মেসি-নেইমারদের জন্য জিদানের সতর্কবার্তা

জহির উদ্দিন মিশু
| আপডেট : ৩০ অক্টোবর ২০১৭, ১৪:৪৯ | প্রকাশিত : ৩০ অক্টোবর ২০১৭, ১৪:০১

খেলোয়াড় হিসেবে তিনি ছিলেন সফল, কোচ হয়েও সে স্বাক্ষর রাখছেন। ফুটবলকে বিদায় জানানোর সময় তার নামের পাশে ছিল অসংখ্য মুকুট। ফুটবলার থেকে যখন গুরুর আসনে বসলেন তখনও দেখা পাচ্ছেন একের পর এক অর্জনের। বলছিলাম রিয়াল মাদ্রিদের ফরাসি কোচ জিনেদিন জিদানের কথা। কয়েকদিন আগে জিদানের শোকসে জমা পড়ল আরেকটি মুকুট। গত ২৩ অক্টোবর লন্ডনের পলেডিয়াম থিয়েটারে চেলসির আন্তোনিও কোন্তে আর জুভেন্টাসের ম্যাসিমিলিয়ানো অ্যালেগ্রিকে পেছনে ফেলে সেরা কোচের খেতাব লুফে নেন রোনালদো-ইসকোদের প্রধান শিক্ষক জিদান।

২০১৬/২০১৭, জিদানের কাছে স্বপ্নের মতো একটা মৌসুম। এই সময়টায় রিয়ালকে দুহাত ভরে দিয়েছেন জিদান। ফরাসি বসের অধীনে টানা দ্বিতীয়বারের মতো চ্যাম্পিয়নস লিগের শিরোপা উঁচিয়ে ধরে লস ব্লাঙ্কোসরা। তাঁর অধীনে চ্যাম্পিয়নস লিগের ইতিহাসে প্রথম ক্লাব হিসেবে শিরোপা ধরে রাখার পাশাপাশি পাঁচ বছরের মধ্যে প্রথম লা লিগা চ্যাম্পিয়নও হয় স্পেনের ক্লাবটি। এ ছাড়া গত বছরের শেষদিকে ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের শিরোপাতে চুমু খান রিয়াল বস। তাক লাগানো এমন সাফল্যের কারিগর জিনেদিন জিদান, কথা বলেছেন ‘ফিফা ডট কম’ এর সঙ্গে। শুনিয়েছেন সফলতার গল্প।

প্রশ্ন: জিদান, গত বছর আপনি আমাদের কাছে বলেছিলেন, কোচ হিসেবে খুব বেশি সফলতা আশা করেন না, কিন্তু দুই বছর পার হতে না হতেই ফিফার বর্ষসেরা পুরস্কারে নাম উঠল আপনার। এটা কী আপনাকে খানিকটা বিস্মিত করেছে?

জিদান: আমি জানি না, যদিও এটা ছিল প্রত্যাশার চেয়েও বেশি কিছু। যা-ই হোক এটা আমার কাছে প্রেরণাদায়ক। এমন অর্জন আমি বয়ে বেড়াতে ভালোবাসি। পাশাপাশি একজন কোচ হিসেবে উন্নতির ধারাটা অব্যাহত রাখার চেষ্টা করি, যেটা মোটেও সহজ নয়। দ্বিতীয় বছরের মাথায় এমন খেতাব পেয়ে আমি সত্যিই আনন্দিত। আমার কাজ নিয়ে আমি সন্তুষ্ট।

প্রশ্ন: গত বছর আপনি যে ভাবে পার করেছিলেন, ২০১৭ সালে সেটা ঠিকঠাক হচ্ছে?

জিদান: যখন আপনি প্রথম বছর কোনো অর্জন ঘরে তুলবেন, ঠিক পরের বছর সেটা করা কঠিন হয়ে যাবে। আমি ভালো করে জানি, যে ক্লাবে আমি আছি, তারা সব সময় শিরোপা জয়ের কথাই ভাবে। আমি এও জানি, আমার বেশ কিছু দুর্দান্ত ফুটবলার আছে। তারপরও শিরোপা জেতা চাট্টিখানি কথা নয়। সেটা যদি হয় চ্যাম্পিয়নস লিগ, তাহলে তো কথাই নেই। সফলতা আমাদের অর্জন করে নিতে হবে, যেটা কখনোই ডালভাত নয়।

প্রশ্ন: এ বছর সে সব সফলতা ছোঁয়ার জন্য আপনি কী ফর্মুলা অনুসরণ করবেন।

জিদান: আমি সবসময় এটা বিশ্বাস করি যে, আমরা একটা ট্রফি জয়ের পথেই আছি। যেটা আমাকে, আমার স্টাফদের এবং আমার ফুটবলারদের প্রেরণা দেয়। কারণ এটা ভুললে চলবে না, প্রতি সপ্তাহে বহু প্রতিপক্ষের সঙ্গে লড়তে হয়। জয়ের প্রতি আত্মবিশ্বাস বড় একটা ব্যাপার, যেটা খেলায় এগিয়ে যাওয়ার অন্যতম শক্তি।

প্রশ্ন: গত বছরের স্মরণীয় একটা মুহূর্তের কথা বলবেন?

জিদান: অসাধারণ একটা বছর কাটিয়েছি। যেটা সারাজীবন আমার মনে থাকবে। তবে নির্দিষ্ট করে বললে আমার কাছে লা লিগার ট্রফিটাই ছিল সবচেয়ে প্রিয়। ৩৮টা ম্যাচ কম কিন্তু নয়, লা লিগার মুকুট জয় খুবই কঠিন।

প্রশ্ন: বর্তমান সময়টা আপনার দারুণ যাচ্ছে, এ ভাবে অনেকদিন চলতে পারে। আপনার কী মনে হয়না, একটা সময় এমন সফলতার সুতোয় টান লাগতে পারে।

জিদান: অবশ্যই। জীবনে উত্থান-পতন থাকবেই। আপনাকে জানতে হবে দুঃসময় কিভাবে পার করতে হয়। আপনি যখন সাফল্যে উড়বেন, আপনার চেষ্টা থাকবে সেই সুসময়টা ধরে রাখা। আমি খুব ভালো করেই জানি, রিয়ালে আমার এই সুখের দিন একদিন শেষ হবেই। আমাকে বিদায় নিতেই হবে। আমি সে জন্য প্রস্তুত।

প্রশ্ন: স্প্যানিশ লিগ, চ্যাম্পিয়নস লিগের ‘ডাবল’ আর ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের মুকুট জিতে ১৬/১৭ মৌসুমটা শেষ করেছেন, সে সব অর্জন আপনাকে নাড়া দেয়?

জিদান: হ্যাঁ, এ ব্যাপারে আমি ভিন্ন দলের লোক। আমি কখনো ভাবিনা যে প্লেয়ার হিসেবে আমার অর্জন অনেক হয়েছে। কোচ হওয়ার পরও তাই। ওই ধারণাটা এখনো বহাল আছে। যাক অন্যদিকে আসি, আমার অভিজ্ঞতা আরও বাড়ছে, আমার ছাত্ররা আরও পরিপক্ব হচ্ছে, দৃষ্টিভঙ্গিও আরও ধারালো হচ্ছে। আসলে আমি আমার কাজটা উপভোগ করি।

প্রশ্ন: কোচ হিসেবে আপনার দুর্দান্ত একটা গুণ আছে, আপনি ড্রেসিংরুমে সব তারকাদের ভালোভাবে দেখভাল করতে পারেন। এটার পেছনের রহস্যটা যদি বলতেন?

জিদান: সাবেক একজন ফুটবলার হিসেবে আমিও ড্রেসিংরুমের নাড়ি-নক্ষত্র জানি। ওই অভিজ্ঞতা আমাকে সাহায্য করে। আর এটাই আমার প্রধান সূত্র। পেশার খাতিরে আর ফুটবলের প্রতি দরদ দিয়েই তারকা খেলোয়াড়দের দেখে রাখা এবং তাদের সঠিকভাবে পরিচালনা করা যায়।

প্রশ্ন: খেলোয়াড়ি জীবনে আপনি ছিলেন রেকর্ডের বরপুত্র। আমার নামডাক শুনেই কী খেলোয়াড়রা আপনাকে এতটা শ্রদ্ধা করে?

জিদান: আমি মনে করি, একজন কোচের জন্য অনেক অনেক শিরোপা জয়ের চেয়েও খেলোয়াড়দের বিশ্বাস অর্জন করাটা বেশী গুরুত্বপূর্ণ। আমি ভাগ্যবান যে, অনুশীলনে আমি যা বলি, রিয়ালের খেলোয়াড়েরা আমার সেই পরামর্শ বিশ্বস্ততার সঙ্গে মেনে নেয় এবং মাঠে সেভাবেই কাজ করে। যদি খেলোয়াড়েরা আপনার প্রতি বিশ্বস্ত হয়, আপনি অনেক দূর যেতে পারবেন।’

প্রশ্ন: ২০১৮ সালে রাশিয়া বিশ্বকাপ জয়ে ফ্রান্সের সম্ভাবনা কেমন দেখছেন?

জিদান: হ্যাঁ, ফ্রান্স বর্তমানে দুরন্ত একটা দল। যে দলে বেশ কয়েকজন তরুণ ট্যালেন্ট আছে। যারা কি-না রাশিয়ায় প্রতিপক্ষের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে।

প্রশ্ন: আপনি তাদের খেলা দেখতে পছন্দ করেন?

জিদান: সাবেক ফুটবলার হিসেবে প্রথমত ও মনেপ্রাণে আমি ফ্রান্সের একজন সমর্থক। আমি অবশ্যই ফ্রান্সকে ভালোবাসি। এটা এমন একটা দল, যেটা বছরের পর বছর প্রতিভাবান তরুণ খেলোয়াড়দের নিয়ে এগোচ্ছে। আমি ব্লুজদের আলোকিত ভবিষ্যতের সুবাস পাচ্ছি।

প্রশ্ন: কোন দলগুলো বিশ্বকাপে ফ্রান্সের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ানোর যোগ্যতা রাখে?

জিদান: অনেকই তো আছে, ব্রাজিল, জার্মান, আর্জেন্টিনা, স্পেন...। বড় আসরে যারা সবসময় লড়াই করে।

(ঢাকাটাইমস/৩০অক্টোবর/জেইউএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

খেলাধুলা বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

খেলাধুলা এর সর্বশেষ

জিম্বাবুয়ে সিরিজের শুরুতে মুস্তাফিজের খেলা নিয়ে যা জানাল বিসিবি

যে কারণে বাংলাদেশের প্রাথমিক দলে নেই সাকিব-মুস্তাফিজ

আইসিসির আন্তর্জাতিক প্যানেলে যুক্ত হলেন বাংলাদেশি আম্পায়ার মোর্শেদ

বড় চমক রেখে জিম্বাবুয়ে সিরিজের জন্য বাংলাদেশের প্রাথমিক দল ঘোষণা

টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে সিলেটে পৌঁছেছে হারমানপ্রীত-স্মৃতি মানদানারা

তীব্র গরমে ফ্লাডলাইটে ফুটবল ম্যাচের সিদ্ধান্ত

জাতীয় দলে ফেরা নিয়ে নিজের সিদ্ধান্তের কথা জানালেন সুনীল নারিন

 হাথুরুর সঙ্গে নির্বাচকদের বৈঠক সম্পন্ন, আলোচনা হলো যা নিয়ে

মুস্তাফিজের আইপিএল ছাড়া নিয়ে যা বললেন চেন্নাই কোচ

ঢাকায় পৌঁছেছেন টাইগারদের নতুন কোচ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :