বাড্ডায় জোড়া খুনে স্ত্রীর স্বীকারোক্তি
রাজধানীর উত্তর বাড্ডার জোড়া খুনের মামলায় গ্রেপ্তারকৃত নিহতের স্ত্রী আরজিনা বেগম আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
এদিকে সাত দিনের রিমান্ড আবেদনের শুনানি শেষে পরকীয়া প্রেমিক শাহিন মল্লিকের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত।
শনিবার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বাড্ডা থানার সাব-ইন্সপেক্টর (নিরস্ত্র) মো. শাখাওয়াত হোসেন আসামিদের আদালতে হাজির করে আরজিনার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি গ্রহণের এবং আসামি শাহিন মল্লিকের সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন।
ঢাকা মহানগর হাকিম সাদবীর ইয়াছির আহসান চৌধুরী আরজিনার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এর আগে একই আদালত শাহিন মল্লিকের রিমান্ড শুনানি গ্রহণ করেন। শুনানি শেষে আদালত চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
রিমান্ড আবেদনের শুনানিকালে আসামি শাহিনের কোনো আইনজীবী না থাকায় তার কিছু বলার আছে কি না তা জানতে চান বিচারক। তখন শাহিন আদালতে বলেন, আরজিনা এবং আমি পাশাপাশি থাকার কারণে দুইজনের মধ্যে একটা সম্পর্ক গড়ে ওঠে। প্রথমে আরজিনা আমাকে প্রোপোজ করে। এক পর্যায়ে আরজিনা বাসা থেকে চলে আসে। দুই মাস পর সে আবার জামিলের সংসারে ফিরে যায়। আরজিনার পরিবার আমার আর আরজিনার মধ্যের সম্পর্কটা মেনে নিতে পারেনি। একারণে আরজিনা আমাকে বলে, সংসার করতে চাইলে আগে জামিলকে খুন করতে হবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী আমি আমার এক বান্ধবীকে দিয়ে একটি ফার্মেসি থেকে ঘুমের ওষুধ এনে আরজিনাকে দেই। আরজিনা সেই ঘুমের ওষুধ করল্লা ভাজির সাথে মিশিয়ে জামিলকে খাওয়ায়। জামিল ঘুমিয়ে পড়লে আমি তাকে কাঠ দিয়ে মাথায় আঘাত করি। জামিলকে মারার দৃশ্য নুসরাত দেখে ফেলায় তাকে বালিশ চাপা দিয়ে মেরে ফেলি। আমি তাদের মারতে চাইনি। হঠাৎ একটা এক্সিডেন্ট হয়ে গেছে। জীবনে প্রথম এমন কাজ করেছি। আর কখনো জীবনে এমন কাজ করবে না।
অন্যদিকে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে আরজিনাও পরকীয়া প্রেমিকের সঙ্গে সংসার করতে পরিকল্পিতভাবে স্বামী ও সন্তানকে হত্যা করিয়েছেন মর্মে উল্লেখ করেছেন বলে জানা গেছে।
প্রসঙ্গত, গত ২ নভেম্বর সকাল ৬টার দিকে রাজধানীর উত্তর বাড্ডার ময়নারবাগের ৩০৬ পাঠান ভিলার তৃতীয় তলার ভাড়া বাসা থেকে উদ্ধার করা হয় জামিল শেখ (৩৮) ও তার মেয়ের নুসরাতের মরদেহ। ওই ঘটনায় বিকালেই নিহত জামিল শেখের ভাই মো. শামীম শেখ বাদী হয়ে বাড্ডায় থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় নিহত জামিলের স্ত্রী আরজিনা বেগম (৩০) ও সাবলেটের ভাড়াটিয়া আরজিনার পরকীয়া প্রেমিক শাহিন মল্লিককে (২৬) আসামি করা হয়। মামলার পর আরজিনাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে মোবাইল ফোন ট্র্যাক করে খুলনার খুলনার লবণচড়া থেকে শাহিন মল্লিককে গ্রেপ্তার করে বাড্ডা থানা পুলিশ। শাহিনের বাড়ি খুলনার দাকোপ উপজেলায় কালাবনি-ছুতারখালি গ্রামে। তার বাবার নাম নাজিমউদ্দিন মল্লিক।
(ঢাকাটাইমস/০৪নভেম্বর/আরজেড/জেবি)