জাবিতে ভর্তি হতে এসে কারাগারে

প্রকাশ | ১৪ নভেম্বর ২০১৭, ২২:৫৫

জাবি প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

এসেছিলেন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ার স্বপ্ন নিয়ে। আর ফিরলেন জেলখানার টিকিট হাতে নিয়ে। তারা কেউই কল্পনা করেননি দিন শেষে তাদের স্থান হবে থানার হাজত খানায়। ২০ বছরের স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে একেকজন আড়াই থেকে চার লাখ টাকা পর্যন্ত তুলে দিয়েছিলেন জালিয়াত চক্রের হাতে। বিনিময়ে প্রক্সির মাধ্যমে তারা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাবেন। পেয়েছিলেনও বটে। কিন্তু বিধিবাম, তীরে এসে তরী ডুবল চার ভর্তিচ্ছুর।

মঙ্গলবার জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সি ইউনিটে ভর্তির সাক্ষাৎকার দিতে আসলে উপস্থিত শিক্ষকদের কাছে ধরা পরেন চার শিক্ষার্থী। লিখিত পরীক্ষার সময় উত্তর পত্রের হাতের লেখার সাথে আজকের ভাইবা বোর্ডের হাতের লেখার মিল না পাওয়ায় উপস্থিত শিক্ষকদের সন্দেহ হয়। পরে জিজ্ঞাসাবাদে তারা প্রক্সির মাধ্যমে ভর্তির কথা স্বীকার করেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদেরকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। পুলিশ তাদেরকে আটক করে আশুলিয়া থানায় নিয়ে গেছে।

এছাড়া সাক্ষাৎকার চলাকালী সময় ওএমআর শিটের অমিল ধরা পড়লে এক শিক্ষার্থী তার সার্টিফিফিকেটসহ মূল কাগজপত্র রেখে দৌঁড়ে পালিয়ে যান বলে কলা ও মানবিকী অনুষদের ডিন অফিস সূত্রে জানা যায়।

আটকৃতরা হলেন- ‘সি’ ইউনিটে ১৫৫তম স্থান লাভ করা গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার শেখ কামাল উদ্দীনের ছেলে শেখ পারভেজ আহমেদ, রোল নং:-৩৫১৪১০। তিনি চার লাখ টাকায় চুক্তি করেন। তবে কার সাথে চুক্তি করেছেন সে সম্পর্কে কোনো তথ্য দিতে পারেননি। ফেসবুকের মাধ্যমেই সবকিছু করেছেন বলে জানান।

একই ইউনিটে ৫৮ তম স্থান লাভ করা মুন্সিগঞ্জ জেলার শ্রীনগর থানার আহমেদ আলীর ছেলে রাকিব হোসেন, রোল নং- ৩৯৬৩০০। তিনি আড়াই লাখ টাকার চুক্তির মাধ্যমে চান্স পেয়েছেন।  

‘সি ১’ ইউনিটে ৫ম স্থান লাভ করা ময়মনসিংহের চরভিলা গ্রামের নুর মোহাম্মদের ছেলে ইয়াসীন আরাফাত, রোল নং:- ৩৪৬৩২০। এবং নাটোরের লালপুর উপজেলার আবু বক্কর সিদ্দীকের ছেলে আবু রায়হান, রোল নং- ৩৪৭৬৪০। সে মেধা তালিকায় ৫৮ তম হয়।
তবে তারা দুজন জালিয়াতির কথা অস্বীকার করে বলেন, আমাদের পরীক্ষা আমরা নিজে দিয়েছি। কিন্তু হাতের লেখা মিল না পাওয়ায় আমাদের আটক করে নিয়ে এসেছে।

এর আগে একই অভিযোগে রবিবার ও সোমবার, মাহবুব হোসেন, ইমাম হোসেন, অমিত হাসান, আশিকুল হাসান রবিন, নিশাদ আহমেদ, নাঈমুর রহমান সরকার, আশরাফুজ্জামান নয়ন, মাহমুদুল রশিদ সৌরভ, নাঈমুর রহমান ও মো. রিজওয়ানকে আটক করা হয়।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক তপন কুমার সাহা বলেন, গত তিনদিনে জালিয়াতির অভিযোগে ১৪ জনকে আটক করা হয়েছে। আটককৃতদের পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। একইসঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/১৪নভেম্বর/প্রতিনিধি/ইএস)