টঙ্গীতে চলন্ত ট্রেনে বাড়ছে ঢিল আতঙ্ক

ইফতেখার রায়হান, টঙ্গী (গাজীপুর)
 | প্রকাশিত : ২৪ অক্টোবর ২০১৭, ২১:২৭
ফাইল ছবি

দুর্বার গতিতে ভোঁ-ভোঁ শব্দে এক এলাকা থেকে অন্য এলাকা অতিক্রম করছে একটি ট্রেন। হঠাৎ জানালার গ্লাস ভেঙে মাথায় আঘাত হানলো একটি পাথর। এভাবেই প্রতিনিয়ত রেলপথের পথিক পথের ধারে কখনো আহত, কখনো বা ঘুমিয়ে পড়ছে চিরতরে। এসব ঘটনায় বেশ কয়েকজন দুঃস্কৃতিকারীকে আটক করে আদালতে প্রেরণ করা হলেও কমানো যাচ্ছে না ‘ঢিল আতঙ্ক’।

রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, সারাদেশে ২ হাজার ৯০০ কিলোমিটার রেলপথের মধ্যে ঘনবসতিপূর্ণ কয়েকটি স্পটে ট্রেনে ঢিল ছোড়ার ঘটনা ঘটছে। প্রতি মাসে তাদের আক্রমণে ১০-১৫ জন আক্রান্ত হচ্ছেন। এসব ঘটনায় ট্রেনের ভেঙে যাওয়া কাচ মেরামতে রেলের খরচ হচ্ছে কোটি টাকা। সরকার সতর্ক পদক্ষেপ হিসেবে বিশেষ নজরদারির ব্যবস্থা করেছে। পাহারা দিচ্ছে রেলওয়ে পুলিশ। তবুও কমানো যাচ্ছে না ট্রেনের ‘ঢিল আতংক’।

এদিকে দেশের রেলপথে প্রায়ই চলন্ত ট্রেনে পাথর ছুড়ে যাত্রীদের আহত করার দুর্ঘটনা ঘটছে। চলন্ত ট্রেনের জানালায় পাথর ছুঁড়ে মারার ঘটনায় উদ্বিগ্ন সাধারণ যাত্রী ও রেলওয়ের কর্মকর্তারা। গত কয়েক বছরে ট্রেনের ড্রাইভারসহ বেশ কয়েকজন আহত হওয়ায় এই পাথর ছুঁড়ে মারার প্রবণতাটি বিশেষ মনোযোগ আকর্ষণ করেছে। সারাদেশের মতো শিল্পনগরী টঙ্গীতেও এমন ঘটনা ঘটছে অহরহ।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শিল্পনগরী টঙ্গীর রেলপথ ঘেঁষে অসংখ্য ছোট-বড় বস্তি গড়ে উঠেছে। এসব বস্তিতে প্রকাশ্যে মাদক বেচাকেনা হয়। আর নিয়মিত মাদক সেবনের জন্য মাদকসেবীরা বেছে নেয় বিভিন্ন ধরনের অপকর্ম। এসব অপকর্মের অংশ হিসেবে মাদকসেবীরা বিভিন্ন রুটের ট্রেনের যাত্রীদের মোবাইল ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেয়। আবার কেউ কেউ ছিনতাইয়ের অংশ হিসেবে চলন্ত ট্রেনে ঢিল ছুঁড়ে মারে। এছাড়াও টঙ্গীর বনমালা, তিস্তারগেট, রেলওয়ে স্টেশন, মধুমিতা ও বৌ-বাজার এলাকায় বিকালের পর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত আড্ডা দেয় আশপাশের এলাকার বখাটে যুবকরা। এসময় খেলার ছলে চলন্ত ট্রেনে ঢিল ছুড়তে দেখা যায় এসব বখাটে যুবকদের। প্রতিবছর ঈদের ছুটিতে রেলপথে রাজধানী ছাড়েন লাখো মানুষ। ছুটি শেষে আবারো তারা ফিরতে শুরু করে ইট-পাথরের এ শহরে। আসা-যাওয়ার পথে প্রতি বছরই দুর্বৃত্তদের ছোঁড়া ঢিলে ট্রেনের অসংখ্য যাত্রী আক্রান্ত হন। আহত হওয়ার পাশাপাশি ঘটে মৃত্যুর ঘটনাও।

তবে রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির জনবল সংকটের কারণে কার্যকর কোন পদক্ষেপ নেয়া যাচ্ছে না বলে জানান টঙ্গী রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সাইফুল ইসলাম। তিনি বলেন, টঙ্গী রেলওয়ে ফাঁড়ির সদস্য সংখ্যা মাত্র ১৫ জন। প্রতি শিফটে ৪ জন করে পুলিশ কনস্টেবল দায়িত্ব পালন করেন। এই জনবল দিয়ে এতো বড় এলাকায় ট্রেনের ঢিল ছোঁড়া বন্ধ করা অনেকটাই দুঃসাধ্য।

তিনি আরো বলেন, আমাদের কাছে প্রত্যক্ষভাবে কেউ ঢিল ছুঁড়ে মারার অভিযোগ করেনি। তবে আমরা সবসময় সতর্ক রয়েছি। ইতোমধ্যে আমরা বেশ কয়েকজন দুঃস্কৃতিকারীকে আটক করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করেছি। আর ট্রেনে ঢিল ছোঁড়ার জন্য যাত্রীদের সচেতনতার অভাব ও টঙ্গী রেল জংশনের পাশে অবস্থিত বস্তি এবং বস্তির মাদকসেবীদের দায়ী করেন এই কর্মকর্তা।

(ঢাকাটাইমস/২৪অক্টোবর/প্রতিনিধি/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :