বনানীর হোটেলে ধর্ষণ মামলার বাদীকে আংশিক জেরা

বনানীর রেইনট্রি হোটেলে দুই শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের মামলায় বাদী ধর্ষিতাকে আংশিক জেরার পর আগামী ১৪ নভেম্বর পরবর্তী জেরার দিন ধার্য করেছে ট্রাইব্যুনাল।

মঙ্গলবার ঢাকার ২ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. সফিউল আজম ওই জেরা রেকর্ড করার পর জেরার নতুন দিন ঠিক করেন।

এদিন মামলাটির অন্যতম আসামি নাঈম আশরাফ ও সাফাত আহমদের পক্ষে আইনজীবী মোশারফ হোসেন কাজল এবং এবিএম খায়রুল ইসলাম লিটন প্রায় দেড় ঘণ্টাব্যাপী এই জেরা করেন।

এদিকে এদিন বেলা ১টার দিকে মামলাটিতে জেরা শুরু হয়। প্রায় ৩০ মিনিট জেরা হওয়ার পর আসামি পক্ষের আইনজীবী কাজী নজিব উল্লাহ হিরু আদালতে উপস্থিত কয়েকজন সাংবাদিকের থাকা নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করেন। ক্যামেরা ট্রায়ালে এই মামলার বিচারকালীন সাংবাদিক থাকতে পারবে না জানালে বিচারক সাংবাদিকদের বের হয়ে যেতে বললে সাংবাদিকরা বের হয়ে যান।

অন্যদিকে এ মামলায় ভিকটিম পক্ষে আইন সহায়তাকারী মহিলা আইনজীবী সমিতির আইনজীবী ফাহমিদা আক্তার শিরিন বলেন, মঙ্গলবার জেরার সময় আইনজীবীদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে বাদিনী অনেক ভয় পেয়েছেন। তবে আমরা তাকে মানসিক শক্তি যুগিয়েছি।

সাক্ষ্য গ্রহণকালে আসামি আপন জুয়েলার্সের কর্নধার দিলদার আহমেদের ছেলে সাফাত আহমেদ, তার দেহরক্ষী রহমত আলী ও গাড়িচালক বিল্লাল হোসেন, বন্ধু সাদমান সাকিব ও নাঈম আশরাফ ওরফে এইচএম হালিমকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়।

এর আগে গত ১৬ অক্টোবর এ সাক্ষীর জবানবন্দি গ্রহণ করে জেরার জন্য ৩১ অক্টোবর দিন ধার্য করেন।

এরও আগে গত ১৩ জুলাই একই ট্রাইব্যুনাল আসামিদের অব্যাহতির আবেদন নামঞ্জুর করে অভিযোগ গঠন করে।

গত ৭ জুন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশের উইমেন সাপোর্ট অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন ডিভিশনের (ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার) পরিদর্শক ইসমত আরা এমি আদালতে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন।

অভিযোগপত্রে আসামি সাফাত আহমেদ ও নাঈম আশরাফ ওরফে এইচএম হালিমের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯(১) ধারায় সরাসরি ধর্ষণের অভিযোগ করা হয়েছে। অপর আসামি সাফাত আহমেদের বন্ধু সাদমান সাকিব, দেহরক্ষী রহমত আলী ও গাড়িচালক বিল্লাল হোসনের বিরুদ্ধে ওই আইনের ৩০ ধারায় ধর্ষণের সহযোগিতার অভিযোগ করা হয়েছে।

গত ২৮ মার্চ জন্মদিনের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানিয়ে অস্ত্রের মুখে ঢাকার বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই দুই ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে ৬ মে বনানী থানায় পাঁচ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়।

মামলায় বলা হয়, আসামিদের মধ্যে সাফাত ও নাঈম দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং তারা ওই দুই ধর্ষিতা ছাত্রীর বন্ধু। গত ২৮ মার্চ ঘটনার দিন আসামি সাফাতের জন্মদিনের অনুষ্ঠানের যান ওই দুই ছাত্রী। এরপর ওইদিন তাদের রাত ৯টা থেকে পরদিন সকাল ১০টা পর্যন্ত আসামিরা আটকে রাখেন। অস্ত্র দেখিয়ে ভয়-ভীতি প্রদর্শন ও অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন। জোর করে একটি কক্ষে নিয়ে যায় আসামিরা। আসামি সাফাত আহমেদ ও নাঈম আশরাফ একাধিকবার তাদের ধর্ষণ করেন। ধর্ষণ করার সময় আসামি সাফাত গাড়িচালক বিল্লালকে দিয়ে ভিডিওচিত্র ধারণ করেন। পরে বাসায় দেহরক্ষী পাঠিয়ে তাদের ভয়ভীতি দেখান। ধর্ষিতরা ভয়ে এবং লোকলজ্জার কারণে এবং মানসিক অসুস্থতা কাটিয়ে উঠে পরে আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে আলোচনা করে তারা মামলার সিদ্ধান্ত নেন।

(ঢাকাটাইমস/৩১অক্টোবরেআরজে/জেডএ)