আদালতে যা বললেন পাইলট সাব্বির

আদালত প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০১ নভেম্বর ২০১৭, ১৭:৫২

বিমান নিয়ে ‘নাশকতার পরিকল্পনা’র অভিযোগে প্রেপ্তার বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ফার্স্ট অফিসার সাব্বির এমামের সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। এছাড়া গ্রেপ্তার আরও পাঁচজনকেও বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে পেয়েছে পুলিশ।

বুধবার ঢাকা মহানগর হাকিম মো. আহসান হাবিব শুনানি শেষে এই রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

আদালতে সাব্বিরের পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না। তিনি রিমান্ড শুনানিতে নিজেই বক্তব্য দিয়েছেন। সেখানে সাব্বির দাবি করেছেন, তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। জঙ্গি আবদুল্লাহর সঙ্গে তার কোনো সম্পৃক্ততা ছিল না।

পাইলট সাব্বির বলেন, গত ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত আমি ফ্লাই করেছি। ফ্লাই করতে হলে সরকারের বিভিন্ন সংস্থার ছাড়পত্র লাগে। কোথাও থেকে আমার বিরুদ্ধে কোনো খারাপ প্রতিবেদন নেই। ২০১৫ সাল থেকে আমার মা সুলতানা পারভীনের সঙ্গে আমার কোনো কথা হয় না। মা মাঝে মধ্যে আমার বাসায় এলেও আমি ২০১৫ সাল থেকে বাড়িতে যাইনি। আমার মামাতো ভাই আসিফকেও ধরে আনা হয়েছে। মিল্লাতকে আমি চিনিও না এবং কোনোদিন দেখিওনি।

পাইলট সাব্বির বলেন, ‘২০১১ সাল থেকে আমি ফ্লাই করি। কেউ একজন আমার নাম বললো আর আমি দোষী হয়ে গেলাম? আমার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগই সত্য নয়।’

গত সোমবার দিবাগত রাত দুইটা থেকে মঙ্গলবার বেলা ১১টা পর্যন্ত রাজধানীর মিরপুরের দারুস সালামের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে র‌্যাব সাব্বির এমামসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করে। র‌্যাব জানায়, সরকারের শীর্ষ ব্যক্তিদের বাড়িতে বিমান হামলার টার্গেট ছিল তাদের। জঙ্গি আবদুল্লাহর ছক অনুসরণ করে তার এই পরিকল্পনা করছিলেন।

র‌্যাব জানায়, সাব্বির ২০০৯ সালে বাংলাদেশ ফ্লাইং একাডেমি থেকে উড়োজাহাজ চালানোর প্রশিক্ষণ নেন। ২০১০ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত রিজেন্ট এয়ারওয়েজে চাকরি করেন। ওই বছরই তিনি বিমানের পাইলটের চাকরি নেন। বিমানের ফার্স্ট অফিসার হিসেবে সাব্বির বোয়িং ৭৩৭ উড়োজাহাজ চালাতেন। গত ৩০ অক্টোবর তিনি ঢাকা-কলকাতা-ঢাকা রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করেন। তবে জঙ্গি আবদুল্লাহর সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা ছিল। নিহত জঙ্গি সারোয়ার জাহানের কাছ থেকে সাব্বির বায়াত গ্রহণ করেন। গুলশানে হলি আর্টিজানে হামলার আগে ও পরে নাশকতার পরিকল্পনা ছিল তাঁর। এরই অংশ হিসেবে সাব্বির বিমান চালিয়ে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের ব্যক্তিদের বাসভবনে আঘাতের পরিকল্পনা করেন।

প্রসঙ্গত, গত ৪ সেপ্টেম্বর রাতে মিরপুর মাজার রোডের বর্ধনবাড়ি এলাকায় ‘কমল প্রভা’ নামের একটি বাড়িতে (পাইলট সাব্বির ও মা সুলতানা পারভীনের বাড়ি) অভিযান চালায় র‌্যাব। অভিযান চলার সময় ওই বাড়ির পঞ্চম তলায় ‘জঙ্গি আস্তানায়’ ভয়াবহ রাসায়নিক বিস্ফোরণ হয়। অভিযানে জঙ্গি মীর আকরামুল করিম ওরফে উপল ওরফে আবদুল্লাহ (৪৩) ও তার পরিবার আত্মসমর্পণের জন্য সময় নেয়। কিন্তু পরে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আবদুল্লাহ, তাঁর দুই স্ত্রী নাসরিন (৩৫) ও ফাতেমা (২৫), দুই সন্তান ওসামা বিন আকরামুল (১০) ও ওমর বিন আকরামুল (৩)ও দুই সহযোগী কামাল ও অজ্ঞাত ব্যাক্তি আত্মাহুতি দেয়। ওই ঘটনায় র‌্যাব বিপুল পরিমাণ বোমা, গান পাউডারসহ ২৪ ধরনের আলামত জব্দ করে। এরপর গত ৮ সেপেম্বর বিস্ফোরক আইনের একটি মামলা দায়ের করে সংস্থাটি।

এদিকে জঙ্গি আবদুল্লাহাকে সহযোগিতার অভিযোগে পাইলট সাব্বিরের মা সুলতানা পারভীনকেও গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। তাকেও রিমান্ডে পেয়েছে পুলিশ।

শুনানিকালে আসামি সুলতানা পারভীন বলেন, আব্দুল্লাহ আমার বাসায় ১২ বছর ধরে ভাড়া ছিল। ভাড়াটিয়া ছাড়া তার সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক ছিল না। আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হয়েছে তা সত্য নয়। আমার ছেলে সাব্বিরের সঙ্গেও আমার কোনো সম্পর্ক নেই। গত পাঁচ বছর ধরে আমার ছেলে আমার বাড়িতে আসে না। আমি তাদের কোনো বিষয় জানি না। আমাকে জোর করে অনেক কিছু বলানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। আমি কখনো কোনো চাঁদা দিইনি।

(ঢাকাটাইমস/০১নভেম্বর/আরজেড/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

আদালত বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

আদালত এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :