পদ্মায় জেগে ওঠা চরে স্বপ্ন বুনছেন চাষিরা

রাজশাহী ব্যুরো, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১০ নভেম্বর ২০১৭, ১০:০০

পদ্মা নদীর পানি কমছে। জেগে উঠছে চর। সেই চর নিয়ে চাষিদের মনে জেগেছে রঙিন স্বপ্ন। এ স্বপ্ন তপ্ত বালুচরে সোনার ফসল ফলাবার। তাই বিস্তীর্ণ চরে এখন শুরু হয়েছে চাষিদের হাড়ভাঙা পরিশ্রম। রাজশাহী অঞ্চলে পদ্মার বুকে জেগে ওঠা সবকটি চরে এখন চাষিদের কর্মব্যস্ততা।

কৃষি বিভাগ বলছে, ঠিক কী পরিমাণ চরের জমিতে আবাদ হয়, তার হিসেব তাদের কাছে নেই। চরের জমিতে উৎপাদিত ফসলও কৃষি বিভাগের হিসাবের ভেতর থাকে না। তবে হাজার হাজার হেক্টর চরের জমিতে রবিশষ্য আবাদ হয়। নদীপাড়ের জমিগুলোতে কয়েক বছর থেকে তিনটি ফসলও হচ্ছে।

জেলার বাঘা উপজেলার কালিগ্রামের বাসিন্দা মোফাজ্জল হোসেন একজন মৎস্যজীবী। পদ্মায় যখন থৈ থৈ পানি, তিনি তখন নদী থেকে মাছ ধরেই জীবিকা নির্বাহ করেন। তবে পদ্মায় পানি কমে গেলেই পেশা বদল হয় তার। জাল-নৌকার বদলে হাতে তুলে নেন কোদাল-কাস্তে। চরের জমিতে ফলান সোনার ফসল। এবারও পদ্মায় পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে তার ব্যস্ততা শুরু হয়েছে।

মোফাজ্জল জানান, দুই সপ্তাহ আগে থেকে তাদের এলাকায় নদীর পানি কমে চর জেগে উঠেছে। সেই জমিতে তিনি কলাইয়ের বীজ ছিটিয়েছেন। কলাই শেষে আবাদ করবেন সরিষার। তারপর তীল। জমি থেকে তীল ওঠার কিছু দিন পরই নদীতে আসবে পানি। তখন আবার জাল নিয়ে নদীতে নামবেন মাছ শিকারে।

শুধু বাঘা নয়, জেলার গোদাগাড়ী, চারঘাট ও পবা উপজেলার পদ্মা নদীতে হাজার হাজার বিঘা আবাদী জমির সৃষ্টি হয়েছে চর জেগে। পদ্মাপাড়ের হাজার হাজার কৃষক এখন উদ্যোগী হয়েছেন গম, মসুর, মটর ও ছোলাসহ নানা জাতের ফসল ফলাতে। বিভিন্ন এলাকায় গড়ে তোলা হয়েছে কৃষক সমিতি। এই সমিতির আওতায় কৃষকরা একত্রিত হয়ে শত শত বিঘা জমিতে চাষাবাদে নেমেছেন।

এমনই একটি সমিতি রয়েছে রাজশাহী মহানগরীর ওপারে চর মাঝাড়দিয়াড়ে। এই সমিতির সভাপতি বরকত আলী জানালেন, পদ্মার পানি কমে গেলে শত শত বিঘা জমি জেগে ওঠে। তার মধ্যে যেসব জমি চাষের উপযোগী, সেখানে থাকে ঝাউগাছসহ নানা ধরনের ঝোপঝাড়ের জঙ্গল। সেগুলো একা কোনো ব্যক্তির পক্ষে পরিষ্কার করা সম্ভব নয়। তাই তারা একত্রিত হয়ে চাষ করেন।

তিনি জানান, সমিতিতে সব কৃষক সমানভাবে কাজে অংশ নেন। চাষাবাদের খরচও দেন সবাই সমান। উৎপাদিত ফসলের বণ্টনও হয় সমান। এখন এই পদ্মার চরের জমিতেই শত শত ব্যক্তির জীবিকা চলছে। তারা সবাই অপেক্ষায় থাকেন পানি কমার। পানি কমে চর জেগে উঠলেই তারা চাষাবাদে নেমে পড়েন সেই চরে।

গোদাগাড়ীর ফুলতলা গ্রামের কৃষক রফিকুল ইসলাম বলেন, চরের পলি মাটি খুব উর্বর। চাষাবাদে সার-কীটনাশক লাগে না বললেই চলে। তাই তাদের এলাকায় শ্যালো ইঞ্জিন দিয়ে পানি তুলে চরের জমিতে ধানেরও চাষাবাদ হয়। ট্রাক্টর দিয়ে চাষ করে এবারও শুরু হয়ে গেছে জমি প্রস্তুতের কাজ।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা দেব দুলাল ঢালি বলেন, প্রতিবছর নতুন নতুন চর সৃষ্টি হচ্ছে। আবার অনেক জায়গায় আগের বছরের চরে পানি থাকছে। তাই চরের জমির হিসাব তাদের কাছে নেই। তবে চরের হাজার হাজার বিঘা জমিতে চাষাবাদ করে অনেকেরই জীবন চলে। তাদের উৎপাদিত ফসল বড় ভূমিকা রাখে অর্থনীতিতে।

ঢাকাটাইমস/১০নভেম্বর/আরআর/এমআর

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

ফেসবুক আইডি ক্লোন করে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ, যুবক গ্রেপ্তার

ফরিদপুর প্রেসক্লাবের নবনির্বাচিত নেতৃবৃন্দের সঙ্গে পুলিশ সুপারের মতবিনিময়

পতেঙ্গায় ফিশিং বোটের ইঞ্জিন বিস্ফোরণে ৪ জন দগ্ধ

চট্টগ্রামে ঈদকে সামনে রেখে জালনোট চক্রের ৩ সদস্য গ্রেপ্তার

বরিশালে নামাজের সময় মসজিদের এসি বিস্ফোরণ

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে দ্রুতগতির লেনে যাত্রী নামানোর অপরাধে ৩৩ যানবাহনকে মামলা 

বরগুনা প্রেসক্লাব দখলের মামলায় ৭ জন কারাগারে  

পর্যটকদের আকৃষ্ট করছে তাহিরপুরের শহীদ সিরাজ লেক

ঝিনাইদহে ভর্তুকি মূল্যে টিসিবির পণ্য বিক্রি শুরু

ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়কে বেতন বৃদ্ধির দাবিতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :