের পরও আশাবাদের কথা বলেছেন মির্জা ফখরুল। তার এমন বক্তব্যকে কীভাবে দেখছেন-জানতে চাইলে কাদের বলেন, তিনি (সুষমা স্বরাজ) বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদের সাথে দেখা করেছেন। বিএনপির সাথে দেখা করে তিনি আগামী নির্বাচনে সবার অংশগ্রহণের আশাবাদের কথা বলেছেন। তাতে ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব আশাবাদী হয়েছেন, আমরাও তো আশাবাদী। আমরাও একটা সবার অংশগ্রহণে গ্রহণযোগ্য নিবার্চন করতে চাই। শেখ হাসিনা বরারবরই এ কথাটা বলে আসছেন।’

‘এখন বিএনপি কেন আশাবাদী? তাঁরা কখনো আশাবাদী, আবার কখনো শ্রাবণের আকাশে কালো মেঘ তাদের মুখমণ্ডলে আসে।’

‘সুষমা স্বরাজ সহায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে এমন কোন আশাবাদ তো দেননি। যতটুক শুনেছি এ প্রশ্ন করার পর ‘তিনি (সুষমা স্বরাজ) বলেছেন, আমাদের দেশে ও অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশে নির্বাচন তো এভাবেই হয়। মানে হলো যারা ক্ষমতাসীন সরকার তাঁরাই সহায়ক সরকারের দায়িত্ব পালন করেন।’

রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে  সুষমা স্বরাজের বক্তব্য বাংলাদেশের অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করবে বলেও মনে করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, তিনি (সুষমা) জোর দিয়ে বলেছেন মিয়ানমার তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতেই হবে। তিনি কোন দ্বিধা না করে বলেছেন কফি আনান কমিশনের সুপারিশমালা বাস্তবায়নে জোর অভিমত ব্যক্ত করেছেন।’

দলের সদস্য সংগ্রহ অভিযান

আওয়ামী লীগের সাম্প্রতিক সদস্য সংগ্রহ অভিযানের অগ্রগতিও জানান ওবায়দুল কাদের। তিনি জানান, দলে নতুন করে ৪২ লক্ষ সদস্য সংগ্রহ হয়েছে। এই সংখ্যা কোটি ছাড়িয়ে যাবে বলেও আশাবাদী দল।

বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মাহবুবউল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, হাছান মাহমুদ, আহমদ হোসেন, মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, বিএম মোজ্জাম্মেল হক, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, এনামুল হক শামীম, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, মুহিবুল হাসান চৌধুরী, আবদুস সোবহান গোলাপ, টিপু মুন্সি, ফরিদুন্নাহার লাইলী, আফজাল হোসেন, শাম্মী আহমেদ, দেলোয়ার হোসেন, অসীম কুমার উকিল, হারুনুর রশীদ, রোকেয়া সুলতানা, আমিনুল ইসলাম আমিন, বিপ্লব বড়ুয়া, কার্যনির্বাহী সদস্য এসএম কামাল হোসেন, গোলাম রাব্বানী চিনু, এবিএম রিয়াজুল কবির কাওছার প্রমুখ।

ঢাকাটাইমস/২৩অক্টোবর/টিএ/ডব্লিউবি