আদালতের সিদ্ধান্তে মায়ের কোল পেল সেই শিশুটি

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ০৮ নভেম্বর ২০১৭, ১৯:৫৬ | প্রকাশিত : ০৮ নভেম্বর ২০১৭, ১৯:৫৩

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে কুড়িয়ে পাওয়া সেই শিশুটিকে আদালতের মাধ্যমে গ্রহণ করেছেন এক দম্পতি। বুধবার বিকালে চুয়াডাঙ্গার শিশু আদালতের বিচারক শাহনাজ সুলতানা দীর্ঘ শুনানির পর আব্দুল আলিম ও জান্নাতুল ফেরৗদাস দম্পতিকে এই শিশুকে লালন পালনের দায়িত্ব দেন।

২ নভেম্বর চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের গাইনি ওয়ার্ডে ওই শিশুটিকে কুড়িয়ে পায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পরে ওই শিশুকে সমাজ সেবার তত্ত্বাবধানে রাখা হয়।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. শামীম কবির জানান, বৃহস্পতিবার সকালে এক জেএসসি পরীক্ষার্থী নিজেকে সাথী নাম পরিচয় দিয়ে হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি হয়। পরে রাতেই ওই শিক্ষার্থী হাসপাতালে এক কন্যা শিশুর জন্ম দেন। পরদিন ভোরে ওই শিক্ষার্থী তার শিশু কন্যাকে হাসপাতালে ফেলে পালিয়ে যায়।

বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে বেশ কয়েকজন নিঃসন্তান দম্পতি শিশুটিকে গ্রহণের জন্য হাসপাতালে আবেদন করেন।

পরে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জেলা প্রশাসকের নির্দেশে ওই শিশুটিকে সমাজ সেবার তত্ত্বাবধানে তুলে দেন।

চুয়াডাঙ্গা সমাজসেবা অধিদপ্তরের প্রবেশন কর্মকর্তা বশির আহম্মেদ জানান, শিশুটিকে নিজ সন্তান হিসেবে দায়িত্ব নেবার জন্য আমাদের কাছে তিন দম্পতি আবেদন করেন। পরে বিষয়টি গড়াই আদালত পর্যন্ত।

গত রবিবার চুয়াডাঙ্গা শিশু আদালতে ওই শিশু কন্যাকে গ্রহণের জন্য ওই তিন দম্পতি আবেদন করেন। আদালত তিনটি আবেদনই গ্রহণ করে শুনানির জন্য দিন ধার্য করেন।

বুধবার নির্ধারিত ধার্য দিনে শিশু আদালতের বিচারক শাহানাজ সুলতানা প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে উভয় পক্ষের আইনজীবীর মাধ্যমে আবেদনকারীদের কাগজপত্র পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন।

পরে আদালত তার পর্যবেক্ষণে বলেন, আবেদন করা তিনটি দম্পতির মধ্যে দুটি দম্পতি নিঃসন্তান। এমন একটি বাস্তবতার মুখে রায়টি দিতে আমার রক্তক্ষরণ হচ্ছে। প্রচণ্ড কষ্ট হচ্ছে। আদালতের এমন পর্যবেক্ষণের পর আব্দুল জব্বার-সুলতানা নাঈম সীমা দম্পতি তাদের আবেদন প্রত্যাহার করে নেন। পরে আদালত আব্দুল আলিম-জান্নাতুল ফেরদৌসী দম্পতিকে ওই শিশুকে লালন পালনের দায়িত্ব দেন।

আদালত তার রায়ে উল্লেখ করেন, শিশুটিকে নিজ সন্তানের মত লালন-পালনের পাশাপাশি তার সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য শিক্ষা বীমা, ব্যাংক ডিপোজিট ও কিছু জমি তার নামে দিতে হবে। প্রতি ৬ মাস পর পর সমাজসেবা অধিদপ্তরে ওই শিশুর সার্বিক অবস্থা জানিয়ে রিপোর্ট করতে হবে।

আদালতের রায়ে বাচ্চাটি গ্রহণের পর আব্দুল আলিম-জান্নাতুল ফেরদৌসী দম্পতি তাদের প্রতিক্রিয়ায় জানান, বিয়ের পাঁচ বছরে অতিবাহিত হলেও তারা ছিলেন নিঃসন্তান। দেশে বিদেশে অনেক চিকিৎসা করিয়েও কোন ফল পাওয়া যায়নি। এই অবস্থাতে শিশু কন্যাকে পেয়ে খুশি তারা।

নিজ সন্তানের মত আদর স্নেহে তাকে লালন পালনের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন তারা।

(ঢাকাটাইমস/৮নভেম্বর/প্রতিনিধি/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :