ঢাবিতে ছাত্রলীগের হল কমিটিতে পদ পেতে মরিয়া বহিষ্কৃতরা

ঢাবি প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১৬ নভেম্বর ২০১৭, ১০:২৮

সাধারণ ‍শিক্ষার্থীকে মারধরের ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় একাত্তর হল প্রশাসনের বহিষ্কার করা ছাত্রলীগের আট নেতাকর্মীর কেউই হল ছাড়েননি। হল ছাত্রলীগের সভাপতি ফকির রাসেলের মদদে বহিষ্কৃতরা হলে আছেন বলে অভিযোগ করেছেন আবাসিক ছাত্ররা।

এরই মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে আগামী ১৮ নভেম্বরের মধ্যে বাকি ছয়টি হলের কমিটি পূর্ণাঙ্গ করার। তাই এখন পূর্ণাঙ্গ কমিটির পদ বাগিয়ে নিতে মরিয়া বহিষ্কৃত সেই আট নেতাকর্মী। বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার চেয়ে প্রাধ্যক্ষ এজেএম শফিউল আলম ভূইয়ার কাছে লিখিত আবেদনও করেছেন কেউ কেউ।

গত ২ জুন বিজয় একাত্তর হলের ইসমাঈল নামে নৃবিজ্ঞান বিভাগের মাস্টারের এক শিক্ষার্থীকে মারধরের ঘটনায় ভিডিও ফুটেজ দেখে আটজনকে হল থেকে বহিষ্কার করে হল প্রশাসন। ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সহসভাপতি আরিফের পাশাপাশি হামলায় অংশ নেয়া অন্যরা হলেন- মনোবিজ্ঞান বিভাগের আব্দুল্লাহ আল ফয়সাল, ইসলাম শিক্ষা বিভাগের আবু ইউনুস, আরবি বিভাগের ফাহিম হাসান, মার্কেটি বিভাগের কায়েস জিয়া ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের সাব্বির শুভ। তারা সবাই তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।

এছাড়া দ্বিতীয় বর্ষ থেকে হামলায় অংশ নেন- মনোবিজ্ঞান বিভাগের ওয়াহিদ আনোয়ার রনো, হিমু, মো. আরিফুল ইসলাম, কাজী তানভীন (ভাষাবিজ্ঞান বিভাগ) ও অজ্ঞাত কয়েকজন।

অভিযোগ উঠেছে বহিষ্কৃতরা কিছুদিন হলের বাইরে থাকলেও পরবর্তী সময়ে হল সভাপতি ফকির রাসেলের মদদে নিয়মিত হলে থাকতে থাকেন। যদিও প্রশাসন বলছে, তাদের বহিষ্কারাদেশ এখনো প্রত্যাহার করা হয়নি। এমনকি তারা যে হলে থাকে সেটাও জানে না প্রশাসন।

বহিষ্কৃত আটজনের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ পদে আসার সম্ভাবনা রয়েছে ফকির রাসেলের একান্ত আস্থাভাজন হিসেবে পরিচিত ইসলাম শিক্ষা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র আবু ইউনুসের। ফকির রাসেল তাকে নিজের কমিটিতে আনতে চাচ্ছেন। এজন্য তিনি দাবি করেন আবু ইউনুস হল থেকে বহিষ্কৃত শিক্ষার্থী, ছাত্রলীগ থেকে নয়। সুতরাং পদে আসতে তার কোনো বাধা নেই।

তবে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ঢাকাটাইমসকে বলেন, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা বিশ্ববিদ্যালয়ের হল থেকে ছাত্রলীগের কোনো কর্মীর বিরুদ্ধে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত তারা কোনো পদে আসতে পারবেন না।

মারামারির ঘটনা ছাড়াও ইউনুস বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড যেমন নির্যাতন, ছিনতাই ও চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত আছে বলে অভিযোগ রয়েছে। জানা যায়, চলতি বছরের গত ২১ জুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্যবিজ্ঞান ও গ্রন্থাগার ব্যবস্থাপনা বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী মো. খায়রুল ইসলামকে একাত্তর হলের ৪০০২ নাম্বার রুমে আটকে রেখে দুই লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবিতে তাকে মারধর করা হয়। এই ঘটনায় ইউনুস জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে। এই ঘটনায় খায়রুল শাহাবাগ থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করেন।

হলের প্রাধ্যক্ষ শফিউল আলম ভূইয়া ঢাকাটাইমসকে বলেন, গত মঙ্গলবার বহিষ্কৃতরা ক্ষমা চেয়ে আমার কাছে একটি আবেদনপত্র পাঠিয়েছে। কিন্তু আমি এই ব্যাপারে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত দেইনি। আমি পত্রটি তদন্ত কমিটির কাছে পাঠাব, তদন্ত করার পর তাদের প্রতিবেদন অনুসারে সিদ্ধান্ত নিতে পারব।

প্রাধ্যক্ষ বলেন, আমার জানা মতে তারা হলে থাকে না, কারণ হলে থাকার জন্য তাদের বৈধতা নেই। যদি তারপরও প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে তারা হলে থাকে আমি বলব তারা অবৈধভাবে থাকছে।

এদিকে হলে থাকার বিষয়ে বিজয় একাত্তর হলের ছাত্রলীগের সভাপতি ফকির রাসেল ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘তাদের হলে থাকতেও কোনো বাধা নেই। কারণ হল প্রশাসন তাদের ক্ষমা করে দিয়েছে। তাছাড়া তারা যদি নিয়মিত একাডেমিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার পাশাপাশি হল থেকে শিক্ষাবৃত্তি পায় তাহলে কেন তারা কমিটির পদে আসতে পারবে না।’

প্রসঙ্গত, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯টি আবাসিক হলের মধ্যে ১৪টি হলের ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। এর মধ্যে গত সোমবার ঘোষণা করা হয়েছে সার্জেন্ট জহুরুল হক হল শাখা ছাত্রলীগের ১৫১ বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি। আর মাত্র পাঁচটি হলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি দেয়া বাকি আছে।

(ঢাকাটাইমস/১৬নভেম্বর/প্রতিনিধি/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

শিক্ষা বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :