তেল পাচারকারী চক্রের সন্ধানে খুলনায় তদন্ত টিম

ব্যুরো প্রধান, খুলনা
 | প্রকাশিত : ০৬ নভেম্বর ২০১৭, ১৫:৩৫

বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন ও যমুনা ওয়েল কোম্পানির তেল কালোবাজারে পাচারকারীদের সন্ধানে ঢাকা থেকে পাঁচ সদস্যের একটি টিম খুলনায় অবস্থান করছে। আজ সোমবার সকাল থেকে তারা র‌্যাব-৬ স্পেশাল টিমকে সাথে নিয়ে তদন্ত কাজ চালাচ্ছেন।

খুলনা ভৈরব নদী সংলগ্ন যমুনা তেল ডিপোর নোঙ্গর করা তেলবাহী জাহাজ থেকে তেল পাচার করার অভিযোগে জাহাজের প্রকৌশলী, কাপ্তান, মাস্টার এবং বিপুল পরিমাণ চোরাই তেলসহ ১৪ জনকে গতকাল সকালে আটক করে র‌্যাব-৬ এর সদস্যরা। গত ৪ অক্টোবর রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এ অভিযান শুরু করা হয়।

খুলনা র‌্যাব-৬ কোম্পানি কমান্ডার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. এনায়েত মান্নানের নেতৃত্বে অভিযানে প্রায় ১০ হাজার লিটার চোরাই ডিজেল (বাজার দর ছয় লাখ ৩০ হাজার টাকা) উদ্ধার করা হয়। এ সময় তেল পাচার, ক্রয় ও বিক্রি করার অভিযোগে শেখ সুমনকে (২৮) জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে র‌্যাব। তার দেয়া প্রাথমিক তথ্যে তেল পাচারে সহযোগিতার অভিযোগে জাহাজের প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম (৪৪), চালক সিরাজুল ইসলাম (৫৩), ২য় শ্রেণির মাস্টার নুরুল আবসার (৫১), সুকানি নেছার আহম্মেদ (৫১), টেন্ডল জাহাঙ্গীর আলম (৪১), গিজারম্যান বেল্লাল হোসেন (৫২), গিজার মো. চঞ্চল (৩৬), শাজাহান (৪০), লস্কর আ. করিম (২৮), মো. জাহাঙ্গীর ও রফিকুল ইসলাম (৪৭), পাচক মো. নিয়ামত (৪০) ও সোলায়মান (৪৭)-কে আটক করা হয়। এম টি রায়দা নামে ওই জাহাজটি র‌্যাবের পাহারায় রাখা হয়েছে।

র‌্যাব-৬ এর কোম্পানি কমান্ডার এনায়েত হোসেন মান্নান জানান, উর্মি নেভিগেশনের ‘এম, টি রায়দা’ নামের জাহাজটির সুপার ভাইজার আবু হাসনাত টিটুর দায়িত্বে দৌলতপুরে যমুনা তেল ডিপোতে ডিজেল সরবরাহের জন্য ১৯ লাখ ৬১ হাজার লিটার ডিজেল নিয়ে গত ২৫ অক্টোবর চট্টগ্রাম থেকে রওনা দেয়। এর মধ্যে এক লাখ ৫১ হাজার লিটার অতিরিক্ত চোরাই ডিজেল ছিল বলে নিশ্চিত হয় অভিযান পরিচালনাকারী সংস্থাটি।

র‌্যাব কর্মকর্তা আরও জানান, ২৭ অক্টোবর বিভিন্ন বন্দর ঘুরে খুলনার যমুনা তেল ডিপোতে তেল সরবরাহের জন্য বহির্নোঙ্গরে অপেক্ষায় ছিল। যমুনার ঘাটে সিরিয়াল না পেয়ে নদীতে নোঙ্গর করা অবস্থায় তেল পাচারের গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শনিবার রাত ১২টায় এমটি রায়দা নামের ওই জাহাজে অভিযান চালান র‌্যাব সদস্যরা। অভিযানে অতিরিক্ত চোরাই ডিজেল ক্রয়ে অভিযুক্ত দিঘলিয়ার পলাশকে গ্রেপ্তারে সাঁড়াশি অভিযান চালানো হয়। পরে খালিশপুরে কাশিপুর এলাকা থেকে সুমন নামে এক যুবককে আটক করেন র‌্যাব সদস্যরা।

জানা গেছে, এ ঘটনার পর থেকে জাহাজের সুপারভাইজার আবু হাসনাত টিটু গা ঢাকা দেয়। ভৈরব নদীতে জাহাজ নোঙ্গর করার আগে নারায়ণগঞ্জ পোর্ট ও মংলা বন্দরে কিছু সময়ের জন্য জাহাজটি নোঙ্গর করে। সেখানে সুপারভাইজার টিটুর নির্দেশে শনিবার রাতে পাঁচ হাজার লিটার ডিজেল বিক্রি করেন হাসনাত।

এদিকে সুমনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটকের পর যমুনা ডিপো সংলগ্ন শ্মশানঘাট এলাকার কয়েকটি তেলের ভাসমান দোকানে অভিযান চালায় র‌্যাব। এ সময় ২৩৪ ছোট কনটেইনার, ৩৪টি ড্রাম ভর্তি প্রায় ১০ হাজার লিটার ডিজেল জব্দ করে তারা। এ ঘটনায় সুমনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য র‌্যাব-৬ এর কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

এঘটনার সংবাদ পেয়ে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপারেশন (বিপিসি) ও যমুনার তেল কোম্পানির প্রধান কার্যালয়ের প্রতিনিধিরা খুলনায় এসে আজ সকাল থেকে তদন্ত শুরু করেছেন। প্রাথমিক তদন্তের পরই আইনি ব্যবস্থার দিকে যাবেন বলে র‌্যাব সূত্র নিশ্চিত করেছে।

(ঢাকাটাইমস/০৬নভেম্বর/এসএএইচ/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :