কর্মহীন তিস্তাচরের মানুষের কষ্টেভরা জীবন

এস. কে সাহেদ, লালমনিরহাট
| আপডেট : ০৭ নভেম্বর ২০১৭, ০৯:৫৯ | প্রকাশিত : ০৭ নভেম্বর ২০১৭, ০৯:৫৭

বালু উত্তোলন, পাথর ভাঙা, রিকশা চালানো, মাছ ধরা কিংবা দিনমজুরের কাজ করে জীবন-যাপন করে তিস্তা চরের নদী ভাঙা মানুষেরা। প্রতি বছরই নদী ভাঙনের কবলে পড়ে বসতভিটা হারিয়ে সর্বশান্ত হচ্ছে শত শত পরিবার। তাদের অনেকের নেই কোনো মাথা গোঁজার ঠাঁই। রাস্তা বা অন্যের জমিতে ঝুপড়ি ঘর তুলে কোনো রকম আশ্রয় নিয়েছে তারা। দুর্গাপূজার পর থেকে এসব দিনমজুর অনেকেই কাজের অভাবে বসে আছে। ফলে তাদের অনেকের দিন কাটছে অর্ধাহারে-অনাহারে।

সরেজমিন দেখা যায়, লালমনিরহাট জেলায় অবস্থিত দেশের সর্ববৃহৎ সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজ থেকে তিস্তা রেল সেতু পর্যন্ত তিস্তা নদীর বাম তীরে নদী ভাঙন কবলিত শত শত পরিবার বসবাস করছে রাস্তা-ঘাট, স্কুলমাঠ ও রেললাইনের পাশে ঝুপড়ি ঘর তুলে। এসব পরিবারে এক সময় ছিল গোলা ভরা ধান, গোয়াল ভরা গরু, পুকুর ভরা মাছ কিন্তু সময়ের পরিবর্তনে রাক্ষসী তিস্তার হিংস্র থাবায় সহায় সম্পত্তি সবকিছু হারিয়ে এখন তারা নিঃস্ব। তাই জীবন বাঁচাতে অনেকেই ভিক্ষার ঝুলি কাঁধে নিয়ে গ্রাম ঘুরছে। আবার অনেকে আগের পেশা ছেড়ে জীবন জীবিকার তাগিদে কুলি মজুরের কাজ করছেন।

গোটা জেলায় নদী ভাঙনের কারণে শ্রমিকের সংখ্যা দিন দিন বাড়লেও নতুন কোনো কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হচ্ছে না। বর্তমানে মাটি কাটা, ধান কাটা, নদী থেকে বালু ও পাথর তোলা কাজ বন্ধ। ফলে শত শত শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছে। এসব শ্রমিক তাদের সংসার চলাতে হিমশিম খাচ্ছে।

কথা হয় তিস্তা ব্যারেজের বাম তীরে ঝুপড়ি ঘরে চার ছেলে-মেয়ে নিয়ে বসবাসকারী সমসের আলীর সাথে। দুই মাস আগে তিস্তায় তার শেষ ভিটামাটি চলে গেছে। এখন দোয়ানী বাজারে কুলির কাজ করছেন তিনি। সমসের আলীর স্ত্রী আলেয়া বেগম ঢাকাটাইমসকে জানান, তার স্বামী তিন থেকে সাড়ে তিনশ মণ ধান পেতেন। সারা বছর খেয়ে দুইশ মণ ধান বিক্রি করতেন। এখন বাড়ি করার জমি নেই। একদিন স্বামী কুলির কাজ না করলে হাড়িতে চাল উঠে না।

হাতীবান্ধা উপজেলা চেয়ারম্যান লিয়াকত হোসেন বাচ্চু ঢাকাটাইমসকে জানান, তিস্তা নদীর ভাঙনের কারণে প্রতি বছর শত শত পরিবার বসত বাড়ি হারিয়ে গৃহহীন হয়ে পড়ে। সরকারের পক্ষ থেকে প্রতিটি গৃহহীন পরিবারকে পুনর্বাসনের চেষ্টা চলছে। তারপরও অনেকই জীবন-জীবিকার সন্ধানে পরিবার পরিজনদের নিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় যাচ্ছেন। এছাড়া এ অঞ্চলের একটি বিশাল অংশ দিনমজুর শ্রেণি। বর্তমানে তেমন কোনো কাজ না থাকায় তারা বাইরে যাচ্ছে। এলাকায় কাজ শুরু হলে তারা আবার ফিরে আসে।

(ঢাকাটাইমস/০৭নভেম্বর/প্রতিনিধি/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :