চুরির অপবাদে দুই শ্রমিককে বেঁধে নির্যাতন

শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি
 | প্রকাশিত : ০৬ নভেম্বর ২০১৭, ১৫:৪৭

গাজীপুরের শ্রীপুর পৌর এলাকার কেওয়া পূর্ব খণ্ড গ্রামে গেলি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড নামে একটি ব্যাটারি তৈরি কারখানায় চুরির অপবাদে দুই শ্রমিককে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সোমবার সকালে বাসা থেকে কারখানায় ডেকে এনে তাদের নির্যাতন করা করে কারখানা কর্তৃপক্ষ। পরে তাঁদের চাকরিচ্যুত করে এলাকায় না থাকার শর্তে ছেড়ে দেয়া হয়।

নির্যাতনের শিকার রাসু হোসেন (২৭) খুলনা জেলার দৌলতপুর থানার গিলাতলা গ্রামের খোকন মিয়া ছেলে। অপরজন শাহিন আলম (২০)। তিনি পিরোজপুরের ইন্দুরকানি থানার চরবলেশ্বর গ্রামের খলিল মিয়া ছেলে। তাঁরা কারখানার পার্শ্ববর্তী হাবিবুর রহমান ও মহসিনের বাসায় ভাড়া থেকে ওই কারখানায় চাকরি করতো।

নির্যাতনের শিকার দুই শ্রমিক সংবাদকর্মীদের কাছে অভিযোগ করে বলেন, তাঁরা দু’জনই যার যার বাসায় সকালে ঘুমিয়ে ছিলেন। সোমবার ভোরে কারখানার কর্মকর্তা নুর মোহাম্মদ শিপন পাটোয়ারী কেওয়া পূর্বখণ্ড গ্রামের শামসুল হকের ছেলে কবির হোসেনকে সঙ্গে নিয়ে নিরাপত্তাকর্মীদের দিয়ে তাঁদের ঘুম থেকে ডেকে তোলেন। পরে কারখানায় এনে চুরির অভিযোগে রশি দিয়ে বেঁধে মুখে কাপড় গুজে কারখানার ভেতর বেধড়ক মারধর করে। এর এক পর্যায়ে শাহিন জ্ঞান হারিয়ে ফেলে।

জ্ঞান ফিরলে সকাল নয়টার দিকে কারখানা থেকে বের করে প্রধান ফটকের সামনে গলায় চোর লেখা কাগজ ঝুঁলিয়ে জানালার গ্রিলের সাথে রশি দিয়ে বেঁধে রাখা হয়। পরে বেলা ১১টার দিকে স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছলে দ্রুত তাদের হাতের বাঁধন খুলে কারখানার ভেতরে নিয়ে জোর করে সাদা কাগজসহ কয়েকটি কাগজে সই নিয়ে তাদের চাকরিচ্যুতির নোটিশ ধরিয়ে দেয় বলে ওই দুইজন জানান।

তারা আরও জানায়, শাহিনের ভাড়া বাসার সামনে কারখানার একটি সীসার দণ্ড পাওয়া যায়। এর জের ধরে তাঁদের চোর সাব্যস্ত করে অমানুষিক নির্যাতন চালানো হয়।

কারখানার কর্মকর্তা নুর মোহাম্মদ শিপন পাটোয়ারী মারধরের কথা স্বীকার করে জানান, তাদেরকে থানায় দিলে পুলিশের ঝামেলায় পড়তে হতো। এর চেয়ে ভাল মারধর করে সামান্য শাস্তি দিয়ে তাদের চাকরি থেকে অব্যাহতি দিয়ে এলাকা ত্যাগ করতে বলা হয়েছে।

স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা কবির হোসেন জানান, আমরা এই কারখানায় ব্যবসা বাণিজ্য করি। তাই কারখানার বিষয়ে অনেক সময় সিদ্ধান্ত নিতে হয়। ছেলে দুটি চোর ছিল তাই তাদের শাস্তি দেয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে শ্রীপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নাজমুল হক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বলেন, নির্যাতনের শিকার শ্রমিকরা যদি থানায় লিখিত অভিযোগ দেয় তাহলে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ঢাকাটাইমস/৬নভেম্বর/প্রতিনিধি/এমআর

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :