মাদারীপুরে বিপদনাশিনী পূজা

সাগর হোসেন তামিম, মাদারীপুর
 | প্রকাশিত : ২৮ অক্টোবর ২০১৭, ২০:৫২

কারো হাতে ফুল, কারো হাতে মিষ্টি, কারো বা কলসভর্তি জল। এ যেন মহিলাদের মিলন মেলা। জীব জগতের সকল প্রাণিকে রক্ষার জন্যে আয়োজন, এতোটা চোখের জল। ঘটা করে আয়োজন করে তিন দিনব্যাপী বিপদনাশিনী পূজার। ভারতবর্ষে এই পূজার প্রচলন থাকলেও বাংলাদেশের কোন জেলায় এর প্রচলন নেই বললেই চলে। তবে মাদারীপুরে পাঠককান্দি এলাকায় গত নয় বছর ধরে এ পূজা করে আসছেন সনাতন ধর্মাবলম্বী হিন্দু সম্প্রদায়ের নারীরা। যা ইতোমধ্যে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে।

২০০৮ সালে পাঠককান্দি এলাকার বেশ কয়েকজন যুবক আকস্মিকভাবে মারা যান। এতে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তখন মানুষের মুখে মুখে রটে যায় বিপদের নানা কল্প-কাহিনী। এরপর ২০০৯ সালে পাঠককান্দি এলাকার গোপাল চন্দ্র মন্ডলের স্ত্রী অপু রাণী মন্ডল এই পুজার কথা শোনেন। এরপর অপু রাণী মন্ডল এলাকায় কিছু সধবা নারীকে সঙ্গে নিয়ে বাড়ি বাড়ি ভিক্ষা করে ২০০৯ সালে প্রথম মঙ্গলঘাট স্থাপন করে পূজা শুরু করেন। পরের বছর থেকে দেবী মূর্তি তৈরি করে পূজা হতে থাকে। গত ৮ বছরে এ আয়োজন বিশাল আকার ধারণ করেছে। মাতৃমূর্তি চার হাতে দেবী বহন করছেন চক্র, ত্রিশূল, তরবারি ও শঙ্খ। বিপদত্তারিণীর বাহন হচ্ছে সিংহ। এভাবেই প্রতি বছর এই পূজার আয়োজন করা হয়।

শনিবার থেকে শুরু হয়ে চলবে আরো তিন দিন।

১৪ প্রকার ফল দিয়ে পূজার ডালা সাজানো হয়। বেলা ১২টার দিকে মূল পূজা শুরু করেন পুরোহিত। পূজা শেষে দেশ, জাতি তথা জীব জগতের কল্যাণ ও সকল অশুভ শক্তির বিনাশ এবং পাপ-তাপ হরণকল্পে যজ্ঞ অনুষ্ঠিত হয়। এতে হাজারো নারী-পুরুষ অংশ নেন। তারা এই আয়োজনকে ধরে রাখার আহবান ভক্তদের। নারীদের আয়োজন হলেও পুরুষ ভক্তরা পূজায় অংশ নিয়ে সকলের মঙ্গল কামনা করেন।

এ বছর আট মণ চাল-ডালের খিচুরি প্রসাদ রান্না করে ভক্তদের মাঝে বিলানো হয়।

আয়োজনে সার্বিক নিরাপত্তার জন্যে জেলা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে নেয়া হয় নিরাপত্তাব্যবস্থা। জীব জগতের প্রাণিকুলকে রক্ষার জন্যে নারীদের এই আয়োজনকে সাধুবাদ জানিয়েছেন জাতি ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলেই।

(ঢাকাটাইমস/২৮অক্টোবর/প্রতিনিধি/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :