আইএস জঙ্গিদের মেরে ফেলার পক্ষে পশ্চিমা রাজনীতিবিদরা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ০৫ নভেম্বর ২০১৭, ১৯:৪৪ | প্রকাশিত : ০৫ নভেম্বর ২০১৭, ১৯:৪১

সিরিয়া ও ইরাকে ইসলামিক স্টেটের (আইএস) পরাজয়ের পর যেসব যোদ্ধারা ধরা পড়েছে তাদের কি করা হবে? তাদের সবাইকে কি মেরে ফেলা হবে?

বিবিসি জানায়, আইএস প্রসঙ্গে এমন কথা অনেকেরই - যাদের মধ্যে পশ্চিমা রাজনীতিবিদরাও আছেন। তারা বলছেন, এই বন্দী যোদ্ধাদের ‘মেরে ফেলাই উচিত’।

কিন্তু আন্তর্জাতিক রেডক্রস বলছে, বন্দীদের সঙ্গে মানবিক আচরণের ব্যাপারটি ভুলে যাওয়া উচিত নয়।

বন্দী আইএস যোদ্ধাদের নির্মূল করার আহ্বান প্রত্যাখ্যান করে রেডক্রসের মধ্যপ্রাচ্য সংক্রান্ত উপপরিচালক প্যাট্রিক হ্যামিল্টন বলছেন, তাদের সঙ্গে আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী আচরণ করতে হবে।

ইরাক ও সিরিয়ার বিভিন্ন আইএস নিয়ন্ত্রক শহরের পতন হবার পর বহু যোদ্ধা বিজয়ী বাহিনীর হাতে ধরা পড়ছে।

মসুলের কাছে বিভিন্ন দেশ থেকে আসা প্রায় ১,৩০০ নারী ও শিশুকে বন্দী করে রাখা হয়েছে - যারা আইএসের বিদেশি যোদ্ধাদের স্ত্রী ও সন্তান বলে মনে করা হয়। এ রকম আরো অনেক নারী ও শিশু হয়তো আগামীতে ধরা পড়বে।

কিন্তু এদের নিয়ে কি করা হবে, বা করা উচিত?

রেডক্রসের হ্যামিলটন কারো নাম উল্লেখ করেননি। তবে কিছুদিন আগেই যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন জুনিয়র মন্ত্রী রোরি স্টুয়ার্ট বলেছেন, ‘যেসব ব্রিটিশ নাগরিক ইসলামিক স্টেটের হয়ে যুদ্ধ করেছে তারা আমাদের জন্য গভীর বিপদের কারণ।’

তিনি বলেন, ‘দুর্ভাগ্যবশত এদের মোকাবিলা করার উপায় বলতে গেলে একটাই। তাদের মেরে ফেলা।’

কয়েকদিন আগে ফরাসী প্রতিরক্ষামন্ত্রী ফ্লোরেন্স পার্লিও বলেন, আইএস যোদ্ধারা যদি যুদ্ধে নিহত হয় - সেটাই সবচেয়ে ভালো হবে।

আইএসবিরোধী কোয়ালিশনে মার্কিন দূত ব্রেট ম্যাকগার্ক বলেছেন, ‘কোয়ালিশন এটা নিশ্চিত করতে চায় যেন এই সিরিয়ার মাটিতেই বিদেশি যোদ্ধারা মারা যায়।’

উল্লেখযোগ্য ব্যাপার হলো, এসব কথাবার্তা ভোটারদের কাছ থেকেও সমর্থন পাচ্ছে।

কিন্তু রেডক্রসের হ্যামিলটন বলেন, এগুলো মানবিকতা-বর্জিত কথাবার্তা। তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ‘আইএস যোদ্ধারা আমাদের সার্বজনীন মানবতার আওতার বাইরে এটা মনে করা চলে না।’

তিনি স্বীকার করেন, মসুল বা রাকার মতো শহরে আইএসের শাসনকালে এবং তা পুনরুদ্ধারের লড়াইয়ের সময়ও বেসামরিক নাগরিকরা ভয়াবহ দুর্ভোগের শিকার হয়েছে।

তবে হ্যামিলটন আইএস যোদ্ধা - এমনকি যারা নানা দেশ থেকে সিরিয়া-ইরাকে লড়াই করতে এসেছিল তাদের প্রতি আচরণের বিষয়টির ওপর জোর দেন।

অনুমান করা হয় যে ইসলামিক স্টেটের মধ্যে প্রায় ৩০ হাজার বিদেশি যোদ্ধা রয়েছে। কিছুদিন আগেই ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যমে বলা হয় আইএসে যোগ দেয়া প্রায় ৮০০ ব্রিটিশ যোদ্ধার মধ্যে বেশ কয়েকশ' ইতিমধ্যে দেশে ফিরে এসেছে।

প্যারিস, লন্ডন ও নিউইয়র্কের মতো শহরগুলোতে অনেকেই উদ্বিগ্ন যে খেলাফতের পতন হবার পর বিদেশি আইএস যোদ্ধারা নিজ নিজ দেশে ফিরে গেলে কী পরিস্থিতি হবে।

নিরাপত্তা সংস্থাগুলো মনে করে যে মাত্র কয়েকশ' যোদ্ধাও যদি ইউরোপে ফিরে আসে সেটাও একটা বিরাট নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জে পরিণত হবে।

ইউরোপে অনেকেই হয়তো এসব যোদ্ধা- যাদের আদর্শের মধ্যে মেয়েদের ক্রীতদাসী করে রাখা, বন্দীদের শিরশ্ছেদ করা বা জনতার ওপর গাড়ি তুলে দেয়ার মত বিষয় আছে - তাদের সঙ্গে 'মানবিকতা' দেখানোর কিছু আছে বলে মনে করবেন না। কিন্তু আন্তর্জাতিক রেডক্রস - যারা জেনেভা কনভেনশনের রক্ষক - তারা বিষয়টিকে মোটেও এভাবে দেখছে না।

হ্যামিলটন বলছেন, কেউ নজিরবিহীন অপরাধ করেছে বলেই তাকে আইনের আওতার বাইরে বলে মনে করা চলে না। কোন যোদ্ধা ধরা পড়লে এবং সে কোন অপরাধ করে থাকলে স্বাভাবিক আইনের মাধ্যমেই তার বিচার হওয়া উচিত - বলেন তিনি।

(ঢাকাটাইমস/৫নভেম্বর/এসআই)

সংবাদটি শেয়ার করুন

আন্তর্জাতিক বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

আন্তর্জাতিক এর সর্বশেষ

কলকাতা হাইকোর্টের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ মমতার

ভারী বৃষ্টিপাতে ক্ষতিগ্রস্ত কারাগার, পালালো শতাধিক বন্দি 

ভারতে লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় পর্বে ১৩ রাজ্যের ৮৮ আসনে ভোটগ্রহণ শুক্রবার

ইরানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে গ্রেপ্তার করতে চায় আর্জেন্টিনা, কিন্তু কেন?

স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ, দায়িত্বপালন থেকে বিরত থাকবেন স্পেনের প্রধানমন্ত্রী 

ইউক্রেনকে গোপনে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র

ইসরায়েল-ইরান সংঘাত: সিরিয়া কি নতুন যুদ্ধক্ষেত্র হবে?

ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিবে জ্যামাইকা

পাকিস্তানের পর এবার শ্রীলঙ্কা সফরে ইরানের প্রেসিডেন্ট

বিরল সফরে ইরানে উত্তর কোরিয়ার প্রতিনিধিদল

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :