রাজধানীতে জালিয়াত চক্রের দুই সদস্য গ্রেপ্তার
রাজধানীর ডেমরা এলাকা থেকে জালিয়াত চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। তারা হলেন মো. জাকির হোসেন বাবুল (৩২) ও মো. মাসুদ হাওলাদার (৩৪)।
বৃহস্পতিবার বিকাল থেকে রাত সাড়ে ১২টা পর্যন্ত এ অভিযান পরিচালিত হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় এবং ট্রেনিং সেন্টারের নকল ও জাল সার্টিফিকেট, নকল ডিজিটাল ড্রাইভিং লাইসেন্স, গাড়ির নকল ডিজিটাল নম্বর প্লেট, গাড়ির নকল ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশন কার্ড, নকল রেভিনিউ স্ট্যাম্প এবং উল্লিখিত সরঞ্জামাদি তৈরির বিবিধ যন্ত্রপাতি উদ্ধার করা হয়।
শুক্রবার দুপুরে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখা থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
র্যাব জানায়, দেশে কিছু প্রতারক ও জালিয়াত চক্র বিবিধ সরকারি দলিল, সার্টিফিকেট, স্ট্যাম্প, লাইসেন্স, রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট, বিআরটিএ এর জাল ড্রাইভিং লাইসেন্স এবং ডিজিটাল নম্বর প্লেট তৈরি ও সরবরাহ করে অসৎ উদ্দেশ্যে এগুলো ব্যবহারের সুযোগ করে দিচ্ছে।
র্যাবের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এরই ধারাবাহিকতায় র্যাব-১০ এর একটি আভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার সাড়ে ১২টা থেকে শুরু করে বিকাল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত ডেমরা থানার কোনাপাড়ায় শূন্য টেংরা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে জালিয়াতি ও প্রতারক চক্রের সদস্যদের গ্রেপ্তার করে।
র্যাব জানায়, প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায় আসামি জাকির হোসেন বাবুল ২০০৮ সালে রাজধানীর লক্ষ্মীবাজারের সরকারি সোহরওয়ার্দী কলেজ থেকে ডিগ্রি পাস করেন এবং আসামি মো. মাসুদ ১৯৯৫ সালে নিউ পল্টন লাইন হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ, আজিমপুর থেকে এসএসসি পাস করেন।
আসামি জাকির ২০০৩ সাল থেকে নীলক্ষেত এলাকায় একটি দোকানে সাইনবোর্ড, ব্যানার, সিল ও কম্পিউটার কম্পোজের আড়ালে উল্লিখিত জালিয়াতির ব্যবসা করে আসছিলেন। তার সাথে সহযোগী হিসেবে ২০১৬ সাল থেকে মাসুদ জালিয়াতি কাজে তাকে সহায়তা করে আসছিলেন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত আট থেকে নয় মাস আগে নীলক্ষেত ব্যবসায়ী সমিতির বহুতল বিল্ডিং তৈরির কারণে দোকানটি ভেঙে দিলে এর পর থেকে আসামি জাকির তার নিজ বাসা কোনাপাড়ায় এই কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিলেন। বিভিন্ন প্রযুক্তি ও সরঞ্জামাদি ব্যবহার করে অত্যন্ত সূক্ষ্মভাবে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় এবং ট্রেনিং সেন্টারের নকল ও জাল সার্টিফিকেট, নকল রেভিনিউ স্ট্যাম্প, বিআরটির নকল ড্রাইভিং লাইসেন্স, গাড়ির নকল ডিজিটাল নম্বর প্লেট, গাড়ির নকল ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশন কার্ড ও নকল হলোগ্রাম স্টিকার তৈরি করে আসছিলেন। এ চক্রের অন্যতম সদস্য জনৈক রিপন, আরিফ ও রফিকসহ বেশ কয়েকজন এসব নকল ও জাল সরঞ্জামাদি তাদের কাছ থেকে সংগ্রহপূর্বক দেশের বিভিন্ন স্থানে চাহিদা অনুযায়ী পৌঁছে দিত। গ্রেপ্তারকৃতদের ভাষ্যমতে জাল ও ভুয়া সার্টিফিকেট পাঁচশ থেকে এক হাজার নকল ডিজিটাল লাইসেন্স পাঁচশ টাকা এবং গাড়ির ডিজিটাল নম্বর প্লেট দেড় থেকে দুই হাজার টাকা করে বিক্রয় করে আসছিল।
র্যাবের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রাথমিক অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, বিআরটিএর নকল ড্রাইভিং লাইসেন্স, গাড়ির নকল ডিজিটাল নম্বর প্লেট ও লাইসেন্সসমূহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ব্যবহার করা হয়। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় এবং ট্রেনিং সেন্টারের নকল ও জাল সার্টিফিকেটসমূহ দেশে ও বিদেশে বিভিন্ন চাকরির জন্য আবেদন করার কাজে ব্যবহৃত হয়। পলাতক আসামি রিপন, আরিফ ও রফিকসহ এই চক্রের অন্যান্য সদস্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
(ঢাকাটাইমস/২৭অক্টোবর/এএ/জেবি)