রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রী ‘অপহরণ’
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলের সামনে থেকে অপহৃত হয়েছেন উম্মে শাহি আম্মানা শোভা নামে এক শিক্ষার্থী। তিনি বাংলা বিভাগের ৪র্থ বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষার্থী।
শুক্রবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হলের সামনে থেকে তিনি অপহৃত হন। পরিবার ও ঘনিষ্ঠদের দাবি ডিভোর্স ঠেকানোর জন্য শোভার সাবেক স্বামী সোহেল রানা তাকে অপহরণ করেছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সকাল সাড়ে ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের তাপসী রাবেয়া হল থেকে বের হন শোভা। বান্ধবীদের সঙ্গে পরীক্ষা দিতে যাওয়া ছিল উদ্দেশ্যে। তবে হলের ফটকে আসতেই দেখা মিলে সাবেক স্বামী সোহেলের সাথে। সেখানে শোভা ও সোহেলের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে সোহেলসহ ৭-৮ জন লোক পাশে দাঁড়িয়ে থাকা মাইক্রোবাসে শোভাকে তুলে নেয়।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত শিক্ষার্থীরা বাধা দেয়ার চেষ্টা করলে গতি বাড়িয়ে চলে যায় মাইক্রোবাসটি। প্রত্যক্ষদর্শীদের ধারণা, বুধপাড়া গেট দিয়েই বের হয়ে যায় অপহরণকারীরা।
জানা গেছে, উম্মে শাহি আম্মানা শোভার বাড়ি নওগাঁ জেলার মহাদেবপুর থানায়। পিতা আমজাদ হোসেন। গত বছরের ডিসেম্বরে একই জেলার পত্নীতলা থানার নজীপুর গ্রামের নজরুল উকিলের ছেলে সোহেল রানার সাথে পারিবারিক সূত্রে বিয়ে হয় তার। সোহেল রানা নজীপুরের একটি আদালতে আইন ব্যবসার প্রাকটিস করছেন।
তবে সোহেলের পরিবার থেকে শোভাকে যৌতুকের চাপ দেয়ায় নয় মাসের মাথায় এ বছরের সেপ্টেম্বরে শোভা ডিভোর্স দেয়। ফলে ডিভোর্স ঠেকাতে অপহরণ করা হয়েছে বলে দাবি করছেন পরিবার ও ঘনিষ্ঠজনেরা।
ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. লুৎফর রহমান বলেন, রাজশাহী মহানগর পুলিশ কমিশনার, গোয়েন্দা বাহিনীসহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সকল স্তরে আমরা জানিয়েছি। তবে এখন পর্যন্ত তার সন্ধান পাওয়া যায়নি।
এদিকে অপহরণের পরও পরীক্ষা বন্ধ করেননি বাংলা বিভাগ। এনিয়ে বিভাগের সামনে পরীক্ষা পেছানোর দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ করেছেন শোভার সহপাঠীরা। পরীক্ষা বন্ধ না করার বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
ক্ষোভ প্রকাশ করে রুমানা রশ্মী নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, একটা অপরিচিত মাইক্রোবাস ক্যাম্পাসে ঢুকে পড়ে। একটা মেয়েকে অপহরণ করে ক্যাম্পাস থেকে বের হয়ে যায়। সবকিছু জানার পরও বাংলা বিভাগ কিভাবে পরীক্ষা নিচ্ছে।
বাংলা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের পরীক্ষা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক খন্দকার ফরহাদ হোসেন বলেন, তার যখন আবারও পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ আছে তাই একজনের জন্য ৯৯ জন শিক্ষার্থীর পরীক্ষা বন্ধ করা হয়নি। আমরা সেশনজট কাটিয়ে উঠে বিভাগকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি। এখন পরীক্ষা পিছিয়ে দিলে আবারো বড় ধরনের সেশনজটে পড়তে হবে।
এদিকে পুলিশের দাবি মেয়ে নিজেই চলে গেছে। তাকে অপহরণ করা হয়নি।
এ বিষয়ে রাজশাহী পুলিশ কমিশনার মাহবুবুর রহমান বলেন, আর মেয়েটাতো নিজেই চলে গেছে। একটা মেয়েকে কি বিশ্ববিদ্যালয়ের হলের সামনে থেকে অপহরণ করে নিয়ে যেতে পারে? হৈ চৈ হবে না?
(ঢাকাটাইমস/১৭নভেম্বর/প্রতিনিধি/এলএ)