ভোটদানের সময় খুলতে হবে চেহারা

জহির রায়হান, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২৩ অক্টোবর ২০১৭, ২১:৪৬ | প্রকাশিত : ২৩ অক্টোবর ২০১৭, ২০:৫২
ফাইল ছবি

নির্বাচনে ভোট দেয়ার সময় বোরকা পরলেও মুখ খোলা রাখতে হবে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ‘বোরকা পরে জাল ভোট দেয়’ এমন অভিযোগ পাওয়ার পর এই সিদ্ধান্ত নেয় ইসি। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই বিধান কার্যকর হবে।

নারীনেত্রীদের সঙ্গে সংলাপে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ এই কথা জানান। বুধবার নির্বাচন ভবনে এই সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা।

সংলাপে নারীনেত্রীরা বক্তব্য দেয়ার আগে তাদের উদ্দেশে হেলালুদ্দীন বলেন, ‘আমারা এ পর্যন্ত ৪০টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলসহ যাদের সঙ্গে মতবিনিময় করলাম তাদের কয়েকটি প্রস্তাব তুলে নিয়ে আসছি, সেগুলো আপনাদের বলবো।, তিনি বলেন, ‘যখন পুরুষেরা বাড়িতে থাকে না তখন যারা ভোট চাইতে যায় তারা নারীদের ধর্মীয় অনুভূতিকে ব্যবহার করে। অনেকে কোরআন শরিফ হাতে নিয়ে যায়। শপথ গ্রহণ করায় তুমি অমুককে ভোট দিও। আরেকটা হলো বোরকা পরে মুখ ঢেকে গিয়ে ভোট দিচ্ছে। আমরা বলেছি তারা যখন ভোট দেবে তাদের চেহারা খোলা রাখতে হবে।

হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, ‘৩০০টি আসনের মধ্যে ১০০টি আসন নারীদের জন্য সংরক্ষিত রাখতে হবে এমন প্রস্তাব এসেছে। এই ১০০টি আসনে সরাসরি ভোট দিতে হবে। প্রগতিশীল ও বামপন্থী দলগুলোও এ কথা বলেছে।’ তিনি বলেন, ‘ইসির নিবন্ধিত ৪০টি রাজনৈতিক দলের মধ্যে ১৮টি রাজনৈতিক দল কিন্তু ইসলামি রাজনীতি করে। তারা দলে ৩৩ শতাংশ নারীদের অংশগ্রহণের বিরোধিতা করেছে।’

ইসির ভারপ্রাপ্ত সচিব বলেন, ‘গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) বিধান অনুসারে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের কেন্দ্রীয় কমিটিসহ সব পর্যায়ে ৩৩ শতাংশ নারী নেতৃত্ব নিশ্চিত করার বিধান রয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন চালু হয়েছে ২০০৮ সাল থেকে। ইতোমধ্যে আট নয় বছর পার হয়ে গেছে, কিন্তু খুব একটা অগ্রতি হয়নি। এর সময়সীমা আমরা ২০২০ সাল পর্যন্ত দিয়েছি। রাজনৈতিক দলগুলোকে আমরা চিঠিও দিয়েছি। তারা আমাদের সময় চেয়েছে, ৩৩ শতাংশ তারা করবে বলে জানিয়েছে।’

সচিব বলেন, ‘সাতটি দল আমাদের কাছে আরও সময় চেয়েছে। এর ১৮টি ইসলামিক দল বলেছে ৩৩ শতাংশ রাখাই যাবে না বরং নারী শাখা হিসেবে তাদের একটি সংগঠন দ্বার করতে চেয়েছে তারা। তাদের দলে তারা একটি নারী শাখা রাখতে চায়। এ ধরনের কিছু প্রস্তাব আমাদের দিয়েছে।’

আজকের সংলাপে নির্বাচন কমিশন ২২ জন নারীনেত্রীকে আমন্ত্রণ জানালেও অংশগ্রহণ করেন ১৩ জন। তারা হলেন- নারী প্রগতি সংঘের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর রোকেয়া কবির, নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের জেলারেল সেক্রেটারি পারভীন সুলতানা ঝুমা, ফর ইউ ফর এভারের (ফাইফে) প্রেসিডেন্ট রেহানা সিদ্দিকী, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব উইমেন ফর সেলফ এমপাওয়ারমেন্টের (বাউশী) এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর মাহবুবা বেগম নিরু, নারী উদ্যোগ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক মাসহুদা খাতুন শেফালী, ডিজ্যাবল্ড রিহ্যাবিলিটেশন অ্যান্ড রিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ডিআরআরএ) নির্বাহী পরিচালক ফরিদা ইয়াসমিন, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ড. মালেকা বানু, নারী নেত্রী রেখা চৌধুরী, রিনা সেন গুপ্তা, মনসুরা আকতার।

একাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আইন সংস্কার, সীমানা পুনঃনির্ধারণসহ ঘোষিত রোডম্যাপ নিয়ে নির্বাচন কমিশন রাজনৈতিক দলসহ বিভিন্ন অংশীজনদের সঙ্গে সংলাপ করছে। গত ৩১ জুলাই নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনার মধ্যে দিয়ে ইসির এবারের সংলাপ শুরু করে। ১৬ ও ১৭ আগস্ট গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় করে ইসি। এরপর ২৪ আগস্ট থেকে নিবন্ধিত ৪০টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ শুরু করে নির্বাচন কমিশন যা শেষ হয় গত বৃহস্পতিবার। আগামী ২৪ অক্টোবর নির্বাচন বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে সংলাপসূচি নির্ধারণ করেছে ইসি।

(ঢাকাটাইমস/২৩অক্টোবর/জেআর/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :