নির্মাণের পরও কাজে আসছে না দুটি ফায়ার সার্ভিস

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০৭ নভেম্বর ২০১৭, ০৯:২৩

ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈল ও হরিপুর উপজেলা ফায়ার স্টেশনের নির্মাণ কাজ দুই বছর আগে শেষ হলেও দুই দপ্তরের রশি টানাটানির কারণে এবং অবকাঠামো বুঝে না নেয়ায় প্রতিষ্ঠান দুটি এলাকাবাসীর কোনো কাজে আসছে না। এ কারণে ফায়ার স্টেশন থাকার পরও ওই দুই উপজেলার বাসিন্দারা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সুবিধা থেকে বঞ্চিত রয়েছে। এতে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্তের শিকার হচ্ছে দুই উপজেলার সাধারণ মানুষ।

ঠাকুরগাঁও জেলার রানীশংকৈল ও হরিপুর উপজেলা জেলা শহরের সবচেয়ে দূরবর্তী উপজেলা। সীমান্তবর্তী এই দুই উপজেলায় প্রতি বছর অগ্নিকাণ্ডে কোটি কোটি টাকার সম্পদের ক্ষতি হয়। পথে বসে হাজার হাজার পরিবার। ওই উপজেলার বাসিন্দাদের সম্পদ অগ্নিকাণ্ডের হাত থেকে রক্ষার জন্য সরকার পৃথক দুটি ফায়ার স্টেশন নির্মাণের অনুমোদন দেয়। যথারীতি গণপূর্ত বিভাগ ২০১৪ সালে ওই দুই ফায়ার স্টেশন নির্মাণের দরপত্র আহ্বান করে। রানীশংকৈলে ফায়ার স্টেশন নির্মাণের বরাদ্দ ছিল দুই কোটি ৪০ লাখ ৭৯ হাজার টাকা। কাজ পায় ঢাকাস্থ মেসার্স আশফাকুর রহমান নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। অপরদিকে হরিপুর ফায়ার স্টেশনের বরাদ্দ ছিল দুই কোটি ৪০ লাখ ৩৩ হাজার টাকা। রংপুরের মেসার্স কোর কনস্ট্রাকশন এটি নির্মাণের কাজ পায়।

এক বছরের মধ্যে নির্মাণকাজ শেষ করার শর্তে একই বছরের সেপ্টেম্বরে কাজ শুরু করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দুটি। কিন্তু সময়মতো কাজ শেষ করতে বিলম্ব হওয়ায় ৩০ নভেম্বরের মধ্যে কাজ বুঝে দেয়ার সর্বশেষ সময় দেয়া হয়। প্রায় দুই বছর আগে ভবন দুটির নির্মাণকাজ শেষ করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দুটি। এরপর ভবন বুঝে নেয়ার জন্য ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেয় ঠাকুরগাঁও গণপূর্ত বিভাগ। জবাবে সিডিউল মোতাবেক নির্মাণকাজ হয়নি এমন কিছু সুনির্দিষ্ট আভিযোগ তুলে গনপূর্ত বিভাগকে পাল্টা চিঠি লিখে ঠাকুরগাঁও ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স কর্তৃপক্ষ। এই নিয়ে শুরু হয় চিঠি চালাচালি। স্থানীয় অফিস থেকে শেষ পর্যন্ত ওইসব দপ্তরের প্রধান দপ্তর পর্যন্ত চলে চিঠি চালাচালি।

ফায়ার সার্ভিসের অভিযোগ, সিডিউল মোতাবেক কাজ সম্পন্ন হয়নি। অপরদিকে গণপূর্ত বিভাগ বলছে, উদ্বোধনের তারিখ নির্ধারিত না হওয়ায় ঠিকাদার চূড়ান্ত রঙের কাজ আপাতত করছে না। এছাড়াও চুরি হয়ে যাওয়ার ভয়ে কিছু ফিটিংস লাগানো হয়নি। তারিখ নির্ধারিত হলেই ফিটিংসগুলো লাগানো হবে।

গণপূর্ত বিভাগ আরও জানায়, প্রয়োজনীয় লোকবল ও ইকুবমেন্টের অভাবে ফায়ার সার্ভিস বিভাগ তাদের কার্যক্রম চালু করতে পারছে না।

এদিকে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের নবনির্মিত স্টেশন দুটি চালু না হওয়ায় এগুলো এখন লাকড়ি রাখার গুদাম হিসেবে ব্যবহার করছে এলাকার লোকজন। অবশ্য দুজন বেসরকারি ব্যক্তি ওই স্টেশন দুটি দেখভাল করছেন বলে জানান। এ অবস্থায় চালু না হওয়ায় অগ্নিকাণ্ডে প্রয়োজনীয় সুবিধা ভোগ করতে পারছেন না দুই উপজেলার সাধারণ মানুষ।

হরিপুর উপজেলার বাসিন্দা সুজা, আব্দুর রশিদ ও রানীশংকৈল উপজেলার ফারুক আহম্মদ জানান, ফায়ার সার্ভিস স্টেশন দুটি সময় মতো চালু করা না হবে তাহলে সরকারের চার কোটি টাকা গচ্চা দেয়ার কী প্রয়োজন ছিল! তারা সব সমস্যা সমাধান করে অবিলম্বে ফায়ার স্টেশন দুটি চালুর দাবি জানান।

ঠাকুরগাও-৩ আসনের সংসদ সদস্য ইয়াসিন আলীও দ্রুত চালুর ব্যাপারে আন্তরিক। তিনি জানান, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করে অবিলম্বে এ ফায়ার স্টেশন দুটি চালুর ব্যাপারে উদ্যোগ নেবেন তিনি।

(ঢাকাটাইমস/০৭নভেম্বর/প্রতিনিধি/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :