টার্কি পুষে ভাগ্য বদলালেন মাগুরার দুলাল

মোখলেছুর রহমান, মাগুরা
 | প্রকাশিত : ২৫ অক্টোবর ২০১৭, ০৮:০৮

টার্কির খামার করে পরিবারের স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে এনেছেন মাগুরার দেলোয়ার হোসেন দুলাল। তার সাফল্যে টার্কি পালনে নতুন সম্ভানার হাতছানি দিয়েছে পুরো এলাকায়। বিদেশি জাতের পাখি হলেও বাংলাদেশের আবহাওয়ায় টার্কি খুব সহজেই খাপ খাওয়াতে পারে। মৃত্যু ঝুঁকি কম হওয়ায় এবং ব্রয়লার মুরগির চেয়ে কম খরচে পালা যায় বলে টার্কি পালন করার মাধ্যমে দেশে আমিষের অভাব যেমন পূরণ করা সম্ভব তেমনি অনেক বেকারও সাবলম্বী হতে পারবেন বলে মনে করে দেলোয়ার হোসেন দুলাল।

দোলোয়ার হোসেন দুলাল বলেন, দীর্ঘ ১০-১২ বছর ধরে আমি বাণিজ্যিকভাবে কবুতর পালন করি। এরই এক পর্যায়ে ২০১৬ সালের মাঝামাঝি সময়ে মাগুরা সদর উপজেলার অবালপুর গ্রামে এক লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা দিয়ে ভারত থেকে আনা দুইশ বাচ্চা নিয়ে টার্কি ফার্ম গড়ে তুলি।

দুলাল জানান, তিন মাস লালন-পালনের পর যা থেকে দুই লক্ষ টাকায় একশ টার্কি বিক্রি করে তিনি মূল পুঁজি ঘরে তোলেন। এর পর তিনি মাত্র ৫০ হাজার টাকা দিয়ে একটি ইনকিউবিটর কিনে তার ফার্মে উৎপাদিত ডিম থেকে বাচ্চা ফুটানো শুরু করেন। গত কয়েক মাসে প্রতিটি দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা দরে একশ বড় টার্কি বিক্রি করেছেন। বর্তমানে তার ফার্মে আরো সাড়ে তিনশ’ বড় টার্কি মুরগি রয়েছে। যার দাম আট থেকে ১০ লাখ টাকা। এছাড়াও তিনি নিয়মিতভাবে ডিম থেকে উৎপাদিত টার্কির বাচ্চা বিক্রি করছেন।

দুলালের সফলতা দেখে এখন মাগুরাসহ আসপাশের জেলার অনেক যুবকই গড়ে তুলছেন টার্কি ফার্ম। তার কাছ থেকেই বাচ্চা কিনে মাগুরা জেলার বিভিন্ন জায়গায় ৪-৫টি ছোট টার্কি ফার্ম গড়ে উঠেছে। শুধু নিজ জেলা মাগুরা নয়, প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে মানুষ আসছেন তার ফার্ম থেকে টার্কির বাচ্চা কিনতে।

দুলাল জানান, সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে তাদের অনেকের পক্ষেই বাণিজ্যিকভিত্তিতে উৎপাদন শুরু করা সম্ভব হবে।

দুলালের মতে, দেশের শিক্ষিত বেকার যুবকরা চাকরি বা বিদেশে পাড়ি না জমিয়ে স্বল্প পুঁজি দিয়ে টার্কি ফার্ম করে, তারা সহজেই স্বাবলম্বী হতে পারেন।

ঝিনাইদহ ও নড়াইল থেকে দুলালের টার্কির ফার্মে আসা দুই উদ্যোক্তা আজিবর ও দাউদ জানান,তারা দুলালের টার্কি পালনের সফলার কথা জানতে পেরে এখান থেকে আগে কিছু বাচ্চা নিয়েছেন। আবার এসেছেন টার্কির বাচ্চা কিনতে। আগামীতে তারাও দুলালের মত বড় টার্কি ফার্ম গড়ে তুলবেন বলে আশা করছেন।

দুলাল বলেন, সরকারিভাবে ট্রেনিং ও রক্ষণা-বেক্ষণের জন্য সরকারি সহায়তা পেলে আরো ব্যাপকভাবে টার্কি পালন করে স্থানীয় বাজারসহ দেশের বাজারে টার্কির মাংস দিয়ে মাংসের ঘাটতি পূরণ সম্ভব।

দুলালের সফলতায় খুশি হয়েছেন জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা কানাই লাল স্বর্ণকারও। তিনি ঢাকাটাইমসকে বলেন, টার্কি পালন করে মাগুরার দেলোয়ার হোসেন দুলাল স্বাবলম্বী হয়েছেন দেখে আমি আনন্দিত। টার্কি পালন অত্যন্ত লাভজনক হওয়ায় তার দেখাদেখি আরো অনেকে ছোট-ছোট ফার্ম গড়ে তুলছেন। এতে করে আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি জেলার মানুষের পুষ্টির যোগান নিশ্চিত করছে।

(ঢাকাটাইমস/২৫অক্টোবর/প্রতিনিধি/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :