খাদ্যমন্ত্রীর অনুষ্ঠানস্থলে আ.লীগ কর্মীদের ময়লা

তানিম আহমেদ, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ১৬ নভেম্বর ২০১৭, ১৭:৩৭ | প্রকাশিত : ১৬ নভেম্বর ২০১৭, ১৪:২৮

রাজধানীর লালবাগে খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলামের এক দলীয় কর্মসূচিতে কয়েক ট্রাক ময়লা ফেলে বাধা দেয়ার ঘটনায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনার জন্য আওয়ামী লীগেরই একটি অংশকে দায়ী করা হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় লালবাগে আওয়ামী লীগের সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন অনুষ্ঠানের কথা ছিল। অতিথি ছিলেন খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম। তবে আওয়ামী লীগের একটি অংশ তাতে বাধা দেয়ার অভিযোগ উঠে। মন্ত্রী যেন অনুষ্ঠান করতে না পারেন সে জন্য কয়েক ট্রাক ময়লা ফেলে রাখা হয় অনুষ্ঠানস্থলে। তবে সেই ময়লা পেরিয়ে দলীয় কর্মসূচিতে যোগ দেন খাদ্যমন্ত্রী।

ঘটনাটি ঘটেছে লালবাগের আজিমপুর রোডের পার্ল হারবার কমিউনিটি সেন্টারের সামনে। এ ঘটনার জন্য স্থানীয় আওয়ামী লীগ ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকনকে দায়ী করছে। আর মেয়র খোকন বলছেন, মুক্তিযোদ্ধার ওপর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষুব্ধ জনগণ এ ঘটনা ঘটিয়েছে।

জানা গেছে রাত সাড়ে তিনটার দিকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের চার-পাঁচটি গাড়ি এসে ওই ময়লা ফেলে রেখে যায় গেইটের সামনে।

বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কর্মসূচিতে যোগ দিতে পার্ল হারবারের সামনে আসতে থাকেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদের সমর্থক নেতাকর্মীরা। তবে ফটকের সামনে ময়লার স্তূপ দেখে দক্ষিণের মেয়র সাঈদ খোকনের পদত্যাগের দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন তারা।

তাঁরা অভিযোগ করেন, অনুষ্ঠান বানচাল করার জন্য মেয়র সাঈদ খোকনের নির্দেশে এখানে ময়লা ফেলা হয়। পরে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। মেয়র সমর্থকরা শাহে আলম মুরাদকে দল থেকে বহিষ্কারে দাবি জানিয়ে শ্লোগান দেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য পুলিশ কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ও টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে।

জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘আমাদের কর্মসূচি বাধাগ্রস্ত করার জন্য সিটি করপোরেশনের ময়লার গাড়ি দিয়ে ময়লা ফেলে কমিউনিটি সেন্টারের প্রবেশপথ বন্ধ করে দিয়েছে। এতে আওয়ামী লীগের অনুষ্ঠানকেই বাধা দেয়া হল। ওরা এরকমই করছে। এখন কী করব ভাই।’

জানতে চাইলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘আমি যতটুকু জানতে পেরেছি ওই এলাকায় দুইজন মুক্তিযোদ্ধার গায়ে হাত তুলেছে আওয়ামী লীগের একটি পক্ষ। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে স্থানীয় এলাকার জনগণ ঘৃণাস্বরূপ কমিউনিটি সেন্টারের সামনে ময়লা ফেলেছে বলে আমি শুনেছি। বিষয়টি নিয়ে আমি তদন্ত করতে নির্দেশ দেব।’

লালবাগ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ২৫ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর দেলোয়ার হোসেন ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘এটা আমাদের আওয়ামী লীগের দ্বন্দ্বের বহিঃপ্রকাশ। কিন্তু আজকের বিষয়টি দুঃখজনক।’

কী কারণে এটা ঘটেছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘কয়েকদিন আগে আমাদের কাউন্সিলর ও মুক্তিযোদ্ধা মান্নাফী ভাইয়ের ওপর হামলা করেছিল একটি পক্ষ। এর প্রতিবাদে আজকে এটা ঘটেছে। কিন্তু এটা ঠিক হয়নি। আশা করি বিষয়টা নিয়ে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ ব্যবস্থা নেবে।’

২৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাসিবুর রহমান মানিকের মোবাইল নম্বরে বেশ কয়েকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমি টেলিফোনে কোনো মন্তব্য দেব না।’

জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘একটি কুচক্রি মহল আমাদের নাগরিক সমাবেশকে বাধাগ্রস্ত করতে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে। বিষয়টি সাধারণ সম্পাদক ও দায়িত্বপ্রাপ্ত ‍যুগ্ম সাধারণ সম্পাদককে (দীপু মনি) জানানো হয়েছে। নাগরিক সমাবেশ শেষে এ বিষয়ে তারা কথা বলবেন। যারাই এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

গত ২৬ অক্টোবর মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শাহে আলম মুরাদ ও মেয়র সাঈদ খোকনের সমর্থকদের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। মেয়র সাঈদ খোকনের সমর্থকরা অভিযোগ করছেন মুরাদের সমর্থক মহানগর দক্ষিণ শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক হেদায়েতুল ইসলামের অনুসারীরা মেয়র সমর্থক মান্নাফিকে টেনে মঞ্চ থেকে ফেলে দেন । এর জের ধরে ১ নভেম্বর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে বর্ধিত সভায় মুরাদের সমর্থকদের সঙ্গে মান্নাফির অনুসারীদের ফের হাতাহাতি হয়।

(ঢাকাটাইমস/১৬নভেম্বর/টিএ/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

রাজনীতি এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :