নগরভবনে ওয়াসা এমডিকে তুলাধোনা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ০৯ নভেম্বর ২০১৭, ১৭:১৮ | প্রকাশিত : ০৯ নভেম্বর ২০১৭, ১৬:৩৫

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকার পানি সমস্যা নিয়ে ঢাকা ওয়াসা এমডির ওপর ক্ষোভ ঝেড়েছেন বেশ কয়েকজন ওয়ার্ড কাউন্সিলর।

বৃহস্পতিবার নগর ভবনে একাদশ করপোরেশন সভায় সুপেয় পানি, সুয়ারেজ ব্যবস্থা, ওয়াসার পাম্প নষ্ট ও জলাবদ্ধতা নিয়ে আলোচনার এক পর্যায়ে উত্তেজিত হয়ে যান কাউন্সিলরা।

সভায় সভাপতিত্ব করেন মেয়র সাঈদ খোকন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা ওয়াসা এমডি তাকসিম এ খানও। ওয়াসার বিরুদ্ধে এতো সব অভিযোগ শুনে সংস্থার এমডি চুপ হয়ে ছিলেন। মাঝে মাঝে মেয়রের কানে কানে কথা বলতে দেখা যায় এমডিকে।

শুরুতেই মেয়র সাঈদ খোকন বলেন, ‘ডিএসসিসি এলাকার পুরান ঢাকায় সুপেয় পানির অভাব এবং কিছু কিছু এলাকার পানিতে গন্ধ আসে।’

এরপর কোন এলাকায় পানি নিয়ে কী সমস্যা- সে বিষয়ে কাউন্সিলরদের উন্মুক্ত বক্তব্য দেওয়ার আহ্বান রাখেন মেয়র। এরপর সব মিলিয়ে ২২ জন কাউন্সিলর ওয়াসার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ করেন।

প্রথমে ২০ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফরিদউদ্দিন আহমেদ রতন বলেন, সেগুনবাগিচা এলাকায় দুই বছর আগে জলাবদ্ধতা ছিল না। আর এখন বৃষ্টি হলে হাঁটু পানি হয়ে যায়। এছাড়া ওই এলাকায় অধিকাংশ বাসায় পানির গতি খুবই কম।

৩১ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর রাসেল বলেন, কেএম আদম লেনে দুইটি পানির পাম্প নষ্ট। এলাকার অধিকাংশ বাড়িতে খাবার পানি পায় না। ওয়াসাকে বারবার অভিযোগ জানালেও তারা কোনো কথা কানে তুলে না।

২৭, ৫২, ৫৩ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলরা বলেন, ওয়াসাকে বারবার জানানো হয় এলাকার সমস্যা, কিন্তু তারা এ বিষয়ে কানে নেন না। এছাড়া ওয়াসার লোকজন ড্রেন পরিষ্কার করে আর ময়লা রাস্তায় ফেলে চলে যায়। এ সমস্যার জন্য এলাকাবাসী কাউন্সিলরদের গালাগালি করে।

সভার এক পর্যায়ে নিজ এলাকার পানি সমস্যা জানানোর জন্য এবং ওয়াসা এমডির কাছে তার অফিসের কর্মকর্তাদের উদাসীনতা নিয়ে উত্তেজিত হয়ে যান কাউন্সিলররা।

এ সময় ওয়াসা এমডি আসকিম এ খানের একটি ঘোষণা কিছুটা শান্ত করে কাউন্সিলরদের। তিনি বলেন, এরপর থেকে ড্রেনের ময়লা পরিষ্কার করার জন্য কাউন্সিলরদের কাছে টাকা দেয়া হবে। তারাই তা পরিষ্কারের ব্যবস্থা করবেন।

তবে ওয়াসা এমডির এই ঘোষণায় নালার আবর্জনা নিয়ে অভিযোগ থামলেও কাউন্সিলরদের সমস্যা বলা থেমে থাকে না।

৪৫, ৪৬ ও ৪৭ নং ওয়ার্ডের নারী কাউন্সিলর হেলেনা আক্তার বলেন, ‘ঘুরনিঘর এলাকায় হাড়ি, পাতিল নিয়ে এলাকাবাসী মিছিল করে আমাদের ঘিরে ধরে। কিন্তু এই সমস্যা আমাদের না। তবুও আমরা জনপ্রতিনিধি আমাদের মোমোকাবেলা করতে হয়।’

তার সঙ্গে একমত পোষণ করে একাধিক কাউন্সিলর বলেন, পানিতে দুর্গন্ধ, পানির পাইপ অনেক নিচে চলে গেছে, পানি পাওয়া যায় না, তার ওপর বৃষ্টি হলেই দেখা দেয় জলাবদ্ধতা। এসব অভিযোগ ওয়াসার কাছে দিলে তারা কথা কানে নেয় না।’

এ সময় ওয়াসা অঞ্চল-১ এর এক্সচেঞ্জকে অপসারণ করার অনুরোধ জানান ওই এলাকার কাউন্সিলর।

সভা শেষে মেয়র সাঈস খোকন বলেন, পানি না পওয়া এবং নোংরা পানির সমাধান শুষ্ক মৌসুমের মধ্যে সমাধান করতে হবে ওয়াসাকে। তিনি বলেন, ‘ভুল বোঝাবুঝি পেছনে ফেলে নাগরিক দুর্ভোগ লাঘবের কাজ ওয়াসাকে সাথে নিয়ে সমন্বিতভাবে করব।’

সভায় উপস্থিত ছিলেন, ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খান মোহাম্মদ বেলালসহ সংস্থাটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তরা।

এর আগে নগর ভবনের সামনে ডিএসসিসি এলাকায় শুষ্ক মৌসুমে ধুলা-বালি নিরসনের জন্য পানি ছেটানোর জন্য নয়টি গাড়ি উদ্ধোধন করেন মেয়র।

ভোর ছয়টা থেকে সাড়ে আটটা পর্যন্ত এবং দুপুর একটা থেকে তিনটা পর্যন্ত ৫০ কিলোমিটার সড়কে পানি ছিটাবে গাড়িগুলো। এ বিষয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন যদি কোনো সহায়তা চায় তাও করবে বলে জানান মেয়র খোকন।

ঢাকাটাইমস/০৯নভেম্বর/জিএম/ডব্লিউবি

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

জাতীয় এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :