শেরপুরে বালিকার আত্মহত্যার কারণ নিয়ে ধোঁয়াশা

শেরপুর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২৯ অক্টোবর ২০১৭, ১৪:১০ | প্রকাশিত : ২৯ অক্টোবর ২০১৭, ১৩:৫৭

শেরপুরে এক বালিকা গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যার কারণ নিয়ে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে। ওই বালিকার নাম কণিকা (১১)।

স্থানীয়রা বলছে, অভাব আর মানসিক অবসাদের কারণে ওই বালিকা আত্মহত্যা করেছে।

তবে মেয়েটির পিতার দাবি, ভাতের অভাবেই তার মেয়ে আত্মহননের পথ বেছে নেয়। গণমাধ্যমে এ নিয়ে খবর প্রকাশিত হলে রবিবার জেলা প্রশাসন গঠন করে তদন্ত কমিটি।

স্থানীয় আফজাল, হাফিজ, রাহেলাসহ আরও অনেকেই জানান, কণিকা শেরপুর সদর উপজেলার গাজীরখামার ইউনিয়নের চককুমড়ি গ্রামের কোরবান আলীর মেয়ে। কোরবান আলী স্থানীয় বিভিন্ন জলাশয়ে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করতেন। নিজের অসুস্থতার কারণে কোন ভারি কাজ করতে পারতেন না। তাই সংসারে অভাব লেগেই থাকত। তার প্রথম স্ত্রী প্রায় আট বছর আগে দুই মেয়ে ও এক ছেলে রেখে মারা যান। ওই সংসারে কনিকা ছিল দ্বিতীয় সন্তান। আর বড় মেয়ের বিয়ে হয়ে যাওয়ায় তিনি চলে যান স্বামীর বাড়ি। পরে সংসার সামলাতে কোরবান আলী আরেকটি বিয়ে করলেও সেও চলে যায় বাপের বাড়ি। তাই সংসারের দায়িত্ব পড়ে শিশু কণিকার ওপর। একদিকে অভাব আর অন্যদিকে সংসারের সব দায়িত্ব। সব মিলে মানসিক চাপ সইতে না পেরে গেল ২৬ অক্টোবর নিজ ঘরের আড়ার সাথে ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়।

কণিকার নানী আছিয়া খাতুন বলেন, অন্যের দেয়া পুরনো কাপড়-চোপড় পরে বড় হয়েছে কণিকা। ও কারো কাছে কিছু চাইত না। কেউ কিছু দিতে চাইলেও সে নিত না।

কোরবান আলী বলেন, আমি আয় করতে পারি না। অসুস্থ হয়ে পড়ে থাকি। মেয়েকে কাপড় দিতে পারি না, খাবার দিতে পারি না। এ কারণে কণিকা আত্মহত্যা করেছে।

এ বিষয়ে গাজীরখামার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আউলাদুল ইসলাম আওলাদ বলেন, শিশু কণিকা হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান এ কথা সত্য। কিন্তু ভাতের অভাবে সে আত্মহত্যা করেছে- এমন তথ্যটি অতিরঞ্জিত ও উদ্দেশ্যমূলক। এটি স্থানীয় পর্যায়ের জনপ্রতিনিধির পাশাপাশি সরকারবিরোধী অসন্তোষ সৃষ্টির অপপ্রয়াস ছাড়া কিছু নয়।

তিনি দাবি করেন, ঘটনার দিন সকালেও কোরবানের সংসারে রান্না করে খাওয়া-দাওয়া হয়েছে। প্রতিবেশীরাও তাদের প্রতি সদয় রয়েছেন।

সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা ইউপি চেয়ারম্যান ফোরামের সভাপতি রফিকুল ইসলাম বিষয়টির তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।

এ সম্পর্কে শেরপুর সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আমিনুল ইসলাম বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুরে বসতঘরে ঝুলন্ত অবস্থায় ১১ বছর বয়সী এক শিশুর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তবে ওইসময় ভাতের অভাবে বা অভাবের তাড়নায় কণিকা আত্মহত্যা করেছে- এমন কোন তথ্য শোনা যায়নি।

দেশে ভাতের অভাবে কারো মৃত্যু বা আত্মহত্যা করার মত অবস্থা নেই। তবে এ বিষয়ে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাবিবুর রহমানকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তদন্ত শেষেই প্রকৃত ঘটনা বের হবে। এটা সরকারের বিরুদ্ধে কোন ষড়যন্ত্র কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক ড. মল্লিক আনোয়ার হোসেন।

(ঢাকাটাইমস/২৯অক্টোবর/প্রতিনিধি/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :