ফরিদপুর রেলস্টেশনে বেদখল: পদ্মা সেতুর পাথর খালাসে বিপত্তি

ফরিদপুর প্রতিনিধি
ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০৩ নভেম্বর ২০১৭, ২২:৩১

অবৈধ দখলদারের দৌরাত্ম্যে বেদখল হয়ে আছে ফরিদপুর রেলস্টেশনের আশেপাশের বিশাল এলাকা। ফলে ইয়ার্ড নির্মাণ করতে না পারায় ব্যাহত হচ্ছে পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজের পাথর খালাস ও সরবরাহ।

শহরের লক্ষিপুর ও আলীপুর এলাকার একটি বড় অংশ জুড়ে রয়েছে রেলের বিভিন্ন স্থাপনা। বৃটিশ আমল থেকে গড়ে ওঠা এসব স্থাপনা ও জায়গার সিংহ ভাগই বেদখল হয়ে যায় এই অঞ্চলে রেল বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর থেকে। গত তিন বছর যাবৎ সেই রেল যোগাযোগ পুনরায় চালু হলেও স্থানীয় প্রভাবশালীদের কবল থেকে উদ্ধার করা যায়নি রেলের সেই জমি।

এ ব্যাপারে ফরিদপুর পৌরসভার স্থানীয় ওয়ার্ড কমিশনার নাফিজুল ইসলাম তাপস ঢাকাটাইমসকে বলেন, দীর্ঘদিন পরে হলেও ফরিদপুরের ঐহিত্যবাহী এই রেল স্টেশন বর্তমান সরকার চালু করে।

তিনি বলেন, স্টেশনে জায়গার অভাবে যেখানে ইয়ার্ড নির্মাণ করা যাচ্ছে না, অথচ ১০০ একরের বেশি সম্পত্তি রেল বিভাগের বেহাত হয়ে রয়েছে, যা পুনরুদ্ধারের কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি এখনো।

তিনি দাবি করে বলেন, রেল বিভাগের সম্পত্তি দখলদারদের হাত থেকে উদ্ধার করে সরকারি প্রয়োজনে তা ব্যবহার করা হবে।

ফরিদপুর রেল স্টেশনের পাথর আনলোডিংয়ের কাজে নিয়েজিত মো. উজ্জল শেখ জানান, পাথরবাহী ট্রেন এখন কম আসায় আমরা বেকার হয়ে আছি। এক মাসের বেশি সময় হলো এই স্টেশনে পাথরবাহী ট্রেন ৬টি এসেছে। যেখানে আগে আসতো ২০টির বেশি।

ফরিদপুর চেম্বর অব কর্মাস এন্ড ইন্ড্রাটিজের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও পাথর আমদানি কারক মো. সিদ্দিকুর রহমান জানান, পদ্মা সেতুর অ্যাপ্রোচ রোড এবং পায়রা বন্দরের নির্মাণ কাজের পাথর ভারত থেকে রেল পথে ফরিদপুর আসে। এখান থেকে সড়ক পথে পৌঁছানো হয় কর্মস্থলে। কিন্তু সম্প্রতি ফরিদপুরে রেললাইন সম্প্রসারণের কাজ শুরু হওয়ায় ও বিভিন্ন স্থানে রেললাইনে মাটি সরে যাওয়ায় পাথর আমদানি ও আনলোডিং কাজে স্থবিরতা নেমে এসেছে।

তিনি বলেন, দুবছর যাবৎ প্রতিমাসে গড়ে ৪২ ওয়াগনের ২০ র‌্যাক করে পাথর খালাস করেছেন আমদানিকারকরা। সেখানে রেলস্টেশনের সমস্যার কারণে গত এক মাসে তিনটি কোম্পানি পাথর আমদানি করেছে মাত্র ৭ র‌্যাক। একারণে একদিকে যেমন ব্যাহত হচ্ছে জনগুরুত্বপূর্ণ কাজের পাথর সরবরাহ, তেমনি সরকার হারাচ্ছে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব।

ফরিদপুর রেল স্টেশনের স্টেশন মাস্টার মাসুদ রানা রনি জানান, প্রতি র‌্যাক পাথরের জন্য আমদানিকারকরা রেলকে ১৫ লাখ টাকা ভাড়া, ১৭ লাখ টাকা ডিউটি ট্যাক্স ও ৪০ হাজার টাকা আনলোডিং এর জায়গার ভাড়া পরিশোধ করতে হয়।

তিনি বলেন, সম্প্রতি কিছু সমস্যা হয়েছে, আমরা বিষয়টি রেল কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। ইতিমধ্যে রেল বিভাগের কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সরেজমিন এসে দেখে গেছেন। স্টেশন মাস্টার আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, অল্প সময়ের মধ্যে এই সমস্যা থাকবে না।

বাংলাদেশ রেলওয়ের পাকশি অঞ্চলের বিভাগীয় ম্যানেজার অষিম কুমার তালুকদার এ বিষয়ে বলেন, পদ্মা সেতুসহ দেশের সকল বড় উন্নয়ন কাজের পাথর ভারত থেকে রেল পথেই আমদানি করা হয়।

তিনি বলেন, আমাদের ইঞ্জিন, জনবল ও স্টেশন আধুনিকায়ন ব্যবস্থা না থাকায় যেভাবে পাথর আমদানি ও আনলোডিং করার কথা সে ভাবে করতে পারছি না। তিনি জানান, সরকার চেষ্টা করছে রেল বিভাগের সকল সমস্যা সমাধানের। ফরিদপুরসহ অন্যানো স্টেশনে যে সমস্যা রয়েছে তা সমাধানের জন্য কাজ শুরু হয়েছে। আগামীতে এই সমস্যা আর থাকবে না।

(ঢাকাটাইমস/০৩নভেম্বর/এমএস/ইএস

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :