দ্বিতীয় ভৈরব রেলসেতুর ফাটল পরিদর্শনে কর্মকর্তারা

রাজীবুর হাসান, ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি
| আপডেট : ২৬ অক্টোবর ২০১৭, ১৫:৫৮ | প্রকাশিত : ২৬ অক্টোবর ২০১৭, ১৫:৫৩

নবনির্মিত দ্বিতীয় ভৈরব রেলসেতুর পিলারের ফাটল পরিদর্শন করেছেন সেতুর প্রকল্প কর্মকর্তা ও রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক (জেনারেল ম্যানেজার) মো. আবদুল হাই।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে তিনি ভৈরবের মেঘনা নদীতে নির্মিত রেলসেতু পরির্দশনে আসেন।

এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন দ্বিতীয় ভৈরব রেলসেতুর ভারতীয় ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের প্রধান বিশেষজ্ঞ (কনসালটেন্ট) বাবু নারায়ণ জা ও বিশেষজ্ঞ (কনসালটেন্ট) ধ্রুব ভট্টাচার্য এবং বাংলাদেশ রেলওয়ের প্রকৌশলী সিরাজ জিন্নাত।

এই সেতুর তিনটি পিলারের বহিঃপাশের কিছু অংশ ভেঙে যাওয়া ও ফাটল সৃষ্টি হওয়ার খবর গতকাল বুধবার ঢাকাটাইমস টোয়েন্টিফোর ডটকমে প্রকাশিত হয়। এর আগে এই প্রতিবেদক সেতুর ফাটল নিয়ে কথা বলেন প্রকল্প পরিচালক আবদুল হাইয়ের সঙ্গে। এরপর তোলপাড় ওঠে সেতুসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মধ্যে।

আজ বেলা ১১টায় ভৈরবে এসে সেতুর ৮, ৯ ও ১০ নম্বর পিলার পরিদর্শন করেন প্রকল্প পরিচালক। তবে তার আগে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন আজ ভোরে ফাটলগুলো সিমেন্ট দিয়ে ঢেকে ফেলেন।

ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আসার আগেই তড়িঘড়ি করে কেন ফাটল মেরামত করা হলো তার জবাব কেউ দিতে পারেননি। কর্মকর্তারা সেতুর পিলার এলাকা পরিদর্শনের সময় ৯ নম্বর পিলারটি বেশি ক্ষতিগ্রস্ত দেখতে পান এবং ৮ ও ১০ নম্বর পিলারে ফাটল না থাকলেও এক পাশ ভেঙে যাওয়া দেখেন।

এ সময় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিশেষজ্ঞরা জানান, সেতুর পিলারের অতিরিক্ত অংশে এই ফাটল হলেও মূল পিলারের কোনো সমস্যা হবে না। সেতুর নির্মাণকাজের মান নিয়ে ওঠা অভিযোগ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিশেষজ্ঞরা অস্বীকার করেন।

প্রকল্প পরিচালক আবদুল হাই বলেন, ‘এই ঘটনার খবর পেয়েই আমি আজ ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসেছি। রেলওয়ে সেতুর বিশেষজ্ঞ ফাটল দেখেছেন।’

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রকল্প পরিচালক বলেন, সেতুতে কেন এই ফাটল হলো তা প্রয়োজনে বুয়েটের বিশেষজ্ঞ দিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে। পিলারের এক পাশ নদীতে চলাচলকারী জাহাজ বা বড় নৌকার ধাক্কায় ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে জানান তিনি।

সেতুর ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার ব্যাপারে প্রকল্প পরিচালক বলেন, ভবিষ্যতে এ ধরনের সমস্যা যাতে না হয় সে জন্য প্রয়োজনে সেতুতে বাতির ব্যবস্থা করা হবে। নদী বিভাগকে জাহাজ ও নৌকা চলাচলে সতর্কতামূলক পরামর্শ দেয়া হবে। তবে ফাটলের কারণে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই বলে জানান তিনি।

ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এরকন ও এফকোন কোম্পানির প্রধান বিশেষজ্ঞ নারায়ণ জা বলেন, সেতুর পিলারে যে ফাটল দেখা যাচ্ছে তা সেতুর কভারের অতিরিক্ত অংশে হয়েছে। এতে মূল পিলারের কোনো ক্ষতি হয়নি। তাই কোনো সমস্যা হবে না। জাহাজ বা নৌকার ধাক্কায় তিনটি পিলারের বহিঃপাশ ভাঙতে পারে বলে তিনি জানান।

নারায়ণ জা দাবি করেন, প্রকল্পের শর্ত অনুযায়ী গুণগত মান ঠিক রেখেই সেতুর নির্মাণকাজ করা হয়েছে। এই সেতু দিয়ে সব সময় ১০০ মাইল গতিতে ট্রেন চলতে পারবে বলে জোর দিয়ে বলেন তিনি।

৯৮৪ মিটার দীর্ঘ এই সেতুর নির্মাণকাজ করে ভারতীয় ইরকন অ্যান্ড এফকনস কোম্পানি। ২০১৩ সালের ডিসেম্বর মাসে এর নির্মাণকাজ শুরু হয়। সেতুর প্রকল্প ব্যয় ধরা হয় ৫৬৭ কোটি টাকা। তিন বছরে সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও পরে প্রকল্পের মেয়াদ একাধিকবার বাড়িয়ে চার বছর করা হয়। নির্মাণকাজ সম্পন্ন করে ইতোমধ্য সেতু দিয়ে পরীক্ষামূলক ট্রেন চালানোর কাজও শেষ হয়েছে।

রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের দেয়া তথ্যমতে, আগামী মাসে সেতুটি উদ্বোধন করার কথা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। এরই মধ্যে কিনা ফাটল আর ভাঙন দেখা দিল সেতুতে।

সেতুটি চালু হলে ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-সিলেট, ঢাকা-নোয়াখালী রেলপথে ট্রেন চলাচলে এক ঘণ্টা সময় কমবে এবং যাত্রীসেবা বাড়বে বলে জানায় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।

(ঢাকাটাইমস/২৬অক্টোবর/প্রতিনিধি/মোআ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :