কুষ্টিয়া-১: আ.লীগে রেজাউল-আফাজ বিএনপিতে রেজা-আলতাফ

দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) সংবাদদাতা, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১৩ নভেম্বর ২০১৭, ০৮:০০

কুষ্টিয়ার-১ আসনে দেশের প্রধান দুই দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সর্বশেষ সাংসদ দুজনই জেলা দলে সমালোচিত। তবে বিএনপির রেজা আহমেদ বাচ্চু মোল্লা সমালোচনা কাটিয়ে দল আগলে রাখলেও আওয়ামী লীগের এমপি রেজাউল হক চৌধুরীর ওপর নাখোশ নিজ দলের নেতাকর্মীরা। দুজনই আগামী নির্বাচনে নিজ নিজ দলের মনোনয়ন-প্রত্যাশী।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মনোনয়ন দৌড়ে বিএনপিতে সুবিধাজনক অবস্থানে আছেন বাচ্চু মোল্লা। আর আওয়ামী লীগে রেজাউল ইসলামের শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে মাঠে সক্রিয় ২০০৮ সালের এমপি আফাজ উদ্দিন, যার সঙ্গে তার মুখ দেখাদেখি বন্ধ। তাদের এই দ্বন্দ্ব নির্বাচনে প্রভাব ফেলার আশঙ্কা তৃণমূলের।

দৌলতপুর উপজেলার ১৪টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত কুষ্টিয়া-১ আসনে ভোটের ফলাফলে এমনিতেই এগিয়ে বিএনপি। গত ছয়টি নির্বাচনে চারবারই জয় লাভ করেন বিএনপির প্রার্থীরা। ১৯৯১, ১৯৯৬ ও ২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী আহসানুল হক মোল্লা টানা চারবার এমপি নির্বাচিত হন।

আহসানুল হক মোল্লার মৃত্যুর পর তার বড় ছেলে বিএনপি নেতা রেজা আহমেদ বাচ্চু মোল্লা ২০০৩ সালে অনুষ্ঠিত উপনির্বাচনে এমপি নির্বাচিত হন। পরে অবশ্য তিনি নানা কারণে সমালোচিত ও বিতর্কিত হন। এক-এগারোর পর তিনি রাজনীতি থেকে অনেকটা গুটিয়ে নিয়েছিলেন নিজেকে। ফলে, এই আসনে ২০০৮ সালের নির্বাচনে চারদলীয় জোটের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া হয় জেলা বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি আলতাফ হোসেনকে। কিন্তু তিনি পরাজিত হন আওয়ামী লীগের আফাজ উদ্দিনের কাছে।

অবশ্য রেজা আহমেদ বাচ্চু মোল্লাই বর্তমানে বিএনপির হাল ধরে রেখেছেন এবং দলকে সংগঠিত করার কাজটি করছেন। ফলে তার মনোনয়নের সম্ভাবনার কথা জানা যাচ্ছে তৃণমূলে। এ ছাড়া জেলা বিএনপির বর্ষীয়ান নেতা আলতাফ হোসেন ও অ্যাডভোকেট রমজান আলীও সম্ভাব্য মনোনয়ন-প্রার্থীদের তালিকায় রয়েছেন।

১৪ দলীয় জোট থেকে আওয়ামী লীগের প্রবীণ ও ত্যাগী নেতা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক এমপি আফাজ উদ্দিন আহমেদের তৎপরতা সবচেয়ে বেশি। ২০০৮ সালে নির্বাচিত এই সাবেক এমপি ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনেও মনোনয়ন পেয়েছিলেন। কিন্তু দলের বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে রেজাউল হক চৌধুরী স্বতন্ত্র এমপি নির্বাচিত হন। গত বছর আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র এমপিদের সঙ্গে তিনিও আবার দলে যোগ দেন।

রেজাউল হক চৌধুরী আগামী নির্বাচনে প্রার্থিতার জন্য দলীয় মনোনয়ন লাভের চেষ্টা করছেন। তবে তিনি দলীয় নেতাদের কাছে টানতে না পেরে অনেকটা হতাশ। তাছাড়া তার ছেলে, ভাই, ভাতিজাসহ সুবিধাভোগী ঘনিষ্ঠজনদের দৌরাত্ম্যের কারণে নির্বাচনী এলাকার মানুষ তাদের ওপর নাখোশ।

সাধারণ ও ত্যাগী নেতাকর্মীরা সাবেক এমপি আফাজ উদ্দিন আহমেদের সঙ্গে দলীয় কাজে অংশ নেয়ায় বর্তমান এমপির স্বজনরা তাদের বিভিন্নভাবে হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।

এসব কারণে রাজনৈতিক মঞ্চে বর্তমান ও সাবেক এমপির মধ্যে মুখ দেখাদেখিও হয় না।

আগামী নির্বাচন সামনে রেখে সাবেক এমপি আফাজ উদ্দিন আহমেদ গণসংযোগের পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডে অংশ নিচ্ছেন।

এ ছাড়া কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের অন্যতম সদস্য এ কে এম সরওয়ার জাহান বাদশা দলীয় মনোনয়ন লাভের আশায় প্রচারণা চালাচ্ছেন।

এই আসনে জাতীয় পার্টি (এরশাদ) ও জাসদের পক্ষে এখন পর্যন্ত একজন করে মনোনয়ন-প্রত্যাশীর তৎপরতা দেখা যাচ্ছে। সাবেক খাদ্য প্রতিমন্ত্রী প্রয়াত কোরবান আলীর বড় ছেলে দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক শাহরিয়ার জামিল জুয়েল এবং জাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির জনসংযোগ বিষয়ক সম্পাদক ও উপজেলা জাসদের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল কবীর স্বপন গণসংযোগ করছেন নির্বাচন সামনে রেখে।

(ঢাকাটাইমস/১৩নভেম্বর/মোআ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

রাজনীতি এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :