হবিগঞ্জ-৪: যেখানে আ.লীগ কখনো হারে না

শামীম চৌধুরী, মাধবপুর (হবিগঞ্জ)
| আপডেট : ২৬ অক্টোবর ২০১৭, ০৯:৪৩ | প্রকাশিত : ২৬ অক্টোবর ২০১৭, ০৯:৩২

আসনটি যেন কেবল আওয়ামী লীগের জন্য সংরক্ষিত। ভোটে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন, কিন্তু জেতেননি এমন উদাহরণ বিরল। আক্ষরিক অর্থেই বলা যায়, মাধবপুরÑচুনারুঘাট নিয়ে গঠিত হবিগঞ্জ-৪ আসনটি আওয়ামী লীগের দুর্গ।

তাই বলে নির্বাচনী মাঠে আওয়ামী লীগ ছাড়া আর কেউ থাকে না তা নয়। বেশ জোরালোভাবেই থাকেন বিএনপি ও জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা।

আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ইতিমধ্যে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির সম্ভাব্য প্রার্থীরা গণসংযোগ শুরু করেছেন। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি থেকে দুজন এবং জাপা থেকে তিনজন তাদের প্রার্থিতা জানান দিয়ে মাঠে কাজ করছেন।

বৃহত্তর সিলেটের প্রবেশদ্বার খ্যাত মাধবপুর আর শিল্প-কারখানা, পাহাড়, জীববৈচিত্র্য ও চা-বাগানে সবুজ গালিচা বিছানো চুনারুঘাটের সর্বত্র এখন প্রার্থীদের শুভেচ্ছা জানানো আর দোয়া চেয়ে পোস্টারে ছেয়ে গেছে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিজেদের প্রার্থিতা ঘোষণা দিচ্ছেন নানাভাবে। আটঘাট বেঁধে প্রচারণায় নেমেছেন অনেকে।

আওয়ামী লীগ তাদের জয়ের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে ব্যাপক উন্নয়ন তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মাহবুব আলী। তিনি গত ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকা- চালিয়ে আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতি সেরে নিচ্ছেন।

সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী প্রয়াত এনামুল হক মোস্তফা শহীদের ছেলে নিজামুল হক মোস্তফা শহীদ রানাও বিভিন্ন দিকে পোস্টার-লিফলেট লাগিয়ে মাঠে রয়েছেন। তবে তাকে সাধারণ ভোটারদের মাঝে যেতে তেমন দেখা যায় না বলে জানান এলাকাবাসী। বাবার ভাবমূর্তি কাজে লাগিয়ে আগামী সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক পাওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন তিনি।

বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে নেতাকর্মীদের আলোচনায় রয়েছেন সাবেক এমপি ও সাবেক ছাত্রনেত্রী কেন্দ্রীয় বিএনপির সরকারবিষয়ক সহ-সম্পাদক শাম্মী আক্তার শিপা ও জেলা বিএনপির সভাপতি শিল্পপতি সৈয়দ মো. ফয়সলের নাম। আলোচনায় আরো আছেন জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিজানুর রহমান চৌধুরী।

তবে রাজনীতিতে বর্তমানে একেবারেই নিষ্ক্রিয় জেলা বিএনপির সভাপতি বিশিষ্ট শিল্পপতি সৈয়দ মোহাম্মদ ফয়সল ইতিপূর্বে একাধিক জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে প্রতিবারই পরাজিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থীর কাছে।

এ আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে মাঠে সক্রিয় দুজন। তবে আলোচনায় আছেন আরো একজন- দলের জেলা আহ্বায়ক শিল্পপতি আতিকুর রহমান আতিক।

জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক আহাদ চৌধুরী শাহীন, জেলা জাপার যুগ্ম আহ্বায়ক বিশিষ্ট শিল্পপতি মো. কাউছার উল-গনির নাম শোনা গেলেও হবিগঞ্জ জেলা আহ্বায়ক আতিকুর রহমান আতিককে এ আসনে প্রার্থী হওয়ার জন্য দাবি জানিয়েছেন দলের তৃণমূল নেতাকর্মীরা।

১৯৭০-এর নির্বাচন থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত এ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বারবার বিজয়ী হয়েছেন। সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী এনামুল হক মোস্তফা শহীদ ছয়বার এ আসনে আওয়ামী লীগের এমপি নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালের নির্বাচনে সাবেক এমপি প্রয়াত মাওলানা আসাদ আলীর ছেলে অ্যাডভোকেট মাহবুব আলীকে মনোনয়ন দেয়া হয়। ১৯৮৬ ও ১৯৮৮ সালে দুবার জাতীয় পার্টির সৈয়দ মোহাম্মদ কায়সার (বর্তমানে যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত এবং ফাঁসির দ-প্রাপ্ত) এ আসনে বিজয়ী হয়ে কৃষি প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।

গত সংসদ নির্বাচনে বিএনপি নির্বাচনে না থাকায় জাপার কায়সারের ছেলে স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ তানভীরের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে এমপি নির্বাচিত হন অ্যাডভোকেট মাহবুব আলী। তিনি এলাকার ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন। নেতাকর্মীসহ সাধারণ ভোটারদের সঙ্গেও সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করে যাচ্ছেন।

চা-শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মাহবুব আলী একজন সৎ মানুষ এবং চা-শ্রমিকদের পাশে থাকেন সব সময়। তিনি সুপ্রিম কোর্টে আইন পেশায় থাকলেও প্রতি সপ্তাহে মাধবপুর চুনারুঘাট নিজ নির্বাচনী এলাকায় আসেন। যোগাযোগ করেন সাধারণ ভোটারদের সঙ্গে। এলাকার সুখ-দুঃখের খোঁজ-খবর রাখেন।

(ঢাকাটাইমস/২৬অক্টোবর/মোআ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

রাজনীতি এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :