ইসলামি ব্যাংকিং চালু হচ্ছে না ভারতে
ভারতে ইসলামি বা শরিয়াভিত্তিক ব্যাংকিং ব্যবস্থা চালুর পক্ষে নয় দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া (আরবিআই)।
এ দেশে রাষ্ট্রায়ত্ত ও বেসরকারি ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলিতে নাগরিকরা ‘অনেক বেশি সমানাধিকার’ পান, এই যুক্তিতে ভারতে ইসলামি ব্যাংক চালুর প্রস্তাব খারিজ করে দিয়েছে আরবিআই।
তথ্য অধিকার আইনে একটি প্রশ্নের জবাবে আরবিআই-এর তরফে জানানো হয়েছে, ইসলাম ধর্মে সুদ দেয়া-নেয়া নিষিদ্ধ বলে ইসলামিক ব্যাকিং ব্যবস্থায় কোনও সুদের প্রথা চালু নেই। কিন্তু ভারতে চালু ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থায় টাকা জমা রাখলে সুদ দেয়ার পাশাপাশি কেই টাকা ধার নিলে তার ওপর সুদ ধার্য করে ব্যাংকগুলি। ফলে, ভারতে শরিয়তি ব্যাংক চালু হলে, দেশের ব্যাকিং ব্যবস্থায় একটা বৈষম্য দেখা দেবে। যা নাগরিকদের পক্ষেও অনভিপ্রেত হতে পারে।
ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, দেশের সমস্ত নাগরিককে সমান ও উন্নত পরিষেবা দিতে আপাতত এই প্রকল্পটি নিয়ে ভাবনাচিন্তা করা হচ্ছে না। সুদহীন ব্যাকিং ব্যবস্থা এখনই চালু সম্ভব নয়। ২০০৮-এ রিজার্ভ ব্যাংকের প্রাক্তন গভর্নর রঘুরাম রাজনের নেতৃত্বে ‘ফিনান্সিয়াল রিফর্ম সেক্টর’ কমিটি এই সুদহীন ব্যাকিং ব্যবস্থা চালু করা যায় কি না, সেই বিষয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু করেছিল।
ওই কমিটি সে সময় যুক্তি দেয়, ‘কিছু বিশ্বাস সাধারণ মানুষকে আর্থিক লেনদেনে সুদের ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে। যার ফলে প্রান্তিক কিছু মানুষ ব্যাংকের আর্থিক পরিষেবার সুযোগ গ্রহণে ব্যর্থ হন।’
পরে ওই রিপোর্ট যায় কেন্দ্রের কাছে। কেন্দ্রের ইন্টার ডিপার্টমেন্টাল গ্রুপ (আইডিজি) ওই কমিটির সুপারিশের আইনি ও প্রযুক্তিগত বৈধতা খতিয়ে দেখে।
রিজার্ভ ব্যাংক জানিয়ে দেয়, এখন ইসলামিক ব্যাকিং ব্যবস্থা চালু না করা গেলেও ইসলামিক উইন্ডো চালু করা যেতে পারে। এতে মুসলিমদের দাবি আংশিকভাবে পূরণ করা সম্ভব হবে। আর প্রান্তিক মানুষদের কাছে ব্যাংকের সুফলও পৌঁছে দেয়া যাবে। বর্তমানে পাকিস্তান, বাংলাদেশসহ বিশ্বের বেশ কিছু দেশে এই ব্যাকিং পদ্ধতি চালু রয়েছে।
সূত্র: আনন্দবাজার ও সংবাদ প্রতিদিন
(ঢাকাটাইমস/১২নভেম্বর/এসআই)