না.গঞ্জে বিএনপিপন্থী আইনজীবী ফোরামের পাল্টা কমিটি
বিএনপিপন্থী জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের কেন্দ্রের অনুমোদিত কমিটির পাল্টা কমিটি গঠন করেছেন নারায়ণগঞ্জের বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা।
শনিবার সকালে নারায়ণগঞ্জ শহরের মাসদাইর মজলুম মিলনায়তনে ফোরামের পাল্টা আংশিক কমিটি গঠন করা হয়।
এর আগে গত ৭ জুন কেন্দ্রীয় ফোরামের সেক্রেটারি ব্যারিস্টার মাহাবুব উদ্দীন খোকনের স্বাক্ষরে নারায়ণগঞ্জ ফোরামের ২৮৭ সদস্যের কমিটি অনুমোদন দেয়া হয়। যারা এ কমিটি মানেননি মূলত তারাই আজ পাল্টা কমিটি গঠন করেন।
জানা গেছে, আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট আবদুল বারী ভুইয়াকে সভাপতি ও অ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদ খান ভাসানী ভুইয়াকে সাধারণ সম্পাদক করে নতুন আংশিক কমিটি করা হয়। অন্যান্যের মধ্যে যুগ্ম সম্পাদক পদে অ্যাডভোকেট আজিজুর রহমান মোল্লা ও অ্যাডভোকেট শরীফুল ইসলাম শিপলু, সাংগঠনিক সম্পাদক পদে অ্যাডভোকেট আজিজ আল মামুনকে মনোনীত করা হয়। এ ছাড়া কমিটিতে আরো বেশ কজন আইনজীবী রয়েছেন।
মূলত বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার বলয়ের আইনজীবীরা এই পাল্টা কমিটি করেন।
কমিটি গঠনের বিষয়টি নিশ্চিত করে অ্যাডভোকেট আবদুল হামিদ খান ভাসানী ভুইয়া ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার নারায়ণগঞ্জের আইনজীবী ফোরামকে অভিভাবক হিসেবে ৩০ বছর ধরে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে তিনি সরকারি দলের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে ভোট গণনা ও ফলাফল ঘোষণার সময়ও উপস্থিত থাকেন। আমরা তৈুূর আলম খন্দকারের নেতৃত্বে ভূমিকা রেখেছি। তাই আমরা সক্রিয় আইনজীবীদের নিয়ে কমিটি গঠন করেছি।’ এ কমিটিতে কেন্দ্রীয় ফোরামের নেতাদের সমর্থন রয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
পাল্টা কমিটির প্রতি তার সমর্থন রয়েছে বলে জানান অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার। তিনি ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘ঢাকায় বসে একতরফা কেউ যাকে-তাকে পদ দিয়ে কমিটি গঠন করে দেবে সেটা আমরা মানি না। সামনে আন্দোলন-সংগ্রাম। অনেক নেতাকর্মী বিপুলসংখ্যক মামলায় আসামি। এসব নেতাকর্মীর পক্ষে আইনি লড়াই চালাতে হলে আইনজীবীদের সহযোগিতা প্রয়োজন।’
আইনজীবীরাও আন্দোলনে ব্যাপক ভুমিকা রাখেন উল্লেখ করে তৈমুর আলম বলেন, ‘এ কমিটি (পাল্টা) তৃণমূল ও মাঠপর্যায়ের আইনজীবীদের নিয়ে গঠন করা হয়েছে বলে এর প্রতি আমার সমর্থন রয়েছে।’
অন্যদিকে গত ৭ জুন কেন্দ্রীয় ফোরাম থেকে নারায়ণগঞ্জ ফোরামের যে কমিটি পাঠানো হয় তাতে অ্যাডভোকেট সরকার হুমায়ুন কবিরকে সভাপতি ও অ্যাডভোকেট খোরশেদ আলম মোল্লাকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। এ কমিটি মূলত গত সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানের অনুগতদের দিয়ে গঠন করা হয়। এ কমিটিতে ৩০ জন সহ-সভাপতি, ১৫ জন যুগ্ম সম্পাদক, সাংগঠনিক ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মিলে ১৮ জন। এ ছাড়াও তৈমুর আলমকে উপদেষ্টা করে ১৩ সদস্যের উপদেষ্টা পরিষদ রয়েছে।
কেন্দ্রীয় ফোরামের গঠিত এ কমিটি বাতিলের দাবি জানিয়ে গত ১২ জুন নারায়ণগঞ্জ আদালতপাড়ায় বিক্ষোভ মিছিল করেন কমিটি প্রত্যাখ্যানকারীরা। পরে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে ২৮৭ জনের মধ্যে ১৪৪ জন আইনজীবী পদত্যাগ করেন। সেই সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা তৈমুর আলম খন্দকারও পদত্যাগ করেন। ওই সময় তৈমুর আলম খন্দকার দাবি করেছিলেন, ‘ঢাকায় বসে কেন্দ্রের সেক্রেটারি এককভাবে কমিটি দেয়ার এখতিয়ার রাখেন না। এ কমিটির কোনো বৈধতা নেই।’ পাঁচ মাস পর আজ পাল্টা কমিটি গঠন করেছেন পদত্যাগী নেতারা।
(ঢাকাটাইমস/১১নভেম্বর/মোআ)