শিবগঞ্জে সড়কের জায়গা দখল করে মাছের আড়ৎ

প্রতীক ওমর, বগুড়া প্রতিনিধি
 | প্রকাশিত : ০৭ নভেম্বর ২০১৭, ২২:৩২

বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার আলাদিপুরে সড়ক ও জনপথ বিভাগের জমি দখল করে মাছের আড়ৎ স্থাপন করায় পাঁচটি হাটের রাজস্ব আয় কমে গিয়ে লোকসানের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। সম্প্রতি উপজেলার মাসিক সমন্বয় কমিটির সভায় অবৈধ এই আড়তের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) অনুরোধ জানিয়েছেন। কিন্তু তারপরও আড়তটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ফলে হাটের ইজারদাররা ক্ষুব্ধ। পাশাপাশি মহাসড়কের পাশে আড়ৎ স্থাপনের ফলে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বগুড়া-জয়পুরহাট আঞ্চলিক মহাসড়কের শিবগঞ্জ উপজেলার আলাদিপুর মাদ্রাসার পূর্ব পাশে স্থানীয় ইউপি সদস্য ইসাহাক আলী (ইসা মেম্বর) ৪ আগস্ট ‘আল্লাহর দান’ নামে একটি মৎস্য আড়ৎ স্থাপন করেন। শিবগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আজিজুল হক আড়ৎটি উদ্বোধন করেন।

অভিযোগ রয়েছে, ইসা মেম্বর সড়ক ও জনপথ বিভাগের জমি ব্যবহার করে আড়ৎটি স্থাপন করেছেন। তিনি মাদ্রাসার জমি লিজ নিয়ে আড়তে ১৭টি শেড ঘর (মাছ বিক্রির ছোট ঘর) করেছেন। সামনে সড়ক ও জনপথের পুরো জমি ব্যবহার করা হয়েছে। এই আড়তে প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ছয় থেকে আট লাখ টাকার মাছ পাইকারি বেচাকেনা হয়। আশেপাশের প্রায় ২০টি এলাকা থেকে এ আড়তে শত শত মণ মাছ আসে। এ আড়ৎ থেকে যা আয় হয়, তা তিনি পুরোটাই নিয়ে নেন। আয়ের একটি অংশ স্থানীয় প্রভাশালীদের দেয়া হয়।

সরকারি অনুমতি ছাড়া অবৈধভাবে মাছের আড়ৎ স্থাপন করায় সর্ববৃহৎ কিচক, মোকামতলা, মহাস্থান, শিবগঞ্জ ও উথলী হাটে মাছের পাইকার ও ক্রেতা-বিক্রেতা কমে গেছে। এসব হাটে এখন আর কোনো পাইকাররা যান না। মাছের সরবরাহও কমে গেছে অনেক। ফলে হাটের ইজারাদাররা লোকসানের আশঙ্কায় চিন্তিত হয়েছে পড়েছেনে। যদিও একাধিক ইজারদার আড়তটি ভেঙে দিতে ইউএনওকে লিখিত অনুরোধ করেছে তাতেও কোনো কাজ হয়নি।

মোকামতলা ও উথলী হাটের ইজারদার ওমর ফারুক জানান, চলতি বছরের জন্য প্রায় ৪০ লাখ টাকা দিয়ে মোকামতলা এবং ১৮ লাখ টাকা দিয়ে উথলী হাট ইজারা নেওয়া হয়। কিন্তু আলাদিপুরে অবৈধ মাছের আড়তের জন্য এই দুইটি হাটে মাছের আমদানি নেই বললেই চলে। কোনো ক্রেতা এবং পাইকারা আসছে না হাটে। গত ২ নভেম্বর বিষয়টি ইউএনও সাহেবকে লিখিতভাবে জানানোর পরও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।

শিবগঞ্জ উপজেলা ইউপি চেয়ারম্যান অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ আহমেদ রিজু জানান, গত ২৯ অক্টোবর সমন্বয় কমিটির সভায় সব ইউপি চেয়ারম্যানরাই একজোট হয়ে অবৈধ আড়তটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ইউএনও ও সহকারী কমিশনারের (এসি ল্যান্ড) কাছে দাবি জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, অনুমতিবিহীন আড়তটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়া হলে হাটের ইজারদাররা আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বেন। সেই সঙ্গে উপজেলা পরিষদের রাজস্ব আয় কমে যাবে।

অভিযোগ প্রসঙ্গে আড়তের স্বত্বাধিকারী ইসাহাক আলী মেম্বার সরকারি অনুমতি নেওয়া হয়নি উল্লেখ করে বলেন, মাদ্রাসা ও মসজিদের উন্নয়নের আড়তটি স্থাপন করা হয়েছে। এখানে কোনো চাঁদা বা জমা আদায় করা হয় না বলে দাবি করেন।

বগুড়া ও সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী (এসডিই) তালিমুল হক সড়কের জমি দখল করে মাছের আড়ৎ নির্মাণের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বিয়ষটি নির্বাহী প্রকৌশলীকে জানানো হয়েছে। খুব শিগগিরই সেখানে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হবে এবং দখলদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকমতাকে (ইউএনও) আলমগীর কবির বলেন, বিয়ষটি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

(ঢাকাটাইমস/৭নভেম্বর/জেডএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :